ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের কারিগরি শিক্ষায় দক্ষ করে তুলছে স্কাস!

নিজস্ব প্রতিবেদক •

সমাজ কল্যাণ ও উন্নয়ন সংস্থা (স্কাস) এর উদ্যোগে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের কারিগরি শিক্ষা প্রদানে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদে মাঝে ওরিয়েন্টেশন অনুষ্টিত হয়েছে।

গত ৩০ ও ৩১ আগষ্ট মরিচ্যা ,উখিয়া সদর এবং থাইংখালী ৩ টি ব্র্যাঞ্চ ট্রেনিং সেন্টারে ১৫০ জন প্রশিক্ষণার্থী ও ১৫০ জন অভিভাবকদের সাথে ওরিয়েন্টেশন অনুষ্টিত হয়।

উক্ত ওরিয়েন্টশনে প্রধান অথিতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, স্কিল ডেভলাপমেন্ট প্রোগ্রামের ফোকাল পার্সন জনাব মোঃ ইউছুপ ।

এসময় তিনি গ্রাফিক্স ডিজাইন, কম্পিউটার প্রশিক্ষণ, মোবাইল ফোন সার্ভিসিং, মটর সাইকেল মিকানিক, ফার্নিচারের কাজ এবং ট্রেইলারিং ট্রেডের শিক্ষার্থীদের দক্ষতা উন্নয়নমূলক কর্মসূচীর বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন এবং তাদেরকে উৎসাহ প্রদান করেন। যেহেতু সুযোগ সব সময় আসেনা তাই, এই ৬ মাস কোর্সে নিজে কে একজন দক্ষ কর্মী হিসেবে গড়ে তুলা ছাড়া অন্য কোন বিকল্প নাই বলে মন্তব্য করেন।

এসময় অভিভাকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনাদের সন্তানরা যেন নিয়মিত প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ও সাপ্তাহিক ১দিন ট্রেনিং সেন্টারে ক্লাসে আসে সে দিকে গুরুত্ব দিতে হবে এবং যথাসময়ে বাসায় ফিরে কিনা সেদিকে নজর রাখতে হবে। প্রয়োজনে অভিভাবকদেরকে ট্রেনিং সেন্টারে এসে কার্যক্রম দেখার অনুরোধ করেন তিনি।

উক্ত ওরিয়েন্টশনে অভিভাবকগণ বেকার কিশোর-কিশোরীদের দক্ষতা উন্নয়ন মুলক ৬ মাস মেয়াদি প্রশিক্ষণ প্রদান করার জন্য স্কাসকে অভিন্দন জানান এবং সংস্থার সফলতা কামনা করেন।

ওরিয়েন্টশনে আর ও বক্তব্য রাখেন, স্কিল ডেভলপমেন্ট প্রোগ্রামের প্রোগ্রাম অর্গাইনাজার মইনুল ইসলাম মুবিন, আনসার উল্লাহ, রাজন কুমার ,পিয়ার লিডার রেহেনা আক্তার মুন্নি, শাহানাজ বেগম, তছলিমা আক্তার প্রমুখ।

সমাজ কল্যাণ সংস্থা (স্কাস) এর চেয়ারম্যান জেসমিন প্রেমা

এ বিষয়ে সমাজ কল্যাণ সংস্থা (স্কাস) এর চেয়ারম্যান জেসমিন প্রেমা স্কুল ঝরে পড়া ও অতি দরিদ্র পরিবারের সন্তান, যারা মাধ্যমিক শিক্ষাচক্রে অংশগ্রহণ করতে পারেনি তাদের জন্য কারিগরি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে দেওয়াতে এসডিসি ও ব্র্যাককে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এ সকল ছেলেমেয়েরা যেন বেকার কর্মসংস্থান নিজেই করতে পারে এই সুযোগ তৈরী করে দেওয়ার জন্য এসডিসি ও ব্র্যাককে ধন্যবাদ।

এই অদক্ষ ও বেকার জনগোষ্ঠিকে দক্ষ সম্পদে পরিণত করতে কারিগরি শিক্ষার বিকল্প নেই। তাই ঝড়ে পড়া শিক্ষার্থীদের দক্ষতা উন্নয়ন শিক্ষায় সুযোগ প্রদান করা একটি যুগোপযোগী উদ্যোগ বলে উল্লেখ করেন তিনি।

তিনি বলেন, কারিগরি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে স্কুল ঝরে পড়া ও যারা সাধারণ শিক্ষার সাথে সম্পৃক্ত না তারা যাতে নিজেকে একজন দক্ষ কর্মী হিসেবে গড়ে তুলতে পারে এবং এই প্রকল্পের মধ্য দিয়ে যাতে কেউ বেকার বসে না থাকে, ঘরের কাজের পাশাপাশি বিভিন্ন উপার্জনমুখী পেশায় নিজেকে নিয়োজিত রাখতে পারে সেই প্রচেষ্টা করা হবে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের শিক্ষা থেকে ঝড়ে পড়া তারুণ্যের একটি বড় অংশ বেকার থাকলেও, ভারতীয়, শ্রীলঙ্কাসহ বিদেশি কর্মীরা কাজ করছেন। কেননা, কাজের জন্য যে দক্ষতা প্রয়োজন, বাংলাদেশি তরুণদের অনেকের মাঝে তা নেই। তাই চাহিদানুযায়ী দক্ষ কর্মী হতে এ প্রশিক্ষণের বিকল্প নেই।

সুতরাং এ কথা আর বলার অপেক্ষা রাখে না যে, আধুনিক বিশ্বে, বৈজ্ঞানিক যুগে, দক্ষতানির্ভর শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা ঠিক কতটা। বেশির ভাগ শিক্ষার্থীকেই ঝরে পড়তে হয়, কিংবা কাঙ্খিত সাফল্য বঞ্চিত হতে হয় সঠিক দক্ষতার অভাবে। তাই ঝড়ে পড়া শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদেরও এ সত্য উপলব্ধি করে মেনে নিতে হবে যে, বর্তমান সময়ের প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ বাজারে দক্ষতা ছাড়া কোনোভাবেই টিকে থাকা যাবে না।

সর্বমহল যদি একই সাথে দক্ষতার প্রয়োজনীয়তাকে স্বীকার করে নিতে পারে এবং সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে হবে। পাশাপাশি দেশেও গড়ে উঠবে দক্ষ জনশক্তি, ফলে ঘুচে যাবে বেকারত্বের অভিশাপ।

এ প্রকল্পের ১৪ থেকে ১৮ বয়সের স্কুল ঝড়ে পড়া ছেলে মেয়ে কারিগরি শিক্ষার আওতায় এনে তাদের জন্য উপার্জনের পথ তৈরি করা হচ্ছে। উক্ত প্রকল্পে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, হতদরিদ্র ও এতিম পরিবারের সন্তান এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের যাতায়াত ভাতা এবং শিক্ষা প্রদানের জন্যও ভাতা রাখা হয়েছে। ছয় মাস প্রশিক্ষণের পর তাদের চাকুরীর ব্যবস্থা করা হবে। যাতে তারা বিনামূল্যে এ প্রশিক্ষণ নিয়ে পরবর্তীতে নিজেদের স্বাবলম্বী করতে পারে।

আরও খবর