বিশেষ প্রতিবেদক •
কক্সবাজার জেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা ১৭৫ এ দাঁড়িয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় করোনায় আরও ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এতে পুরো জেলায় করোনায় মৃতের সংখ্যা ২৭ রোহিঙ্গাসহ ১৭৫ জন। এদের মধ্যে ৮৩ জনই কক্সবাজার সদর ও পৌরসভার বাসিন্দা।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় রেকর্ড ৩১৫ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। আর সুস্থ হয়েছেন ১৪৬ জন।নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ৩৬ জন।
সোমবার কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাব ও সদর হাসপাতালের র্যাপিড এন্টিজেন টেস্টে তাদের করোনা শনাক্ত হয়।
বিকালে নিশ্চিত করে কক্সবাজার সিভিল সার্জন অফিস জানায়, গত এক দিনে করোনায় তিন জন মৃত্যূবরন করেন।
তারা হলেন, কক্সবাজার সদর উপজেলার পোকখালী ইউনিয়নের ক্যফে আহমদ (৭২),কক্সবাজার পৌরসভার পাহাড়তলীর রশিদা বেগম(৬০) ও এবং উখিয়া উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের উত্তর পুকুরিয়ার খুইল্যা মিঞা(৯৫)। এর মধ্যে ক্যফে আহমদ ও রশিদা বেগম গত ৫ ও ১৩ জুলাই করোনা পজিটিভ হয়ে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি হন এবং ২৫ জুলাই মৃত্যূবরণ করেন। আর খুইল্যা মিঞা মৃত্যূবরণ করেন নিজ বাড়িতে।
জেলা সিভিল সার্জন অফিস আরও জানায়, জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় ৮৬৬৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩১৫ জন। তন্মধ্যে সদর উপজেলা ও পৌরসভার ১২৩ জন, উখিয়া উপজেলায় ৫৭ জন,টেকনাফ উপজেলায় ৬১ জন,রামু উপজেলায় ২২ জন,পেকুয়া উপজেলায় ১৭ জন, মহেশখালি উপজেলায় ১৭ জন,চকরিয়া উপজেলায় ১১ জন,কুতুবদিয়া উপজেলায় ৭ জন।
এছাড়া জেলায় ২৪ ঘন্টায় ২৪৮টি র্যাপিড এন্টিজেন টেস্টে ৮৬ জন পজিটিভ হয়েছেন।এর মধ্যে সদরে ৪৪ জন,উখিয়ায় ৩ জন,টেকনাফে ১৩ জন,চকরিয়ায় ০ জন,রামুতে ১২ জন,পেকুয়ায় ৪ জন,মহেশখালিতে ৬ জন,কুতুবদিয়ায় ৪ জন এবং উখিয়া শরনার্থী শিবিরে ০ জন ও টেকনাফ শরনার্থী শিবিরে ০ জন ।
এ পর্যন্ত জেলায় ৫ হাজার ৪৩৩টি র্যাপিড এন্টিজেন টেস্টে করোনা পজিটিভ হয়েছেন ১ হাজার ৪০৮ জন।এর মধ্যে স্থানীয় ১ হাজার ৩৩৭ জন এবং রোহিঙ্গা ৭১ জন।
২৬ জুলাই ৮৬৬ জনসহ জেলায় এ পর্যন্ত করোনার পরীক্ষা করা হয়েছে ১ লাখ ৬৮ হাজার ৩৩৮ জনের।এর মধ্যে আক্রান্ত হয়েছে ১৬ হাজার ৫৯৮ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১৩ হাজার ৪৭৫ জন। প্রতিষ্ঠানিক আইশোলেসনে রয়েছেন ৫১৩ জন। মৃত্যূবরণ করেছেন ২৭ রোহিঙ্গাসহ ১৭৫ জন।
তার মধ্যে সদর ও পৌরসভার ৮৩ জন,উখিয়ায় ৩৮ জন,টেকনাফে ১৭ জন,চকরিয়ায় ১৯ জন,রামুতে ৭ জন,পেকুয়ায় ৫ জন,মহেশখালিতে ৩ জন এবং কুতুবদিয়ায় ৩ জন ।
২৪ ঘন্টায় কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের শরনার্থী শিবিরের ১৫৫টি টেস্টে পজিটিভ হয়েছে ২১ জন। শরনার্থী শিবিরে এ পর্যন্ত ৫২ হাজার ৬১৩ রোহিঙ্গার নমুনা পরীক্ষায় করোনাক্রান্ত‘র সংখ্যা ২ হাজার ৪৩৮ জন।এর মধ্যে উখিয়া শরনার্থী শিবিরে ২ হাজার ৮ জন এবং টেকনাফ শরনার্থী শিবিরে ৪২২ জন। সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৮৩ জন। আইসোলেশনে রয়েছেন ২৪৫ জন।মৃত্যূবরণ করেছেন ২৭ জন।
এদিকে জেলা প্রশাসন কক্সবাজার শহরসহ বিভিন্ন উপজেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় বিশেষ তৎপরতা চলালেও সংক্রমন কমার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। কোরবাণী ঈদের পর ২৪ জুলাই থেকে কঠোর লকডাউন বাস্তবায়নের পাশাপাশি করোনা রোগীরা যাতে সাধারণ মানুষের স্পর্শে আসতে না পারে ও মানুষ যাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে সে বিষয়ে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। তা সত্তেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছেনা।
তবে করোনার পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে রোগীর সংখ্যা কমানো তথা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের উপর জোর দিয়ে আরো বেশি করে গণসচেতনতা তৈরির উপর গুরুত্ব এবং লকডাউন অর্থবহ করতে জনপ্রশাসন ও পুলিশ প্রশসানকে আরো কঠোর ভূমিকা রাখার আহবান জানিয়েছে সচেতন মহল।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-