চকরিয়ায় তিনদিনে হত্যা ১, আত্মহত্যা ২

স্টাফ রিপোর্টার, চকরিয়া :

কক্সবাজারের চকরিয়ায় শনিবার পরিবারিক কলহের জেরে হত্যার শিকার এক গৃহবধুর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। উপজেলার কাকারা থেকে সন্ধ্যায় নিহত ওই গৃহবধুর লাশ শ্বশুরবাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়।

গত তিনদিনে পৃথক তিনস্থান থেকে উদ্ধার হয়েছে ৩ গৃহবধুর লাশ। উপজেলার হাবাংয়ে বৃহস্পতিবার রাতে হত্যা হয় গৃহবধু জেসমিন (৩৬)। হত্যার অভিযোগ এনে ছোট ভাই সালাহউদ্দিন বাদী হয়ে শুক্রবার রাতে মামলা দায়ের করে। ওইদিন রাতেই এজাহারনামীয় একমাত্র আসামী মোরশেদ আলমকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সে হারবাং ইউনিয়নের কিল্লার পূর্ব পাড়ার কালু সওদাগরের ছেলে।

নিহতের ভাই সালাহউদ্দিন জানান, বৃহস্পতিবার রাত ৭টার দিকে তার ভগ্নিপতির নিকট আত্মীয় মুরশেদ আলম তার বোন জেসমিনকে হত্যা করেছে। মোয়াজ্জেমের ভাড়া বাসা থেকে জেসমিনের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। এসময় তার স্বামী মোয়াজ্জেম হোসেন ঢাকায় ছিলেন।

এদিকে চিরকুট লিখে আত্মহত্যা করেছেন রুমানা আক্তার (২৬) নামে দুই সন্তানের জননী। ২৫ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার হারবাং ইউনিয়নের কোরবানীয়া ঘোনা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। রুমানা ওই এলাকার হাফেজ শফিকুর রহমানের স্ত্রী। তার ৯ বছর বয়সী এক ছেলে ও ৭ বছর বয়সী এক কন্যা রয়েছে।

হারবাং পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আজহারুল ইসলাম জানান, লাশের পাশে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে। ওই চিরকুটের লেখা রুমানার কিনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

শনিবার সন্ধ্যায় উপজেলার কাকারা বটতলী কসাইপাড়া থেকে মিনার নাহার নামের তৃতীয় লাশটি উদ্ধার করা হয়। মিনার নাহারের ভাই মো. দিদার জানান, একই গ্রামের ফরিদুল আলমের ছেলে আলাউদ্দিনের সাথে একই এলাকার মকছুদ আহমদের মেয়ে মিনার নাহার পুতু মনি (২৮) এর বিয়ে হয় আট বছর আগে। দাম্পত্য জীবনে এক কন্যা সন্তান ও এক ছেলে রয়েছে।

কিছুদিন পুর্বে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে পারিবারিক কলহ তৈরি হয়। এরমধ্যে আলাউদ্দিন দ্বিতীয় বিয়ে করে বসে। স্বামী অন্যত্রে বিয়ে করার কথা শুনে মিনার নাহার পুতু মনি মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ে। স্বামী আলাউদ্দিনও প্রায় সময় তাকে মারধর করতেন বলেও জানান। তাদের মধ্যে পরিবারে দ্বন্দ্ব লেগেই থাকত জানিয়ে তিনি আরও বলেন, “আমার বোনকে তার স্বামী শ্বশুর ও শ্বাশুড়ি মিলে খুন করেছে”

নিকটবর্তী লোকজন জানান, শনিবার সকাল ৯ টায় ঝগড়া হয় তাদের মাঝে, এসময় মিনার নাহার পুতু মনির উপর নির্মমতা চালানে হয় বলেও শুনতে পান তারা।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সাহাবউদ্দিন জানান, স্বামী আরেকটি বিয়ে করেছে, ফলে স্ত্রী মিনার নাহার পুতুমনি বাপের বাড়ি চলে যায়। এ নিয়ে স্থানীয় এমইউপিকে নিয়ে সালিশ বিচার হয়েছে, তারা দু’জন সমঝোতায় এসে ২০ দিন পূর্ব থেকে ফের সংসার শুরু করে। কিন্তু আজকে শুনলাম তাকে সবাই নির্যাতন করে মেরে মুখে বিষ ঢেলে আত্মহত্যা হিসেবে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে!

চকরিয়া থানার এসআই মাঈনউদ্দিন জানান, কাকারা এলাকায় এক গৃহবধূর মৃত্যুর খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে তাকে উদ্ধার করি। এলাকাবাসী থেকে জানতে পারি, মৃত্যুর পূর্বে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তার বিষক্রিয়া ওয়াশ করে উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে রেফার করে।

চকরিয়া থানার ওসি তদন্ত জুয়েল ইসলাম বলেন, শনিবার সন্ধ্যায় কাকারা এলাকা থেকে লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে, ময়না তদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

আরও খবর