বিশেষ প্রতিবেদক •
উখিয়ার হলদিয়া পালং ইউনিয়নের রুমখা পুরাতন বড়ুয়া পাড়া এলাকায় নববধু হত্যাকান্ডের ঘটনার জের ধরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল নং ৩, কক্সবাজারে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন নিহতের পরিবার।
গত ১৫ মার্চ সোমবার নিহত নববধু সুবর্ণ বড়ুয়া (২৩) এর পিতা দুলাল বড়ুয়া বাদী হয়ে ৬ জনকে আসামী করে এ মামলা দায়ের করেন।
বিয়ের ১ মাসের মাথায় প্রবাসী টিপু বড়ুয়ার স্ত্রী সুবর্ণ বড়ুয়া (২৩) এর ফাঁসিতে ঝুলে আত্নহত্যার ঘটনা ঘটেছে। গত ২৪ ফেব্রুয়ারী বৃহস্পতিবার রাত ৯ টা থেকে ১২ টা পর্যন্ত এ নির্মম হত্যাযজ্ঞ চলে বলে দায়েরকৃত এজাহার সূত্রে জানা যায়। পর দিন সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে উখিয়া থানা পুলিশকে খবর দিয়ে ফাঁসিতে ঝুলে আত্নহত্যা দেখানো হয়েছে। উক্ত নির্মম হত্যাকান্ডের ঘটনায় চলছে ব্যাপক তোলপাড়।
সূত্রমতে, উপজেলার হলদিয়া পালং ইউনিয়নের রুমখা পুরান বড়ুয়া পাড়া গ্রামের দিনাংশু বড়ুয়ার ছেলে বাহরাইন প্রবাসী টিপু বড়ুয়া (২৭) এর সাথে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম বড়ুয়া পাড়া গ্রামের দুলাল বড়ুয়ার মেয়ের সাথে গত এক মাস আগে উভয় পক্ষের সম্মতি ক্রমে পারিবারিক ভাবে বিবাহ অনুষ্টান সম্পন্ন হয়। বিয়ের এক মাস যেতে না যেতে সুবর্ণ বড়ুয়া (২৩) রহস্যজনক কারনে ফাঁসিতে ঝুলে আত্নহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে।
নিহতের পিতা দুলাল বড়ুয়া বলেন, আমার মেয়ে সুবর্ণ বড়ুয়াকে তার স্বামী টিপু বড়ুয়া গলা টিপে হত্যা করেছে। উক্ত হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতরা হলেন, টিপু বড়ুয়া, উত্তর ঘুমধুম বড়ুয়া পাড়া গ্রামের মৃত ভেলামোহনের ছেলে ঘুমধুম কচুবনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক দ্বীপন বড়য়া, কুতুপালং গ্রামের রাজা মোহন বড়ুয়ার ছেলে সুদত্ত বড়ুয়া, রুমখা চৌধুরী পাড়া গ্রামের সোনাধন বড়ুয়ার ছেলে অশন্ত বড়ুয়া পশ্চিম বড়ুয়া পাড়া গ্রামের বস্কিম বড়ুয়ার ছেলে মৃদুল বড়ুয়া, কুতুপালং গ্রামের সুদত্ত বড়ুয়ার ছেলে সুমেশ বড়ুয়াসহ শীর্ষদের প্রত্যক্ষ, পরোক্ষ ইন্ধনে ও সহযোগিতায় আমার মেয়েকে তার স্বামী টিপু বড়ুয়া হত্যা করেছে।
নিহত সুবর্ণ বড়ুয়ার পিতা দুলাল বড়ুয়া ১৫ মার্চ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল নং- ৩ , কক্সবাজারে বাদী হয়ে ৬ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। যার মামলা নং- সিপি ৫৮/২২ইং। মামলার বাদী আরো বলেন, আমার মেয়ে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত টিপু বড়ুয়া ও দ্বীপন বড়ুয়াকে গ্রেপ্তারে হত্যাকান্ডের মূল রহস্য উৎঘাটন হবে বলে তিনি দাবী জানান।
অভিযুক্ত দ্বীপনবড়ুয়ার নিকট জানতে চাইলে, পরকিয়া প্রেমের জের ধরে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা সংঘটিত হয়েছে বলে তিনি স্বীকার করেন।
নিহত সুবর্ণ বড়ুয়ার পিতা দুলাল বড়ুয়া, আরো জানান, আমার মেয়ে সুবর্ণ বড়ুয়া হত্যার এক সাপ্তাহ আগে জামাই টিপু বড়ুয়া আমার কাছ থেকে ৫ লাখ টাকার যৌতক দাবী করেন। আমি আমার মেয়ের স্বামী টিপু বড়ুয়ার দাবীকৃত টাকা দিতে অপরাগত প্রকাশ করায় আমার মেয়ে সুবর্ণ বড়ুয়াকে মারধর পূর্বক গলাটিপে হত্যা করেছে। শুধু তাই নয়, আমার মেয়েকে শ্মশানে নিয়ে গেলে ওইখানেও ধারালো দা, কিরিচ ইত্যাদি নিয়ে আমাকে ও আমার পরিবারের লোকজনকে হত্যার চেষ্টা করে টিপু বড়ুয়া।
তিনি আরো বলেন, আমি আমার মেয়ে হত্যাকান্ডের ব্যাপারে থানা বা আদালতের আশ্রয় নিলে আমার মেয়ে সুবর্ণ বড়ুয়ারমত আমাকেও স্ব-পরিবারে হত্যা করা হবে মর্মে হুমকি ধমকি দিচ্ছে। তাই আমি আমার মেয়ে সুবর্ণ বড়য়া হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তার পূর্বক কঠিন শাস্তির আওতায় নিয়ে আসার জন্য জেলা পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ আহম্মদ সনজুর মোরশেদ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরন করা হয়েছে বলে তিনি জানান। যদি কেউ আদালতে মামলা করলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-