শ্যালিকার প্রেমে মজে স্ত্রীকে হত্যা, ১০ মাস পর মিলল কঙ্কাল

ডেস্ক রিপোর্ট •

ফাইল ছবি

বিয়ের পরই স্ত্রীর ছোট বোনের প্রতি কুনজর পড়ে দুলাভাইয়ের। ধীরে ধীরে সম্পর্কে জড়ান তারা। তবে বাধা হয়ে দাঁড়ান স্ত্রী। তাই স্ত্রীকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করেন স্বামী। গুম করে ফেলেন লাশও।

অবশেষে ১০ মাস পর চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। একই সঙ্গে স্ত্রীর কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনাটি ঢাকার কেরানীগঞ্জের।

বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টায় গ্রেফতার স্বামীর দেওয়া তথ্যমতে কেরানীগঞ্জের তেঘরিয়া ইউনিয়নের কদমপুর এলাকায় ভাড়া বাসার পাশের ডোবায় তল্লাশি চালায় পুলিশ। সেখানে মোহনার লাশের হাড়, মাথার খুলি, চুলের কিছু অংশ, ব্যবহৃত কাপড়সহ বেশ কিছু আলামত পাওয়া যায়। কঙ্কালের অংশ স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ বলেন, নিহতের স্বামী ইকবাল হোসেনের তথ্যমতে কেরানীগঞ্জ থানাধীন চরকদমপুর এলাকার একটি ডোবা থেকে ১৫ জুন সকালে কয়েক টুকরো হাড় উদ্ধার করা হয়। এরপর কয়েকদিন তল্লাশি চালিয়েও কোনো সুরাহা পাওয়া যায়নি। পরে ইকবালের দেওয়া তথ্য সন্দেহ মনে হলে পুনরায় আদালতের মাধ্যমে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এবার তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে লাশ গুমের স্থান দেখিয়ে দেন।

তিনি আরো বলেন, আগের উদ্ধার করা হাড় ও আজকের উদ্ধার করা কঙ্কাল একই জনের কি-না এবং কঙ্কালের পরিচয় নিশ্চিতে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য নমুনা সংরক্ষণ করা হয়েছে।

নিহত মোহনার মা রহিমা বেগম বলেন, আমার দুই মেয়ে মোহনা ও আরিফা। ২০১৬ সালের আগস্টে ইকবালে সঙ্গে আমার বড় মেয়ে মোহনার বিয়ে দেই। এরপর ছোট মেয়ে আরিফাকে মাদরাসায় ভর্তি করে দিয়ে জীবিকার তাগিদে আমি দেশের বাইরে চলে যাই। আমার ছোট মেয়ে আরিফা মাদরাসা ছুটিতে বড় বোনের বাড়িতে এলে বোন জামাই ইকবালের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। বড় মেয়ের সংসার বাঁচাতে আমি বিদেশ থেকেই ছোট মেয়েকে বিয়ে দিয়ে দেই। সেখান থেকেও একবার ছোট মেয়েকে ফুসলিয়ে বের করে নিয়ে আসেন ইকবাল। আত্মীয়-স্বজনের সহায়তায় বিষয়টি মীমাংসা করার চেষ্টা করা হয়।

তিনি আরো বলেন, এর মধ্যে গত বছর ২২ নভেম্বর জানতে পারি আমার বড় মেয়ে নিখোঁজ। ঘটনার সাত মাস পর দেশে ফিরে ১৪ জুন থানায় অভিযোগ করি। পরে কেরানীগঞ্জ মডেল থানার রামেরকান্দা এলাকা থেকে ইকবালকে আটক করে পুলিশ। একই সঙ্গে আমার বাড়ি থেকে ছোট মেয়ে আরিফাকেও আটক করে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কেরানীগঞ্জ সার্কেল) সাহাবুদ্দিন কবির বলেন, নিহতের স্বামী হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছেন। তবে তিনি লাশের ব্যাপারে বারবার ভুল তথ্য দিচ্ছিলেন। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের পর তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই ডোবা থেকে জাল টেনে কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়।

আরও খবর