আবদুল্লাহ আল আজিজ, কক্সবাজার জার্নাল :
কক্সবাজারের উখিয়ায় সাড়াশি অভিযান পরিচালনা করে ক্যাম্প পালানো ২০৩ রোহিঙ্গাকে আটক করেছে ৮ এপিবিএন।
৫ মে (বৃহস্পতিবার) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ৮ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন এর ক্যাম্পসমূহের চেকপোস্ট সংলগ্ন বাইরের এলাকা এবং ক্যাম্প এলাকার বাইরে থেকে চেকপোস্ট দিয়ে ভেতরে গমনকালে মোট ২০৩ রোহিঙ্গা সদস্যকে আটক করা হয়।
৮ এপিবিএনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ( মিডিয়া) মোঃ কামরান হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করণ এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে রোহিঙ্গা সদস্যদের ক্যাম্প এলাকার বাইরে গমন রোধে এ সাড়াশি অভিযান পরিচালনা করা হয়।
এ ধরণের অভিযান নিয়মিত পরিচালনা করা হলেও ঈদ উপলক্ষে তা জোরদার করা হয় যা চলমান থাকবে।
আটককৃতদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট ক্যাম্প-ইন-চার্জ (সিআইসি) দের মাধ্যমে মোবাইলকোর্ট পরিচালনা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে, গতকাল কক্সবাজার সৈকতে পর্যটকদের সাথে মিশে যাওয়া শত শত রোহিঙ্গা থেকে কক্সবাজার জেলা পুলিশ মাত্র কয়েক ঘণ্টা সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে সমুদ্র সৈকতসহ শহর থেকে ৪৪৩ জন রোহিঙ্গাকে আটক করেছে। এর মধ্যে দুই শতাধিক আটক হয়েছে কেবল সমুদ্র সৈকত থেকেই। উখিয়া ও টেকনাফের শিবির ছেড়ে কক্সবাজার সৈকতে এসে পর্যটকদের মতো করেই এসব রোহিঙ্গারা ঈদের আনন্দ উপভোগ করছিলো।
এর মধ্যে একজন সাগরে গোসল করতে গিয়ে একজনের মৃত্যুও ঘটেছে।
গতকাল ঈদ পরবর্তী দেশের বিভিন্নস্থান থেকে অন্তত লাখো পর্যটকের সমাগম ঘটেছে কক্সবাজার সৈকতে। সাগর পাড়ের হোটেল-মোটেলগুলোর কোনো কক্ষই এখন খালি নেই। সৈকতে গিজ গিজ করছে পর্যটকে। এমন পরিস্থিতিতে লাখো পর্যটকের সাথে রোহিঙ্গাদের একাকার হবার বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসন এবং সচেতন মহলকে ভাবিয়ে তুলেছে।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান জানিয়েছেন, রোহিঙ্গাদের জন্য বাংলাদেশের সরকার উখিয়া ও টেকনাফে নির্ধারিত স্থানে থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছে। আন্তর্জাতিক সহযোগিতায় রোহিঙ্গাদের খাওয়া-দাওয়াসহ নানা সুযোগ-সুবিধা দিয়ে রাখা হয়েছে। রোহিঙ্গাদের শিবিরের বাইরে যাবার কোনো সুযোগ নেই।’
পুলিশ সুপার জানান, শিবির ছেড়ে শত শত রোহিঙ্গা কক্সবাজারের নানা স্থানে ছড়িয়ে পড়ায় আইন-শৃংখলা পরিস্থিতির দিন দিন অবনতি ঘটছে। তিনি আরো জানান, আটক রোহিঙ্গাদের আপাতত শিবিরে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। পরবর্তীতে তাদের ভাসানচরে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
কক্সবাজার রোহিঙ্গা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি মাহবুবুর রহমান জানিয়েছেন, কক্সবাজার সৈকতে আটক হওয়া রোহিঙ্গাদের মধ্যে শিবির থেকে আসা বিপুল সংখ্যক মাদরাসায় পড়ুয়া আলখেল্লা পরিহিত রোহিঙ্গাও রয়েছে। এসব রোহিঙ্গাদের নিয়ে নানা সন্দেহও দেখা দিয়েছে।
তিনি আরো জানান, মাত্র কয়েক ঘণ্টার অভিযানে যদি এত বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা আটক হয়ে থাকে তাহলে পুরো কক্সবাজার জেলা শহরে কত হাজার আর কত লাখ রোহিঙ্গায় ভরে গেছে তা ভাবনার সময় এসেছে।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-