কক্সবাজার সমুদ্র ছুঁয়ে রাতেও নামবে বিমান

বিশেষ প্রতিবেদক •

দেশের অন্যতম প্রধান পর্যটন নগরী কক্সবাজার। আকাশপথে কক্সবাজারে যেতে চাইলে দিনে গিয়ে দিনেই ফিরতে হবে। রাতে কোনো ফ্লাইট নেই। অবশেষে সেই অপেক্ষার অবসান হতে চলেছে। আর এক মাস পর রাতেও ফ্লাইট নামবে সাগরঘেঁষা রানওয়েতে।

জানা গেছে, কক্সবাজারে অবকাঠামো সংকটের কারণে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ফ্লাইট ওঠানামা করতে পারে। তবে সংকট আর থাকছে না ফেব্রুয়ারি থেকে। তখন রাতেও চালু রাখা যাবে বিমানবন্দর। এতে করে পর্যটকরা সারাদিন কক্সবাজার কাটিয়ে রাতের ফ্লাইটে ফিরতে পারবেন।

কক্সবাজার বিমানবন্দরের আধুনিকায়নের কাজ পরিদর্শন শেষে এসব তথ্য জানান জাতীয় সংসদের অনুমিত হিসাব সম্পর্কিত কমিটির সভাপতি আব্দুস শহীদের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল।

তিনি বলেন, কক্সবাজারের এই বিমানবন্দরকে ঘিরে তৈরি হবে আঞ্চলিক এভিয়েশন হাব। সমুদ্র ছুঁয়ে নামবে বিমান। এটি বাংলাদেশের এভিয়েশন খাতে মাইলফলক হয়ে থাকবে। বিমানবন্দরটি আন্তর্জাতিকমানে উন্নীত হলে স্থানীয়দের পাশাপাশি বিদেশি পর্যটক বাড়বে।

সিভিল এভিয়েশনের প্রকৌশলী মোশাররফ হোসেন বলেন, করোনার কারণে বিদেশি টেকনিক্যাল পরিদর্শকরা আসতে না পারায় রাতে ফ্লাইট চলাচল পিছিয়েছে। এই বিমানবন্দর দিনে-রাতে ফ্লাইট চলাচলের উপযোগী এখন। ফেব্রুয়ারিতেই রাতে ফ্লাইট চলাচল করবে।

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান বলেন, পুরোদমে কাজ চলছে। ইতোমধ্যে ৬৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। কোভিডের কারণে কিছুটা বাড়তি সময় লাগলেও, আশা করছি নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে পারব।

বেবিচক সূত্রে জানা গেছে, এ বিমানবন্দরটির রানওয়ে ৬ হাজার ৭৭৫ ফুট থেকে ৯ হাজার ফুট এবং প্রস্থ ১২০ থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ২০০ ফুট করা হয়েছিল ২০১৭ সালে। রানওয়েটির ১ হাজার ৩০০ ফুট থাকবে বাঁকখালী নদী ও বঙ্গপোসাগরের মোহনায়। এ জন্য দ্রুতগতিতে কাজ চলছে। মূলত নদীর বুক ছুঁয়েই বিমান ওঠানামা করবে এখানে। রানওয়ে রক্ষাকারী বাঁধের পর হবে রানওয়ের শোভাবর্ধন ও নির্দেশক বাতি স্থাপনের কাজ।

সংশ্লিষ্টরা জানান, বর্তমানে এয়ারফিল্ড গ্রাউন্ড, আলোক ব্যবস্থা স্থাপন প্রায় শেষের পথে। একসঙ্গে এক হাজার যাত্রীকে সেবা দিতে এক লাখ ১০ হাজার বর্গফুটের প্যাসেঞ্জার টার্মিনালের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। বোয়িং ৭৭৭- এর মতো বিমান অবতরণে উপযুক্ত অবকাঠামো নির্মাণে ব্যস্ত নির্মাণ শ্রমিকরা। এখানে ট্যাক্সিওয়ে উড়োজাহাজ পার্ক করা যাবে। থাকবে ভিআইপিদের জন্য বিশেষ সুবিধা।

প্রসঙ্গত, বিশ্বের দরবারে কক্সবাজারের পর্যটন সম্ভাবনাকে তুলে ধরতে ২০১৭ সালে সম্প্রসারিত এই রানওয়েতে বিমানের বোয়িং ৭৩৭ উড়োজাহাজ উড্ডয়ন ও অবতরণের মধ্য দিয়ে উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। ওই সময়ই রানওয়েটি বিশ্বমানে উন্নীত করার নির্দেশ দেন তিনি। তারই অংশ হিসেবে ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে কক্সবাজার বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণ প্রকল্প নেয় সরকার। এতে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৫৬৮ কোটি ৮৬ লাখ টাকা।

আরও খবর