ডেস্ক রিপোর্ট •
কক্সবাজার জেলায় ইয়াবা ব্যবসার কল্যাণে আঙুল ফুলে কলা গাছ হওয়া ব্যক্তিদের সম্পদ অনুসন্ধান এরই মধ্যে শেষ করেছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার একাধিক ইউনিট।
জানা গেছে কয়েক বছর আগেও যার ‘নুন আনতে পানতা ফুরাত’, এখন তার ব্যাংক হিসাবে কাড়ি কাড়ি টাকা। বাস করেন বিলাসবহুল ভবনে। চলেন দামি গাড়িতে। হয়েছে একরের পর একর ভূমি, মার্কেট।
তালিকা তৈরিতে যুক্ত একাধিক কর্মকর্তা জানান, ‘কক্সবাজারের মাদক সাম্রাজ্য নিয়ন্ত্রণকারী অনেকেরই বিরুদ্ধে মাদকের কোনো মামলা নেই! কারণ তারা সরাসরি মাদক বহনের কাজ করেন না। মাদক আইন অনুযায়ী ক্যারিয়ারের বাইরে কাউকে মামলার সঙ্গে যুক্ত করা যায় না। তাই মাদক মাফিয়াদের সিংহভাগের বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই।’
সূত্র মতে, কক্সবাজারে ইয়াবার ব্যবসা করে টাকার কুমির হওয়া দেড় শতাধিক ব্যক্তির সন্ধান পেয়েছেন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা। এর মধ্যে টেকনাফ সদরের আবু সৈয়দের গড়া সম্পদের মধ্যে রয়েছে ২২টি ভাড়া বাসা, আড়াই কোটি টাকা দামের ভূমি, ১৫ কানি জমি। একই এলাকার আবদুল্লাহ তিন কানি জমির ওপর করেছেন বিলাসবহুল কটেজ। আড়াই কানি জমিসহ নামে-বেনামে শত কোটি টাকার সম্পত্তি।
টেকনাফের উত্তর লেঙ্গুরবিল এলাকার জাফর আহমদের রয়েছে মার্কেট, তিনতলা ও চারতলা ভবন। বসবাসের জন্য কয়েক কোটি টাকায় তৈরি করেছেন বাড়ি। চলেন দামি গাড়িতে। তার সম্পত্তির পরিমাণ শত কোটি টাকা ছুঁই ছুঁই। টেকনাফ পৌর এলাকার সাদ্দাম হোসেন গড়েছেন শত কোটি টাকার সম্পত্তি। রয়েছে মার্কেটসহ ১৫ কানি জমি।
টেকনাফ সদরের আবদুল কাদেরের সম্পত্তির পরিমাণও শত কোটি টাকা ছুঁয়েছে। একই এলাকার নুর হোসেনের রয়েছে তিনতলা ও দোতলা বাড়িসহ কোটি টাকার সম্পত্তি। টেকনাফ সদরের শামলাপুর এলাকার ইয়াবা ব্যবসায়ী মেরিন ড্রাইভ সংলগ্ন ৩৫ কানি জমি, বাড়ি গাড়িসহ কোটি টাকার সম্পত্তি।
টেকনাফ সদরের মো. একরামের রয়েছে তিন কানি সুপারি বাগান, একটি বহুতল বাড়ি ও একটি দোতলা বাড়ি, একটি মার্কেট ও ৩০ কানি জমি। তার সম্পত্তির পরিমাণ শত কোটি টাকা ছুঁই ছুঁই। কক্সবাজার সদরের সুলতান আহমেদ ওরফে রোহিঙ্গা সুলতান ১০ বছর আগেও ছিলেন দিনমজুর। তার হয়েছে বাড়ি, গাড়ি ও কয়েকটি ফিশিং ট্রলার।
চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘ইয়াবা ব্যবসায়ীদের সম্পদ নিয়ে সমন্বিত তালিকা তৈরি হচ্ছে। কয়েকটি সংস্থা যৌথভাবে তালিকা প্রণয়ন করছে।’
মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের চট্টগ্রাম অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক মজিবুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, লন্ডারিং নিয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমন্বয় করে তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ীদের সম্পদ নিয়ে কাজ করছে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর। ওই তালিকায় বিগত সময়ের তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী যেমন রয়েছে। আবার নতুন করেও অনেকে যুক্ত হচ্ছে।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকা মাদক মাফিয়াদের কব্জায় আনতেই এ তালিকা তৈরি করা। চূড়ান্ত তালিকা প্রস্তুতের পর তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-