টেকনাফ অফিস:
টেকনাফে কামরুল ইসলাম ওরফে আব্বুইয়া (২৪) নামে এক মাদক কারবারি ও সন্ত্রাসীর উৎপীড়নে অতিষ্ট হয়ে উঠেছে পুরো গ্রামবাসী। অভিযোগ উঠেছে এই আবুইয়া বিভিন্ন বাহিনী সোর্স পরিচয়ে চালিয়ে যাচ্ছে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড।
সে অত্র উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের খারাংখালী মহেষখালীয়া পাড়ার মমতাজ মিয়ার ছেলে। তার সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের কারণে ইতোমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে এসএসসি পরীক্ষার্থী তাসফিয়ার শিক্ষা জীবন। তাসফিয়া খারাংখালী মহেষখালীয় পাড়ার শাহ আলমের মেয়ে।
জানা গেছে, স্কুল শিক্ষার্থী তাসফিয়াকে দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল আব্বুইয়া। এতে সাড়া না পেয়ে গত ২৭ অক্টোবর তাকে স্কুল থেকে নির্বাচনী পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে জোরপূর্বক গাড়িতে তুলে অপহরণের চেষ্টা করে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ তাসফিয়াকে উদ্ধার করে এবং ব্যবহৃত গাড়িটি জব্দ করে।
এ ব্যাপারে তাসফিয়ার বাবা শাহ আলম বাদী হয়ে ওই রাতেই টেকনাফ মডেল থানায় একটি এজাহার দাখিল করেন। এজাহার পেয়ে পুলিশ মামলা রুজু করেন।
মেয়ে অপহরণের ঘটনায় থানায় মামলা করায় প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে মেয়ের বাবা ও পরিবারের সদস্যদের। প্রতিদিন মেয়ের বাবাকে হুমকি দমকিসহ অস্ত্র প্রদর্শন করে আসছে সন্ত্রাসী আব্বুইয়া।
গতকাল মঙ্গলবার রাতেও মামলার বাদী মেয়ের বাবা শাহ আলমের একটি বাগানের প্রায় দুই শতাধিক গাছ কেটে ফেলেছে আব্বুইয়ার নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী। চারটি মামলার পলাতক আসামী হয়েও এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে এই মাদককারবারি।
ভুক্তভোগী শাহ আলম জানান, গত ২৭ অক্টোবর আমার মেয়ে নয়াবাজার উচ্চ বিদ্যালয় থেকে নির্বাচনী পরীক্ষা শেষে বাড়ি ফেরার পথে কামরুল ইসলাম আব্বুইয়ার নেতৃত্বে একদল বখাটে আমার মেয়ে জোরপূর্বক একটি গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। পরে মেয়ের সহপাঠী ও রিক্সা চালকের মাধ্যমে খবর পেয়ে সরকারী জরুরী সেবা ৯৯৯-এ ফোন দিলে হোয়াইক্যং পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই জায়েদ হাসানের নেতৃত্বে একদল পুলিশ মেয়েকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। এসময় আব্বুইয়া ও তার সহযোগীরা পালিয়ে যায়। পরে টেকনাফ মডেল থানায় এ ব্যাপারে একটি এজাহার দাখিল করি।
মামলার পর থেকে আব্বুইয়া দিনদুপুরে ও রাতে এসে প্রতিদিন আমার বাড়িতে হামলা করে এবং আমাকে ও আমার পরিবারের সদস্যদের মেরে ফেলার হুমকি দেয়। সে নিজেকে বিভিন্ন বাহিনীর সোর্স পরিচয় দিয়ে থাকে।
তিনি আরো জানান, আব্বুইয়া একজন মাদককারবারি ও সন্ত্রাসী।
সে এলাকায় প্রতিনিয়য়ত অস্ত্র নিয়ে ঘুরাফেরা করে। এলাকার সবাই তার সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের জন্য তাকে ভয় পায়।
গত (মঙ্গলবার) রাতেও আমার একটি বাগানে গিয়ে আব্বুইয়ার নেতৃত্বে কয়েকজন সন্ত্রাসী বাগানের দুই শতাধিক কেটে ফেলে এবং পরে পিস্তল, দা,কিরিচ আমার ঘরে এসে আমাকে হুমকি দিয়ে যায়।
এ অবস্থায় আমি চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এ ব্যাপারে আমি আরো একটি অভিযোগ আজ (বুধবার) টেকনাফ থানায় দিয়েছি। এখন আমি আমার মেয়ে ও পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তার স্বার্থে দ্রুত তাকে আইনের আওতায় আনতে র্যাব ও পুলিশের সাহায্য কামনা করছি।
টেকনাফ হোয়াইক্যং পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই জায়েদ হাসান জানান, মেয়ে অপহরণের ঘটনা সত্য। অভিযোগ পেয়ে আমিসহ পুলিশের একটি টীম মেয়েকে উদ্ধার করি। পরে মেয়ের বাবা শাহ আলম বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছে। এছাড়া গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ভুক্তভোগীর বাগানের গাছ ফেলার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক আমি ঘটনাস্থলে পৌঁছি। এসময় আব্বুইয়া ও তার সহযোগীরা পালিয়ে যায়।
এসএসসি পরীক্ষার্থী স্কুল ছাত্রী অপরহরণের মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই রুকনোজ্জামান জানান, আব্বুইয়া ও তার সহযোগীদের আটক করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তার বিরুদ্ধে আগেও একাধিক মামলা রয়েছে।
খারাংখালী এলাকার বাসিন্দারা জানান, এলাকায় কেউ আব্বুইয়ার বিরুদ্ধে কথা বলতে পারেনা। সে নিজেকে র্যাবের সোর্স পরিচয় দেয়। কোমরে সবসময় অস্ত্র বহন করে। যে তার বিরুদ্ধে কথা বলে তাকে নানা ধরনের হুমকি ধমকি দেয়। পুরো এলাকায় সে এখন ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছে। তার এসব সন্ত্রাসী কর্মকাে-পুরো গ্রামবাসী অতিষ্ট।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-