৩ থেকে ৫ লাখ টাকায় রোহিঙ্গাদের বিদেশে পাঠাতেন তারা

ফেরদৌস লিপি •

জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট, অন্যান্য খরচ—সব মিলিয়ে তিন থেকে পাঁচ লাখ টাকায় রোহিঙ্গাদের বিদেশে পাঠাত একটি চক্র

বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) ভোরে দুই রোহিঙ্গাকে পাসপোর্টের কাজে ঢাকায় নেয়ার পথে চট্টগ্রাম নগরের গরীবুল্লাহ শাহ মাজারের সামনে থেকে চক্রটির চার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৫টি পাসপোর্ট ও একটি জাতীয় পরিচয়পত্র উদ্ধার করা হয়।

গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন: চক্রের মূল হোতা মো. খসরু পারভেজ (৩৬) এবং তার সহযোগী মো. তসলিম (৪০), মো. ইসমাইল (২০) ও মো. ফারুক (২৭)।

এদের মধ্যে খসরুর বাড়ি সাতকানিয়া পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডে, তসলিমের বাড়ি বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে, ইসমাইলের বাড়ি লোহাগাড়ার আধুনগরে ও ফারুকের বাড়ি পটিয়ার আশিয়ায়।

এ ছাড়া রোহিঙ্গা দুজন হলেন: মো. জাবের (২৫) ও রজি আলম (২৭)।

বিকেলে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানান মহানগর গোয়েন্দা (উত্তর) বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার নিহাদ আদনান তাইয়ান।

তিনি বলেন, গত ১০ ফেব্রুয়ারি সৌদি আরবে পালিয়ে যাওয়ার সময় চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশি পাসপোর্টসহ আসাদ উল্লাহ নামে এক রোহিঙ্গাকে গ্রেফতার করেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখার সদস্যরা।

গ্রেফতার রোহিঙ্গা আসাদ উল্লাহ গত ৯ জানুয়ারি উখিয়া থানার একটি হত্যা মামলার আসামি। বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়ে আসাদ উল্লাহ জেদ্দাগামী একটি ফ্লাইটে সৌদি আরবে যাওয়ার চেষ্টা করছিল। পুলিশ খবর পেয়ে সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিটে তাকে গ্রেফতার করে। এ সময় তার কাছে পাওয়া বাংলাদেশি পাসপোর্টটিও জব্দ করা হয়। পরে তার কাছে দেশি পাসপোর্ট কীভাবে এসেছে, তা তদন্তে নামলে এ চক্রের সন্ধান মেলে।

পরে বৃহস্পতিবার ভোরে ঢাকায় চলে যাওয়ার সময় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে পাসপোর্ট তৈরির মূল হোতা পারভেজসহ আরও দুই রোহিঙ্গাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে পারভেজের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে তার অপর তিন সহযোগীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ সময় তাদের কাছ থেকে পাঁচটি পাসপোর্ট ও একটি জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়া গেছে।

জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছে, অন্য সদস্যদের সহায়তায় রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশি পাসপোর্ট, জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে পাঠাতে সহযোগিতা করে আসছে তারা। প্রতিটি পাসপোর্ট তৈরিতে ১ লাখ টাকা এবং মধ্যপ্রাচ্যে পাঠানোর জন্য ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা পর্যন্ত নিয়ে থাকে।

আরও খবর