পশ্চিমা বিশ্বে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ‘গৌণ বিষয়’

শেখ শাহরিয়ার জামান •

মিয়ানমার সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে বাংলাদেশ ও পশ্চিমা বিশ্বের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। যার প্রভাব পড়ছে জেনেভা-নিউইয়র্কেও। বাংলাদেশ মনে করে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বড় সমস্যা। অপরদিকে, পশ্চিমা বিশ্ব জোর দিচ্ছে মিয়ানমারে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায়। তাদের কাছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন এখন গৌণ বিষয়।

এই মতবিরোধের প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলেও। রোহিঙ্গা নির্যাতন ও প্রত্যাবাসনকে প্রাধান্য দিয়ে মানবাধিকার কাউন্সিলে একটি রেজুলেশন জমা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ওই রেজুলেশনে মিয়ানমারের গণতান্ত্রিক পরিস্থিতিকে প্রাধান্য দিতে চায় পশ্চিমা বিশ্বের কয়েকটি দেশ।

শুধু তাই নয়, প্রত্যাবাসন বিষয়টি নিয়ে তাদের বক্তব্য হচ্ছে সহায়ক পরিস্থিতি তৈরি হলে এটি নিয়ে আলোচনা হবে।

এ বিষয়ে কানাডার রাষ্ট্রদূত লিলি নিকোলাস সোমবার (৪ জুলাই) বিকালে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে আলোচনা করেন।

আলোচনার পর মাসুদ বিন মোমেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রধান অগ্রাধিকার হচ্ছে প্রত্যাবাসন। রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ অনন্তকাল আশ্রয় দেবে না।’

জেনেভার রেজুলেশনে রোহিঙ্গা নির্যাতন ও প্রত্যাবাসনকে অধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এই সমস্যা সমাধানের জন্য মিয়ানমারের সঙ্গে আমাদের আলোচনা করতে হবে এবং ওই আলাপ রোহিঙ্গাদের সমস্যার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা বা অন্য কোনও বিষয় এখানে আসার সুযোগ নেই।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে অবস্থানরত ১১ লাখ রোহিঙ্গাদের আশা-ভরসাও দিতে হবে। এটি করা না হলে তাদের বিপথে যাওয়ার আশঙ্কা আছে।

জেনেভায় রেজুলেশন

জেনেভার বিভিন্ন কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, সব ঠিক থাকলে আগামী বৃহস্পতিবার রেজুলেশনটি গৃহীত হতে পারে।

এ বিষয়ে এক কর্মকর্তা বলেন, রেজুলেশনটি মুসলিম দেশগুলোর সংগঠন ওআইসির পক্ষ থেকে আনা হয়েছে। সবার সঙ্গে আলোচনার পরে রেজুলেশনটি জমা দেওয়া হয়েছে।

প্রত্যাবাসন নাকি গণতন্ত্র— কোনটিকে বেশি অগ্রাধিকার দেওয়া হবে এ বিষয়ে মতবিরোধ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পশ্চিমা বিশ্বের দেশগুলো গণতন্ত্রের পক্ষে বেশি জোর দিচ্ছে। কিন্তু ওই রেজুলেশনে বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি।

এর প্রভাব বিষয়ে তিনি বলেন, গত কয়েক বছর রোহিঙ্গা নিয়ে যত রেজুলেশন জমা দেওয়া হয়েছিল সেটির কো-স্পন্সর হিসেবে পশ্চিমা বিশ্বের দেশগুলো যুক্ত হতো। কিন্তু গত বছর থেকে তারা রোহিঙ্গা রেজুলেশনে কো-স্পন্সর হচ্ছে না।

উল্লেখ্য গত বছর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে মিয়ানমার নিয়ে আনীত একটি রেজুলেশনে রোহিঙ্গাদের প্রসঙ্গ ঠিকমতো উল্লেখ না করায় বাংলাদেশ ওই রেজুলেশনটি সমর্থন করেনি।

আরও খবর