কবর জিয়ারতের নিয়ম ও দোয়া

আখেরাতের চিন্তা মানুষের জীবনে পরিবর্তন আনে। নেক আমলের প্রতি হৃদয় উদ্দীপ্ত হয়। আখিরাতের স্মরণের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হলো কবর জিয়ারত। কবরের পাশ দিয়ে গেলে মৃত্যুর কথা স্মরণ হয়। গুনাহ ও অন্যায় থেকে তওবা করার মানসিকতা তৈরি হয়। অথচ, আমরা অনেকেই করব জিয়ারত করতে পারি না। এর নিয়ম ও দোয়া জানি না।

ইসলামের প্রথম দিকে কবর জিয়ারতের অনুমতি ছিল না। হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, আমি তোমাদের কবর জিয়ারতে নিষেধ করেছিলাম, এখন থেকে কবর জিয়ারত করো। কারণ, তা দুনিয়াবিমুখতা এনে দেয় এবং আখিরাতের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়, (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৫৭১)।

কবর জিয়ারতের দোয়া

রাসুলুল্লাহর (সা.)-এর চাচাত ভাই আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) মদিনার কবরবাসীর পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় এই দোয়া পাঠ করেন-

السَّلاَمُ عَلَيْكُمْ يَا أَهْلَ الْقُبُورِ يَغْفِرُ اللَّهُ لَنَا وَلَكُمْ أَنْتُمْ سَلَفُنَا وَنَحْنُ بِالأَثَرِ

উচ্চারণ : আসসালামু আলাইকুম ইয়া আহলাল কুবুর; ইয়াগফিরুল্লাহু লানা ওয়ালাকুম, আনতুম সালাফুনা ওয়া নাহনু বিল আ-সার।

অর্থ : হে কবরবাসী! তোমাদের ওপর শান্তি বর্ষিত হোক। আল্লাহ আমাদের ও তোমাদের ক্ষমা করুন, তোমরা আমাদের আগে কবরে গিয়েছ এবং আমরা পরে আসছি, (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ১০৫৩)।

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, একবার রাসুল (সা.) একটি কবর জিয়ারতে গিয়ে বলেন-

السَّلامُ عَلَيْكُمْ دَارَ قَوْمٍ مُؤمِنينَ وإِنَّا إِنْ شَاءَ اللَّهُ بِكُمْ لاحِقُونَ

উচ্চারণ : আসসালামু আলাইকুম দারা ক্বাওমিম মুমিনিন ওয়া ইন্না ইনশাআল্লাহু বিকুম লা-হিকুন।

অর্থ : মুমিন ঘরবাসীর ওপর শান্তি বর্ষিত হোক। ইনশাআল্লাহ, আমরা আপনাদের সঙ্গে মিলিত হব, (সহিহ মুসলিম : ২৪৯)।

কবর জিয়ারতের নিয়ম

কবরের কাছে যাওয়ার পর সর্বপ্রথম জিয়ারতের দোয়া পড়তে হবে। এরপর দুরুদ শরিফ ও বিভিন্ন সুরা পড়তে হবে। এরপর মৃতের বা কবরবাসীর মাগফিরাতের জন্য দোয়া করতে হবে।

হাদিসে কবর জিয়ারতের ক্ষেত্রে কিছু সুরার বিশেষ ফজিলতের কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি দুরুদ শরিফের ফজিলতের কথাও এসেছে। তাই দুরুদ শরিফ, সুরা ফাতিহা, সুরা ইখলাস, আয়াতুল কুরসি ও অন্য যেসব সুরা সহজ মনে হয়, সেগুলো পড়ে সওয়াব উপহার দিতে হবে।

কবর সামনে রেখে দুই হাত তুলে দোয়া করা উচিত না। তাই কবরকে পেছনে রেখে কিংবা কবরের দিকে পিঠ দিয়ে এরপর কিবলামুখী হয়ে দোয়া করতে হবে। আবার কেউ চাইলে হাত না তুলে মনে মনেও দোয়া করতে পারে, (ফাতাওয়ায়ে আলমগিরি খণ্ড ৫, পৃষ্ঠা ৩৫০, কিতাবুল কারাহিয়্যা)।

আরও খবর