চট্টগ্রাম •
মেহেদির রঙ মোছার আগেই হাসপাতালে বিয়ে হওয়া ক্যানসার আক্রান্ত ফাহমিদা কামাল (২৭) আর নেই। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
আজ সোমবার (২১ মার্চ) সকাল ৭ টা ২৫ মিনিটের দিকে নগরীর ও আর নিজাম রোডের মেডিক্যাল সেন্টারের এইচডিইউতে ইন্তেকাল করেন তিনি।
মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফাহমিদার মামা এস এম আশরাফুল আরিফ।
উল্লেখ্য, ১০ দিন আগে হাসপাতালেই ভালোবাসার মানুষকে বিয়ে করেন তিনি। ইন্ডিপেন্ডেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাহমিদা কামাল এবং নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান নিজেদের শিক্ষাজীবনেই সম্পর্কে জড়ান। শিক্ষাজীবন শেষে বিয়ের পিঁড়িতে বসার স্বপ্ন দেখলেও তাতে বাধা হয়ে দাঁড়ায় মরণব্যাধি ক্যান্সার। তবে ক্যান্সারকে তুচ্ছ বানিয়ে মালা বদল করেই ফেললেন তারা।
নগরীর দক্ষিণ বাকলিয়ার চাক্তাই এলাকার মেয়ে ফাহমিদা কামালের শরীরে প্রথম রেক্টাম ক্যান্সার ধরা পড়ে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে। দ্রুত তাকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করান বাবা কামাল উদ্দিন। পরে ডক্তারদের পরামর্শে ফাহমিদাকে ভারতের টাটা মেমোরিয়াল হাসপাতালে নেওয়া হয়।
ওই হাসপাতালে দীর্ঘসময় চিকিৎসার পরেও অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় আশা ছেড়ে দেন চিকিৎসকরা। চলতি বছরের ৬ মার্চ তাকে নগরীর ওআর নিজাম রোডের চট্টগ্রাম মেডিকেল সেন্টার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের ৪০৫ নম্বর কক্ষে ডা. সাজ্জাদ বিন ইউসুফের তত্বাবধানে রয়েছেন তিনি।
ফাহমিদা কামালের নিকটাত্মীয় মো. সাইফুদ্দিন সাকী পূর্বকোণকে জানান, শিক্ষাজীবনেই মাহমুদুল হাসান এবং ফাহমিদা কামালের পরিচয়। প্রথমে বন্ধুত্ব, পরে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান তারা। ২০২০ সালে হঠাৎ ফাহমিদার শরীরে ক্যান্সার ধরা পড়লেও চকরিয়ার ছেলে হাসান ছায়ার মতো সব সময় তার পাশে ছিলেন।
তিনি বলেন, ফাহমিদার অসহ্য কষ্ট ও বুকভাঙা যন্ত্রণা হাসান নিতে পারছিলেন না। মানসিক প্রশান্তি দিতে তিনি ফাহমিদাকে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। প্রথমে রাজি না হলেও হাসানের দৃঢ়চেতা মনোভাবের কারণে পরে দুই পরিবার রাজি হয়। এক টাকা দেনমোহরে ৯ মার্চ রাতে হাসপাতালেই তাদের বিয়ে হয়।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-