করোনাকালীন সময়ে মাঠে রয়েছে ‘উখিয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর’

নিজস্ব প্রতিবেদক •

ভয়াবহ করেনাভাইরাস আতঙ্কের ভয়াল থাবার মধ্যেও উৎপাদনের ধারা সচল ও কৃষককে দুঃচিন্তা মুক্ত রাখতে ছুটে চলেছে উখিয়া উপজেলা কৃষি বিভাগ।

কৃষিপ্রধান দেশে মাঠে মাঠে চলছে কর্মবীর কৃষকদের উৎপাদনের যুদ্ধ। তাই উখিয়া উপজেলায় সাবধানতা অবলম্বন করে কৃষি উৎপাদন যাতে ব্যাহত না হয়, কার্যক্রম থমকে না যায়, খাদ্যের যোগান অব্যাহত থাকে-তার জন্য করোনাকালীন সময়েও কৃষকদের দুর্ভোগ কমাতে তাদের এই প্রচেষ্টা বলে জানিয়েছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ প্রসেনজিৎ তালুকদার।

লকডাউনে দেশে সবকিছু থেমে গেলেও থেমে নেই কৃষকদের কাজ। আর এই সময়ে কৃষকের দরকার ঝুঁকি মোকাবেলায় পরামর্শ ও সেবা। সেই সেবা কৃষকের দ্বোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে তারই নির্দেশনায় কৃষি কর্মকর্তা-কর্মচারিরা নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। যার ফলে কৃষকের ফুটেছে হাসি।

মাঠপর্যায়ের সকল কর্মকর্তাদের কৃষকদের পাশে থেকে সাহস যোগানো, উপকরণ নির্বিঘ্নে হাতে পাবার ব্যবস্থা করছেন তিনি।

তিনি জানান, করোনা ভাইরাস সম্পর্কে কৃষকদের মাঝে সচেতনতার পাশাপাশি ব্রি ২৮, ৫৮, ৬৭,৭৪, ৮৮ ধানের জাতে রোগের সংক্রমণের আশংকা করা যায়। তাই ক্ষতিকারক ব্লাষ্ট, শিথ ব্লাইট, ব্যাকটেরিয়া পাতা পোড়া, পোকার সংক্রমণে বিপিএইচ ইত্যাদি রোগ থেকে যাতে ফসলকে সুরক্ষিত রাখতে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষেই কাজ করে যাচ্ছে উপজেলা কৃষি বিভাগ। অন্যদিকে জনবল সংকটে দায়িত্ব পালনে কষ্টসাধ্য হলেও কাজ করে যাচ্ছি আমরা।

স্থানীয় কৃষকরা জানিয়েছেন, বোরো ক্ষেতে নেক ব্লাস্ট রোগ ছড়িয়ে পড়লে মাঠের পর মাঠের ধানের পাতা পুড়ে যায়। পচন ধরে গাছের গোড়ায়। কচি ধানের শীষও মরে যায়।

পালংখালীর আশরাফ আলী বলেন, আমি ব্রি ধান ৭৪ চাষ করেছি, কিন্তু রোপণের মাসখানেক পর রোগের আক্রমণ দেখা দিলে কৃষি বিভাগের সহায়তায় পোকা দমন করা হয়।

রত্নাপালং কৃষক আলমগীর বলেন, করোনার ছোবলে দেশে এখন লকডাউন চলছে। এখন বলতে গেলে এটা আমাদের জন্য দুঃসময়। কিন্তু এইবার ধান চাষে কৃষি বিভাগের সহায়তা পেয়েছি বেশী। যার কারণে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বাম্পার ফলন হবে আশা করছি। এজন্য কৃষি বিভাগকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি।

উখিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ প্রসেনজিৎ তালুকদার বলেন, বর্তমান সরকার কৃষিবান্ধব সরকার। কৃষিখাতে উন্নয়নের জন্য সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন।

তিনি বলেন, কৃষকের ক্ষেতও যখন করোনার ঝুঁকিতে ঝুঁকিপূর্ণ, তাই নিজেরাই মাঠে মাঠে গিয়ে কৃষকদের দোরগোড়ায় গিয়ে কৃষিসেবা দিয়ে যাচ্ছি। কাজ করতে গিয়ে করোনার ঝুঁকি থাকলেও কৃষকদের কথা ভেবে মাঠ পর্যায়ে নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছি আমরা।

তিনি আরও বলেন,  দেশের এ ক্রান্তিলগ্নে ব্যতিক্রম কৃষি উৎপাদনের সাথে জড়িত মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তা-কর্মচারিগণ কোন বিশেষ প্রণোদনা বা প্রশংসা কুড়ানোর জন্য নয় বরং এ দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নৈতিক দায়িত্ব হিসেবে কৃষি ও কৃষককে ভালবেসে ক্ষুধার অন্য যোগাতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। মাঠে প্রান্তরে কাজের ব্যাপক বিস্তৃতি, স্মার্ট কৃষি বাস্তবায়নে ঝুঁকি নিয়েও অর্পিত দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে।

তাই আমরা কৃষকের সাথে আছি এবং কৃষকের দৌড়গোড়ায় সেবা দিতে কৃষি বিভাগের লোকজন সার্বক্ষণিক মাঠে কাজ করে যাবে।

আরও খবর