ক্যাম্পে বিচ্ছিন্নভাবে রোহিঙ্গা ‘গণহত্যা’ দিবস পালিত

বিশেষ প্রতিবেদক •

মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গা ‘গণহত্যা’র চতুর্থ বার্ষিকী ছিল বুধবার। ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইন রাজ্যে দেশটির সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের ওপর নির্বিচারে হত্যা ও নির্যাতনের মুখে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশের কক্সবাজারে এসে আশ্রয় নেয়।

ওই দিনটি স্মরণে কক্সবাজারের উখিয়ায় কয়েকটি ক্যাম্পে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা ‘রোহিঙ্গা জেনোসাইড রিমেম্বার ডে’ পালন করেছে। সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকলেও দিবসটিকে কেন্দ্র করে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে ছাতা নিয়ে বিচ্ছিন্নভাবে ব্যানার, ফেস্টুনে দিবসটি পালনের ছবি ও ভিডিও করে নিজেরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেড়ে দিয়েছেন রোহিঙ্গারা। পাশাপাশি উখিয়া ক্যাম্পের কয়েকটি মসজিদ-মক্তবে দোয়া মাহফিলও করেছেন তারা।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিরপাত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত কপবাজার-১৬ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক (পুলিশ সুপার) তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘করোনার কারণে ক্যাম্পে ২৫ আগস্ট উপলক্ষে মিটিং-মিছিলসহ সব ধরনের সভা না করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কিছু ছবি এসেছে। বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখছি।’

২৫ আগস্টকে রোহিঙ্গাদের জন্য ‘কালোদিন’ আখ্যা দিয়ে আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস (এআরএসপিএইচ) নেতা সৈয়দ উল্লাহ বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে দিবসটি পালনে এ বছর কোনো আয়োজন করা হয়নি। তবে কিছু ক্যাম্পে রোহিঙ্গারা বিচ্ছিন্নভাবে দিবসটি পালন করেছে বলে খবর এসেছে।

একটি ভিডিওতে দেখা যায়, এক রোহিঙ্গা নারী বলছেন, ‘২৫ আগস্ট মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের গণহত্যা করেছে। এ দিন রোহিঙ্গাদের নিজ দেশ থেকে বিতাড়িত করেছে। ঘটনার চার বছর পেরিয়ে গেলেও বিশ্ববাসী আমাদের নির্যাতনের বিচার করতে পারেনি। বিশ্বের কাছে রোহিঙ্গা জেনোসাইডের বিচার চাই। আমরা সম্মান নিয়ে দ্রুত নিজ দেশে ফিরে যেতে চাই।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রোহিঙ্গা নেতা বলেন, ‘আমরা দিনটি পালানের জন্য ক্যাম্প ইনচার্জদের কাছে অনুমতি চেয়েও পাইনি। ফলে অনেকে ঘরে থেকে প্রতিবাদ জানিয়েছেন।’

টেকনাফ লেদা রোহিঙ্গা শিবিরের নেতা মোস্তফা কামাল বলেছেন, ‘২৫ আগস্ট মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের চার বছর পূতি উপলক্ষে যাতে ক্যাম্পে কোনো লোকজন জড়ো হয়ে মিছিলি, মিটিংয়ে অংশ না নেয়, তা আগে থেকে নিষেধ করা হয়েছে।’

করোনাকালে ক্যাম্পে কোনো ধরনের সভা-সমাবেশের সুযোগ নেই জানিয়ে কক্সবাজারের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার শাহ রেজওয়ান হায়াত বলেছেন, ক্যাম্পের পরিস্থিতি শান্ত রাখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।

আরও খবর