বিশেষ প্রতিবেদক :
নিখোঁজ ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন (৩৫) এর মৃত দেহ উদ্ধার হওয়ার পাঁচ দিন অতিবাহিত হলেও এখনো উদঘাটন হয়নি জসিম হত্যার মূল কারন। তবে তিন বিষয়কে সামনে রেখে হত্যার ক্লু উদঘাটনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে আইশৃংখলা বাহিনী। নির্ভরযোগ্য সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
এদিকে জসিম হত্যার পর থেকে আলোচিত সেই নয়ন ‘আত্নগোপনে কেন? এই প্রশ্ন এখন পুলিশের পাশাপাশি সচেতন মহলের মাঝে। আত্নগোপনে থাকা নয়ন এক সময় জসিমের ব্যবসায়ীক সহযোগি ছিল বলে জানা গেছে।
সম্প্রতি নয়ন ও জসিমের মধ্যে নানা কারণে ব্যবসায়ীক দ্বন্দ সৃষ্টি হয় বলে স্থানীয় ও পুলিশের সূত্রে জানা গেছে। দ্বন্দের কারনে জসিমকে হুমকিও দেয় নয়ন!
অন্য একটি সূত্রে জানা গেছে, নয়নের কাছ থেকে জসিম ৪০ হাজার টাকা পাওয়ানা ছিল! ঘটনা পর থেকে সেই নয়ন আত্নগোপনে চলে যাওয়ার কারনে সন্দেহ তীর অনেকটা তার দিকে! তবুও পুলিশ পৃথক দুইটি ব্যবসায়ীক দ্বন্দ ঘটনাকে সামনে রেখে অগ্রসর হচ্ছে। এদিকে এই ঘটনায় উখিয়া থানা পুলিশ সন্দেহভাজন দুইজনকে আটক করে শনিবার আদালতে প্রেরন করেছে।
এরা হলেন- জসিমের ম্যানেজার জামাল উদ্দিন ও গোডাউনের অংশিদার নুরুল ইসলাম।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে উখিয়া উপজেলা হলদিয়াপালং ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের পশ্চিম মরিচ্যা এলাকার বাসিন্দা ছলিম উল্লাহর ছেলে জসিম উদ্দিন (৩৫) মরিচ্যাবাজারস্থ নাঈমা এন্টারপ্রাইজ নামীয় ডিলার ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিল। গত ১০ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১২টার দিকে সে মরিচ্যা বাজার এলাকা থেকে সে নিখোঁজ হন।
জসিম উদ্দিনের স্ত্রী জোসনা আকতার কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার স্বামীর সাথে কারো বিরোধ নেই। ঘটনার দিন রাত ১১টার দিকে স্বামীর সাথে ফোনে কথা হলে কিছু বাজার নিয়ে আসার জন্য বলি। পরে রাত সাড়ে ১২টার দিকেও বাড়ী না ফেরায় পুনরায় মোবাইলে চেস্টা করলে তার ব্যবহৃত ০১৮৮১২২৫৩২২ ফোন নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়। সারারাত না ফেরায় ভোর পৌনে ৫টার দিকে পরিবারের লোকজনসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে দেখি অফিস ও গোডাউনে তালা লাগানো ছিল।
- কে এই নয়ন?
অনুসন্ধানে জানা গেছে, উখিয়ার হলদিয়াপালংয়ের সাবেক রুমখা ক্লাসাপাড়া এলাকার বদি আলমের ছেলে মোহাম্মদ নয়ন(২৩)। নয়নের সাথে জসিমের ব্যবসায়ীক সম্পর্ক ছিল। জসিম হত্যার পর থেকে নয়নের খোঁজ মিলছেনা। আসলেই কি নয়ন, জসিম হত্যার সাথে জড়িত?
দেখা গেছে, ঘটনার পর থেকে নয়নের ফেইসবুক আইডি ডিএষ্টিভ করে রাখা হয়েছে। তার বাপের বাড়ি ক্লাসাপাড়া হলেও নয়নের বেড়ে উঠে পশ্চিম মরিচ্যায় নানা বাড়ি। সে বেশির ভাগ সময় নানার বাড়িতেই থাকেন বলে অনুসন্ধানে উঠে আসে। ক্লাসাপাড়া ও মরিচ্যা এলাকার একাধিক লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, জসিমের নিখোঁজের পর থেকে নয়নকে তার বাপের বাড়ি ও নানার বাড়ি এলাকায় কারো চোখে পড়েনি। যার কারনে স্থানীয়দের মাঝে আরও রহস্যের দানা বাধেঁ।
এই প্রতিবেদকের পক্ষ থেকে রবিবার রাতে নয়ন ও তার পরিবারের বক্তব্য নেয়ার জন্য যোগাযোগ করা হলে, একটি সূত্রে নয়নের ছোট ভাই রিফাতের নাম্বার প্রতিবেদকের হাতে আসে। রিফাতে নাম্বারে রাত ১০ টার দিকে যোগাযোগ করা হলে নয়নের নাম্বার দিচ্ছে বলে সময় ক্ষেপন করেন। দ্বিতীয় বার রিফাতে নাম্বারে পুনরায় যোগাযোগ করা হলে গাড়িতে আছে বলে মুঠোফোন কেটে দেন। এক পর্যায়ে রাত ১১ টা পর্যন্ত নাম্বার না পাওয়ায় নয়ন ও পরিবারের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
উখিয়া থানা উপপরিদর্শক (এসআই) মোঃ শাহীন উদ্দিন বলেন, জসিম হত্যায় জড়িত সন্দেহভাজন দুইজনকে আটক করে শনিবার আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-