এম.এ আজিজ রাসেল •
দুই দিনব্যাপী ওয়ালটন ডিসি সাহেবের বলী খেলার ৬৭তম আসর শুরু হয়েছে। শুক্রবার (০৬ মে) বিকাল ৪টায় কক্সবাজার বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন স্টেডিয়ামে আসরের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ।
উদ্বোধনকালে তিনি বলেন, বলী খেলা বাঙালির ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাই এই খেলার জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় এবার উৎসবমুখর পরিবেশে শুরু হয়েছে এই অঞ্চলের প্রাণের উৎসব।
এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আলহাজ্ব সাইমুম সরওয়ার কমল এমপি বলেন, এই সরকার ক্রীড়া বান্ধব। ক্রীড়াঙ্গনের উন্নয়নে ব্যাপক কাজ করে যাচ্ছে সরকার। বলীদের প্রশিক্ষণসহ সার্বিক উন্নয়ন করা হবে। যাতে তাঁরা স্ব স্ব এলাকায় সম্মানিত হন।
এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান, ওয়ালটন গ্রুপের সিনিয়র নির্বাহী পরিচালক এফ.এম ইকবাল বিন আনোয়ার ডন ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্পন্সর প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন গ্রুপের সিনিয়র নির্বাহী পরিচালক এফ এম ইকবাল বিন আনোয়ার ডন বলেন, দেশের ক্রীড়াঙ্গনের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে ওয়ালটন গ্রুপ। আমরা চাই তৃণমূল থেকে ভাল খেলোয়াড় তৈরি হোক। এ লক্ষ্যে পর্যটন নগরী কক্সবাজারে ধারাবাহিকভাবে নানা ইভেন্টে স্পন্সর করছে ওয়ালটন। বলী খেলা এই দেশের সংস্কৃতি ও ইতিহাসের অংশ। এমন উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে।
জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট জসিম উদ্দিন জানান, পর্যটন নগরী কক্সবাজারের দীর্ঘ সময়কালের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও বর্ণিল সংস্কৃতিতে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয় ১৯৫৬ সালে। যে অধ্যায়ের নাম ছিল এস.ডি. ও সাহেবের বলী খেলা ও বৈশাখী মেলা। তৎকালনি পূর্ব পাকিস্তানের ইতিহাসে মহকুমা স্টেডিয়ামে ১৯৫৬ সালে এ অঞ্চলের মানুষের বিনোদনের নিমিত্তে এসডিও সাহেবের বলী খেলা নামে প্রথম বারের মতো বলী খেলা শুরু করা হয়। তখন থেকে এটি পরিণত হয় এই জনপদের অধিবাসীদের প্রাণের উৎসবে। ১৯৮৪ সালের ১লা মার্চ কক্সবাজার মহকুমা জেলায় উন্নীত হওয়ায় এল.ডি.ও সাহেবের বলী খেলার নতুন নামকরণ করা হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বলী খেলা ও বৈশাখী মেলা উদযাপন কমিটির আহবায়ক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জাহিদ ইকবাল, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ জসিম উদ্দিন, অনুপ বড়ুয়া অপু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহীনুল হক মার্শাল, জেলা ক্রীড়া অফিসার মাঈন উদ্দিন মিলকী, কোষাধ্যক্ষ ফুটবল সম্পাদক রাশেদ হোসাইন নান্নু, জেলা ক্রীড়া সংস্থার নির্বাহী সদস্য হারুন অর রশীদ, ক্রিকেট সম্পাদক প্রভাষক জসিম উদ্দিন, এম.আর মাহবুব, বলী খেলা উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব আলী রেজা তসলিম, আজমল হুদা, ডিএফএ সদস্য খালেদ আজম বিপ্লব, ও পর্যটন উদ্যোক্তা কুটুম বাড়ির কর্ণধার নুরুল কবির পাশা।
রেফারির দায়িত্ব পালন করেন জেলা ক্রীড়া সংস্থার সহ-সভাপতি আফসার উদ্দিন, নির্বাহী সদস্য রতন দাশ ও শরাফত উল্লাহ বাবুল।
এবার প্রায় দেশের খ্যাতনামা সাড়ে ৩০০ বলী অংশ নেয়। এছাড়া ০৭ মে সমাপনী দিনে খেলা উৎসবমুখর করতে বাংলাদেশ কুস্তি ফেডারেশনের ৪ জন বলী অংশগ্রহন করবেন। তারমধ্যে ২ জন পুরুষ ও ২ জন মহিলা বলী।
৭ মে শনিবার সমাপনীতে ১নং মেডেলে খেলবেন জব্বারের বলী খেলার চ্যাম্পিয়ন জীবন বলী, নুর মোহাম্মদ, বজল ও শাহজালাল বলী।
২নং মেডেলে খেলবেন হোসেন, নেছার, মাহবু, জামাল, কাজল ও আনোয়ার বলী।
এছাড়া ৩নং মেডেলে খেলবেন জাফর, শফিউল্লাহ, মফিজ, সরদার, করিম, আমির হোসেন ও গিয়াস বলী।
বলী খেলার পাশাপাশি বৈশাখী মেলায় দেখা গেছে ঐতিহ্যবাহী নাগরদোলা, হস্তশিল্প, কুটির শিল্প, তাঁত শিল্প, বস্ত্র শিল্প, মৃৎ শিল্প ও দেশীয় পণ্যের বিপুল সমাহার।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-