কক্সবাজারে চাঞ্চল্যকর ফয়সাল হত্যা মামলায় ৪ জনের মৃত্যুদন্ড ও দুই জনের যাবজ্জীবন!

বিশেষ প্রতিবেদক •

কক্সবাজার সদর উপজেলার চাঞ্চল্যকর জিয়া উদ্দিন ফয়সাল হত্যা মামলায় ৪ জনকে মৃত্যুদন্ড এবং ২ জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে।

মৃত্যুদন্ড দেওয়া আসামিরা হচ্ছে-কক্সবাজার সদর উপজেলার পিএমখালী ইউনিয়নের পূর্ব মাছুয়াখালী গ্রামের নুরুচ্ছফার পুত্র রেজাউল করিম প্রকাশ বুইল্ল্যানির ছেলে (২০), মৃত আমান উল্লাহর পুত্র নুরুল হক (২২),মৃত অছিউর রহমানের পুত্র রমজান আলী (২৪) এবং মোঃ ইসহাকের পুত্র রুবেল (২০)।

যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হচ্ছে-একই এলাকার নুরুল আবছারের পুত্র শাহীন উদ্দিন (১৯) এবং দুদু মিয়ার পুত্র মনি আলম (১৯)। যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রাপ্তদের প্রত্যককে ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদন্ড দেওয়া হয়েছে।

কক্সবাজারের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল বুধবার ৩১ আগস্ট সকালে এ রায় ঘোষণা করেন। কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা এস.এম আব্বাস উদ্দিন এ তথ্য জানিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, কক্সবাজার সদর উপজেলার পিএমখালী ইউনিয়নের পূর্ব মাছুয়াখালী গ্রামের মোঃ নুরুল আনোয়ার এর পুত্র, কক্সবাজার ইন্টান্যাশনাল ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের ৫ম সেমিস্টারের ছাত্র জিয়া উদ্দিন তার এলাকার মাদক ব্যবসার প্রতিবাদ ও বিক্রিতে বাঁধা দিতো।

এতে মাদক কারবারিরা ক্ষিপ্ত হয়ে ২০১৭ সালের ১৬ এপ্রিল রাত ৮ টার দিকে পিএমখালী ইউনিয়নের পূর্ব মাছুয়াখালী জামে মসজিদের উত্তর পাশে মাদক ব্যবসারীরা সংঘবদ্ধ হয়ে জিয়া উদ্দিন ফয়সাল এর উপর সশস্ত্র হামলা হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক জিয়া উদ্দিন ফয়সালকে মৃত ঘোষনা করেন।

এ ঘটনায় জিয়া উদ্দিন ফয়সাল এর পিতা মোঃ নুরুল আনোয়ার বাদী হয়ে ফৌজদারী দন্ড বিধির ৩০২/৩৪ ধারায় ৯ জনকে আসামী করে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

যার কক্সবাজার সদর মডেল থানার মামলা নম্বর : ৬২/২০১৭ ইংরেজি, জিআর মামলা নম্বর ৪০৬/২০১৭ ইংরেজি (সদর) এবং এসটি মামলা নম্বর : এসটি মামলা নম্বর :
কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি ও রাষ্ট্র পক্ষে মামলা পরিচালনাকারী এ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম জানান, এহত্যা মামলাটি তদন্ত করে তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও), কক্ত্বাজার সদর মডেল থানার তৎকালীন এসআই কৃতুব উদ্দিন খান ২০১৭ সালের ৪ জুলাই আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। মামলাটি ২০১৮ সালের ১ মার্চ চার্জ (অভিযোগ) গঠন করা হয়।

চার্জশীটে এজাহারের ৯ জন আসামীর মধ্যে ৬ জনকে প্রাথমিকভাবে দোষী সাব্যস্থ করে বিচার করতে এবং অবশিষ্ট ৩ জন আসামীকে প্রাথমিকভাবে ঘটনার সাথে সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় তাদেরকে মামলার দায় হতে বাদ দিতে তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) আদালতে প্রার্থনা করেন।

যে ৬ জন আসামীকে বিচারের জন্য চার্জশীটে আবেদন করা হয় তারা হলো : কক্সবাজার সদর উপজেলার পিএমখালী ইউনিয়নের পূর্ব মাছুয়াখালী গ্রামের নুরুচ্ছফার পুত্র রেজাউল করিম প্রকাশ বুইল্ল্যানির ছেলে (২০),মৃত আমান উল্লাহ’র পুত্র নুরুল হক (২২), মৃত অছিউর রহমানের পুত্র রমজান আলী (২৪), মোঃ ইসহাকের পুত্র রুবেল (২০), নুরুল আবছারের পুত্র শাহীন উদ্দিন (১৯) এবং দুদু মিয়ার পুত্র মনি আলম (১৯)।

মামলাটিতে ১২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ, আসামীদের পক্ষে সাক্ষীদের জেরা, ময়নাতদন্ত রিপোর্ট, সুরতহাল প্রতিবেদন,সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে দন্ডপ্রাপ্ত আসামীদের ফৌজদারী দন্ড বিধির ৩০২/৩৪ ধারায় দোষী সাব্যস্থ করে কক্সবাজারের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল বুধবার উপরোক্ত সাজা প্রদান করেন।

রায়ের বিষয়ে পিপি আযাডভোকেট ফরিদুল আলম জানান, রাষ্ট্র পক্ষ মামলাটির সাক্ষী, আলামত প্রদর্শন সহ বিচারের জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছু আদালতে উপস্থাপন করতে সক্ষম হয়েছে। ফলে বিজ্ঞ বিচারক মামলাটি দ্রুততম সময়ের মধ্যে রায়ঘোষণা করতে পেরেছেন। এ রায়ে রাষ্ট্র পক্ষ সন্তোষ প্রকাশ করেন।

আরও খবর