কক্সবাজার জার্নাল ডেস্ক:
চট্টগ্রামে প্রকাশ্যে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এনটিভির চট্টগ্রাম অফিসের রিপোর্টার আরিচ আহমেদ শাহ ও ক্যামেরাম্যান সুমন গোস্বামীকে মামলার আসামি করার হুমকি ও ক্যামেরা কেড়ে নেওয়ার ঘটনায় কোতোয়ালি থানার ওসি জাহিদুল কবিরকে প্রত্যাহার ও শাস্তির দাবি জানিয়েছেন সাংবাদিকরা।
বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) বিকালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ সমাবেশে সাংবাদিকরা এ দাবি জানান। অন্যথায় সব সাংবাদিক সংগঠন ঐক্যবদ্ধভাবে কর্মসূচি পালনের হুমকিও দিয়েছেন তারা।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে চট্টগ্রাম নগরের কাজির দেউড়ি বিএনপি অফিসের সামনে দুই সাংবাদিকের সঙ্গে এ ঘটনা ঘটেছে। সংবাদকর্মীরা সংবাদ সংগ্রহের জন্য সেখানে অবস্থান করছিলেন। কয়েকজন বিএনপি কর্মীকে গ্রেফতারের সময় ভিডিও করতে গেলে ওসি এই হুমকি দেন।
চট্টগ্রাম টিভি জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নাসির উদ্দীনের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সমাবেশে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি তপন চক্রবর্তী, সাধারণ সম্পাদক ম. শামসুল ইসলাম, বিএফইউজের যুগ্ম সম্পাদক কাজী মহসিন, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক দেব দুলাল ভৌমিক, সহ-সভাপতি চৌধুরী ফরিদ, টিভি জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি শামসুল হক হায়দরী, টিভি জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক লতিফা রুনা, সিইউজের সহ-সভাপতি রোবেল খান, সিইউজের সহ-সভাপতি অনিন্দ্য টিটু, যুগ্ম সম্পাদক সাইদুল ইসলাম ও আরিচ আহমেদ শাহ বক্তব্য রাখেন।
সিইউজের সভাপতি তপন চক্রবর্তী বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কোতোয়ালি থানার ওসি জাহিদুল কবিরকে প্রত্যাহার করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। অন্যথায় বৃহত্তর আন্দোলনের ঘোষণার হুমকি দেন তিনি।
তিনি বলেন, সিইউজের সিনিয়র সদস্য আরিচ আহমেদ শাহকে গ্রেফতারের হুমকি ও ক্যামেরাম্যান সুমন গোস্বামীর ক্যামেরা কেড়ে নেওয়ার ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয়। এই ন্যাক্কারজনক ঘটনায় জড়িত ওসি জাহিদকে প্রত্যাহার না করার আগে পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে কোনও বৈঠকে বসবে না সাংবাদিকরা।
চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক দেব দুলাল ভৌমিক বলেন, ওসি জাহিদের কোনও অপকর্ম ঢাকতে সাংবাদিকদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছে। চট্টগ্রামে কর্মরত সাংবাদিকদের সম্পর্কে এ ওসির কোনও ধারণা নেই। ওসির অপকর্ম, অতীত কর্মকাণ্ড, অনিয়ম সম্পর্কে ধারণা নিতে পুলিশ কমিশনারের প্রতি অনুরোধ জানান। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ওসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলবে সাংবাদিকরা।
সাধারণ সম্পাদক ম. শামসুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত পুলিশের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে চট্টগ্রামের সব সাংবাদিক সংগঠন ঐক্যবদ্ধ কর্মসূচির মাধ্যমে ওসিসহ জড়িত পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বাধ্য করবে।
বিএফইউজের যুগ্ম সচিব মহসীন কাজী বলেন, থানার ওসি কর্মরত সাংবাদিকদের সঙ্গে যেভাবে আচরণ করেছে সেটা কোনোভাবে মেনে নেওয়া যায় না। এর আগে পাঁচলাইশ থানার ওসি নিরীহ রোগীর স্বজনদের সঙ্গে যে আচরণ করেছে সেটা নিয়ে সারা দেশে তোলপাড় চলছে। এ ঘটনার কোনও বিচার না হওয়ার কারণে কোতোয়ালি থানার ওসি ন্যাক্কারজনক এ ঘটনা ঘটিয়েছে। অতিউৎসাহী পুলিশের এসব কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
টিভি জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নাসির উদ্দীন বলেন, সাংবাদিকদের কোনও দল নেই। সবসময় রাস্তায় থেকে দেশের জন্য কাজ করেন। কাজ করার সময় পুলিশের হুমকি, ক্যামেরা কেড়ে নেওয়ার ঘটনায় দোষীদের শাস্তি ছাড়া আমরা ঘরে ফিরে যাবো না।
বাংলা ট্রিবিউন
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-