ডেস্ক রিপোর্ট •
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট উচ্চ ফলনশীল দুটি ধানের জাত উদ্ভাবন করেছে, যার মধ্যে একটি ধানের চাল বিশেষ বৈশিষ্ট্যের কারণে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী বলে দাবি করেছেন ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানী ও পুষ্টিবিদরা। অন্য জাতটি দক্ষিণাঞ্চলসহ জোয়ার–ভাটা অঞ্চলের জন্য বিশেষভাবে
উপযোগী হবে। জাতীয় বীজ বোর্ড এ দুটি ধানকে অনুমোদন দিয়েছে। ফলে এখন দুটি জাতই মাঠ পর্যায়ে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে উৎপাদন করা সম্ভব হবে। খবর বিবিসি বাংলার।
নতুন ধানের বৈশিষ্ট্যের কথা জনিয়ে গণমাধ্যমে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক নতুন উদ্ভাবিত ব্রি
ধান ১০৫ ‘ডায়াবেটিক চাল’ হিসেবে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা পাবে বলে আশা করছেন। কর্মকর্তারা বলেছেন, তিন বছরের বেশি সময় ধরে এ দুটি জাতের চাষ ও ফলন পরীক্ষা করেছে ব্রি। শেষ পর্যন্ত ধারাবাহিক ফলন গ্রহণযোগ্য মনে করা হয় এবং দুটি জাতকেই অনুমোদন দিল জাতীয় বীজ বোর্ড।
ডায়াবেটিক চাল বলা হচ্ছে কেন : ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. খন্দকার মো. ইফতেখারুদ্দৌলা বলেন, এ ধানটি কম গ্লাইসেমিক ইনডেঙ বা জিআই সম্পন্ন হওয়ার কারণেই এটিকে ‘ডায়াবেটিক চাল’ বলা হচ্ছে। অতিরিক্ত ছাটাইকৃত চাল স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
আবার আমাদের দেশে মাড় ফেলে ভাত খাওয়ার কারণে এমনি পুষ্টি কম পাওয়া যায়। এ অবস্থায় ব্রি ধান ১০৫ বেশ আগ্রহ তৈরি করেছে। কারণ এটিতে পুষ্টিমান যেমন আছে তেমনি জিআই অনেক কম।
সাধারণত খাদ্যে জিআই ৫৫ বা এর নিচে থাকলে এটি কম জিআই সম্পন্ন বলা হয়। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এবারের ধানটি উচ্চ ফলনশীল জাতের এবং হেক্টরপ্রতি এর সম্ভাব্য উৎপাদন সাত টনের বেশি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের শস্যমান ও পুষ্টি বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী বলেন, ভাতের চেয়ে ভালো খাবার হয় না। আর সে কারণেই ভাতটাও যাতে ডায়াবেটিসে আক্রান্তরা খেতে পারেন সে চেষ্টা সবসময়ই ছিল। লো জিআই সম্পন্ন ধানে গ্লুকোজের পরিমাণ কম থাকে। আমরা পরীক্ষা করে সবসময় এই ধানে জিআই ভ্যালু ৫৫–এর নিচে পেয়েছি।
ব্রি বলছে, এ ধানটি পেকে যাওয়ার পরেও এর গাছ সবুজ থাকে। ধানটিতে অ্যামাইলোজের পরিমাণ ২৭ শতাংশ এবং প্রোটিনের পরিমাণ ৭ দশমিক ৩ শতাংশ। এ জাতের ধান থেকে পাওয়া চাল রান্না করা ভাত ঝরঝরে ও সুস্বাদু হয়।
জোয়ার–ভাটা অঞ্চলের ধান : ব্রি উদ্ভাবিত আরেকটি ধান হলো ব্রি ধান ১০৬, যেটি জোয়ার–ভাটা অঞ্চলের উপযোগী বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। এটি বরিশাল, নোয়াখালী ও চট্টগ্রামের কিছু এলাকার জন্য খুব কাজে লাগবে বলে বলছেন সংস্থাটির বিজ্ঞানীরা।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-