পেকুয়া প্রতিনিধি •
নাজমা সোলতানা ববি (২২)। বাপের বাড়ি চকরিয়া উপজেলার বদরখালী ইউনিয়নে তিন নম্বারঘোনা মগনামাপাড়া গ্রামে। আইয়ান নামে চৌদ্দ মাস বয়সের ফুটফুটে এক শিশু ছেলে রয়েছে তার।
আড়াই বছর আগে তার বিয়ে হয় কক্সবাজার জেলার পেকুয়া উপজেলার বারবাকিয়া ইউনিয়নের ভারুয়াখালী গ্রামের আব্দু ছালামের ছেলে আবুল কাসেমের সাথে। স্বামী আবুল কাসেম ষোল মাস আগে স্বপ্নের দেশ মালয়েশিয়ায় পাড়ি দেন।
বুধবার (১৫সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে স্বামীর সাথে মুঠোফোনে ভিডিও কলে কথা বলতে বলতে গলায় ফাঁস দিয়ে নিজের শয়নকক্ষে আত্মহত্যা করে। ভারুয়াখালী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ ববির মরদেহ উদ্ধার করেছে।
কেন তিনি আত্মহত্যার পথ বেচে নিলেনঃ
বিয়ের আড়াই বছর সময় পেরিয়ে গেলেও এক বারের জন্যেই বাপের বাড়িতে যাওয়া হয়নি তার। যৌতুকের জন্য প্রতিনিয়ত চলতো তার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। বিয়ের কয়েকমাস সুখে কাটলেও যৌতুকলোভী স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন তাকে নিপীড়ন চালাতো।
ববির পিতার দাবীঃ
নিহতের পিতা ছৈয়দ মিয়া দাবী করেছেন, বিগত আড়াই বছর আগে তার মেয়ের সাথে কাশেমের বিয়ে হয়। বিয়ের পর আর বাপের বাড়ির মুখ দেখেনি। এক প্রকার গৃহবন্দী হিসাবে জীবন পার করেছে মেয়ে। যৌতুকের জন্য মারধর করা হতো। মেয়ের স্বামীর ভিসার জন্য এক লক্ষ টাকা যৌতুক দিয়েছি। এরপরেও ক্ষান্ত হয়নি। আমার মেয়েকে হত্যা করেছে শ্বশুর বাড়ির লোকজন। আমি মেয়ে হত্যার মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।
শ্বশুর বাড়ির লোকজন কোথায়ঃ
বৃহষ্পতিবার সকালে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়,বাড়িতে তালা ঝুলছে। গ্রেফতার আতংকে তারা গা ঢাকা দিয়েছে। তবে স্থানীয়রা জানিয়েছেন,স্বামীর সাথে অভিমান করে বাড়ির আড়ির সাথে গলায় রশি পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে। স্বামী আবুল কাসেম রাতে কল দিয়েছিল ববির মুঠোফোনে। এ সময় তিনি বাড়ির উঠানে অন্যদের সাথে গল্পগুজবে ছিল। যথা সময়ে রিসিভ না করায় দুইজনের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। কথা বলতে বলতে ববি রুমের দরজা বন্ধ করে আত্মহত্যা করে। পরে বাড়ির লোকজন এসে তার ঝুলন্ত লাশ দেখতে পায়।
পেকুয়া থানা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) কানন সরকার বলেন, মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়েছে।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-