অনুষ্ঠান বন্ধের নির্দেশ
ডেইলি কক্সবাজার •
পথশিশুদের গ্যাংস্টার হিসেবে দেখিয়ে জেলা প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই দেশী বিদেশী ফান্ডের লোভে কক্সবাজার সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে ১৩ ও ১৪ সেপ্টেম্বর দুই দিন ব্যাপী “ঋতুবতী: প্রাণের প্রবাহিনী” নামের একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে একটি চক্র।
কিন্তু সেই অনুষ্ঠানের প্রচার পত্রে প্রধান অতিথি হিসেবে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদের নামও ব্যবহার করেছে চক্রটি। বিষয়টি জানতে পেরে রবিবার রাতে দুদিন ব্যাপি সেই অনুষ্ঠান বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসক।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসন, সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও নানা সূত্র জানায়, কক্সবাজার জেলার বাইরে থেকে আগত নানা এনজিওতে কর্মরত নারী ও পুরুষ মিলে গড়ে উঠেছে একটি চক্র। সেই চক্রতে অভি কিম্বেল ও তার স্ত্রী লুসি তৃপ্তি গোমেজ জন মাহমুদ, রুবেল, পরান সহ ১০-১২ জন রয়েছে। এরা স্থানীয় পথ শিশুদের কিশোর গ্যাং উপাধি দিয়ে কৌশলে নানা ভিডিও চিত্র তৈরি করেছে। যেগুলো তারা নানা দাতা সংস্থাদের কাছে পাঠিয়েছে। সেসব ভিডিও নিয়ে সোম ও মঙ্গলবার তারা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
১৩ ও ১৪ সেপ্টেম্বর কক্সবাজার সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে ‘এডভোকেটিং ফর ক্লাইমেট জাস্টিস, প্রকৃতি ও পুরুষ-নারী এবং চিলড্রেন ওয়ার্কশপ অন ক্লাইমেট চেঞ্জ’ নামে গোল টেবিলের আয়োজন করেছ এই সিন্ডিকেট। যেখানে গোল টেবিলে আলোচনার পাশাপাশি অভি সিন্ডিকেটে শিশুদের নিয়ে করা তথ্য চিত্র এবং বিভিন্ন কার্যক্রম প্রদর্শিত হবে। মূলত দাতা সংস্থার কাছ থেকে মোটা অংকের ফান্ড নিতে এই গোল টেবিল বৈঠক। অনুষ্ঠান বাস্তবায়নে বিভিন্ন সংস্থার কাছ থেকে ফান্ড নেওয়ার খবরও রয়েছে। এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি কক্সবাজার জেলা প্রশাসক।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন বাপা’র সাধারন সম্পাদক করিম উল্লাহ বলেন, এরা প্রতারক চক্র। এরা পরিবেশ ও পথশিশুর নামে টাকা হাতানোর ধান্দায় নেমেছে। এদেরকে কখনো পথশিশুদের কিংবা পরিবেশ আন্দোলনে দেখিনি।
কক্সবাজার নাগরিক আন্দোলনের সদস্য সচিব এইচ এম নজরুল ইসলাম বলেন, এরা জেলার বাইরে থেকে এসেছে। এদের অধিকাংশই মাদকসেবী ও প্রতারক । এরা নিজ স্বার্থ হাসিলের জন্য জেলা প্রশাসকের নাম ভাঙ্গাতেও পিছপা হয়নি।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, যে পথশিশুদের নাম ভাঙ্গিয়ে তারা অর্থ উপার্জনের ফাদ পেতেছে তাদেরকেই নিয়মিত মারধর করে অভি সিন্ডিকেটটি।
এ বিষয়ে পথশিশুদের নিয়ে কাজ করে এমন একটি সংগঠন “ নতুন জীবন” এর সাধারন সম্পাদক সুমন শর্মা বলেন, ওই সিন্ডিকেটের অন্যতম সদস্য অভি কিম্বেল পথশিশু রায়হান ও আতিক কে কিশোর গ্যাং বলে মারধর করেছে বলে আমাদের কাছে অভিযোগ দিয়েছে পথশিশুরা।
আয়োজকদের একজন অভি কিম্বেলের কাছে এসব বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি আয়োজক নই। আমি অতিথি হিসেবে এসেছি। মূলত জনৈক রানা এর আয়োজক।
কক্সবাজার সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের পরিচালক মংক্যিন রাখাইন বলেন, জেলা প্রশাসকের নাম বাদ দিয়ে অনুষ্ঠান করার জন্য আমাকে মৌখিক ভাবে বলেছে জেলা প্রশাসনের পর্যটন সেলের নির্বাহি ম্যাজিষ্ট্রেট।
তবে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পর্যটন সেলের ম্যাজিষ্ট্রেট মুহাম্মদ সৈয়দ মুরাদ বলেন, এই অনুষ্ঠান আয়োজনের কোন অনুমতিই নেয়নি সংশ্লিষ্ঠরা।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, অনুমতি ছাড়া সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে একটি অনুষ্ঠানে আমাকে প্রধান অতিথি করার বিষয়টি জানতে পেরে অনুষ্ঠান বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছি।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-