গিয়াস উদ্দিন ভুলু,কক্সবাজার জার্নাল •
লাগাতার ভারি বর্ষণে ভুমিহীন অসহায় পরিবারদের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহার ৫০টি বসত ঘর এখন পানি বন্দি।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত কয়েক দিনের লাগাতার বৃষ্টিতে এই ঘর গুলোর মধ্যে পানি ঢুকে পড়েছে। এতে ঘরগুলোতে বসবাস করা গৃহহীন অসহায় মানুষ গুলো আশ্রয় নিয়েছে পাশ্ববর্তী গ্রামে আত্মীয় স্বজনের কাছে।
স্থানীয়দের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে জানা যায়,
নাফনদী সীমান্তের বেড়িবাঁধের সুইস গেট গুলো বন্ধ থাকার কারণে এবং ঘরগুলো বিলের মাঝখানে নিচু জায়গায় স্থাপন করায় বৃষ্টিতে পানিবন্ধি হয়েছে।
টেকনাফ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, মুজিববর্ষে ভূমিহীন-গৃহহীনদের জন্য এ উপজেলায় এ পর্যন্ত ৮০টি ঘর ভুমিহীনদের মাঝে বিতরন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের অর্থায়নে প্রতিটি ঘর নির্মাণে ব্যয় করা হয়েছে এক লাখ ৭১ হাজার টাকা। প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহার ৮০টি ঘরের মধ্যে টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের মৌলভীবাজার থেকে পূর্ব দিকে দেড় কিলোমিটার ভেতরে সীমান্ত সড়কের কাছাকাছি ২৮টি, একই ভাবে ওয়াব্রাংয়ের ২৮টি ঘর এখন পানি বন্ধি হয়ে গেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ঐ এলাকায় কিছু সুবিধাভোগী লোক বেড়িবাঁধের সুইস গেট বন্ধ রাখার কারণে আমরা সবাই পানিবন্দি হয়ে পড়েছি।
প্রধানমন্ত্রীর উপহার পাওয়া সৈয়দ আলম ওরফে লালু অভিযোগ করে বলেন, অত্র এলাকার স্থানীয় একটি চক্র সীমান্তের বেড়িবাঁধের সুইস গেইট বন্ধ রাখার কারনে আমরা পানিবন্দি হয়েছি। এই ঘরটি আমাদের একমাত্র সম্ভল। পানি নেমে গেলে আমরা সবাই আবার ঘরে ফিরে যাবো। যে দিন থেকে ঘর গুলোতে পানি ঢুকেছে সেই দিন থেকে চুলাও জ্বালাতে পারিনি।
স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে আরো বলেন, হ্নীলা ইউনিয়নের আবুল কালাম, মো. সাবের, সৈয়দুল আমিন ও হোসেন বলিসহ লবণ চাষিদের একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে সীমান্ত সড়কের বেড়িবাঁধের সুইস গেট বন্ধ রেখেছে। ফলে দুই দিনের টানা বৃষ্টিতে এলাকাটি পানিতে তলিয়ে গেছে। কয়েকজন অসাধু লবণ চাষির জন্য তাদের পুরো এলাকা পানির নিচে তলিয়ে গেছে। বর্তমানে অত্র এলাকার পাঁচ শতাধিক মানুষ এখন পানিবন্দি হয়ে দিন কাটাচ্ছেন। সেখানে খাবার পানিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের সংকট দেখা দিয়েছে।
হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী বলেন, ‘বেড়িবাঁধের সুইস গেটের অভাবে এলাকা পানির নিচে তলিয়ে গেছে। সেখানে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহারের ঘরও রয়েছে। তবে বৃষ্টি থেমে গেলে জমে থাকা পানি গুলো কমে আসবে।
প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরগুলো ইতোমধ্যে পরিদর্শন করেছেন উল্লেখ করে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পারভেজ চৌধুরী।
তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন ‘সীমান্ত সড়কে বেড়িবাঁধের সুইস গেটের যে সমস্যা সেটি সমাধানের কাজ চলছে। আর কারা সুইচ গেট গুলো বন্ধ রেখেছে সেই বিষয়টি খতিয়ে দেখে ঐ অসাধু ব্যাক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি প্রবল এই বর্ষণে যে সমস্থ পরিবার গুলো ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তাদেরকে আমরা জেলা প্রশাসনের নির্দেশনা মোতাবেক আর্থিক সহযোগীতা করে যাচ্ছি এবং এই সহযোগীতা অব্যাহত থাকবে।
এদিকে, টেকনাফ উপজেলায় গত ২০ বছরের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে গত তিন দিনের চলমান এই ভারী বর্ষণ।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-