এম. বেদারুল আলম •
মুজিববর্ষে দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রনালয়ের আওতাধীন গ্রামীন অবকাঠামো সংস্কার (কাবিটা) কর্মসূচির বিশেষ বরাদ্দ দ্বারা গৃহহীনদের দূর্যোগ সহায়ক ৪০৪টি বাড়ি বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে। ২০২০-২০২১ অর্থবছরে সারাদেশের সাথে কক্সবাজারে অনুমোদিত ৪০৪টি বাড়ির জন্য ৭ কোটি ৬৭ লাখ ৬০ হাজার টাকা বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে। আগামি জুন মাসের মধ্যে উক্ত ৪০৪টি বাড়ি নির্মাণ শেষ করা হবে বলে জানিয়েছেন জেলা ত্রাণ ও পূণর্বাসন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম। ইতোমধ্যে বাড়ি নির্মানের কাজ যথাযতভাবে শেষ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন এ কর্মকর্তা। টিনের জন্য কাজের অগ্রগতি সাময়িক সমস্যা হলেও চ্ট্টগ্রাম থেকেই টিন এনে প্রকল্প শেষ করার কথা জানিয়েছেন নবাগত এ কর্মকর্তা।
জেলা ত্রাণ ও পূর্নবাসন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম জানান, ২ মাস আগে থেকে বাড়ি নির্মাণের কার্যক্রম শুরু হয়। ইতোমধ্যে কাজ ৫০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। ৮ উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাদের দ্রæত কাজ শেষ করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য লিখিত নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ সংক্রান্ত একটি অগ্রগতি প্রতিবেদন তৈরি করে উপজেলা থেকে ইউএনও’গণ পাঠালে প্রকৃত কতটুকু কাজ অসমাপ্ত আছে তার সঠিক তথ্য পাওয়া যাবে।
তিনি বলেন প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্প যেহেতু অসহায়দের সহায় হবে বাড়িসমুহ। প্রতিটি বাড়ির জন্য কাবিটা প্রকল্পের আদলে তদারকি কমিটি করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক, উপজেলা প্রশাসন, ইউনিয়ন কমিটির সার্বিক তত্বাবধানে ৪০৪টি বাড়ি নির্মান করা হচ্ছে ফলে অনিয়মের সুযোগ থাকবেনা।
জানা যায়, মুজিববর্ষে একাধিক মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে গৃহহীনদের জন্য নগদ টাকায় দূর্যোগ সহনীয় বাসগৃহ নির্মান করার উদ্যোগ নেয় সরকার। দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রনালয়ের আওতাধীন গ্রামীন অবকাঠামো সংস্কার (কাবিটা) কর্মসূচির বিশেষ বরাদ্দ দ্বারা গৃহহীনদের দূর্যোগ সহায়ক উক্ত ৪০৪টি বাড়ি নির্মাণ করা হচ্ছে।
এ প্রকল্পের নির্দেশিকায় উল্লেখ করা হয় যে সব দরিদ্র পরিবারের উচুঁ ভিটা আছে কিন্তু টেকসই ঘর নেই তাদের জন্য ৮শ বর্গফুট (প্রায় ২ শতাংশ জমি) বাড়ি, একটি রান্নাঘর, টয়লেট যেটি ২কক্ষ বিশিষ্ট সেমিপাকা টিনসেট ঘর হচ্ছে। এতে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ, সোলার প্যানেল এবং পাশে টয়লেট থাকছে যাতে রাতে মহিলা ও শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়।
জেলা প্রশাসনের ত্রাণ শাখায় মন্ত্রনালয় থেকে প্রেরিত বরাদ্দপত্র থেকে জানা যায়, প্রতিটি বাড়ি নির্মাণে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১ টাকা ৯০ হাজার টাকা। জেলার ৮ উপজেলায় ৪০৪টি বাড়ি নির্মাণের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৭ কোটি ৬৭ লাখ ৬০ হাজার টাকা। উপজেলা ভিত্তিক বাড়ি নির্মাণ ও বরাদ্দের পরিমান হল চকরিয়ায় ২০০টি বাড়ির জন্য ৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা, পেকুয়ায় ৯টির জন্য ১৭ লাখ ১০ হাজার টাকা, কুতুবদিয়ার ১৫টির জন্য ২৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা, কক্সবাজার সদরের ২২টি বাড়ির জন্য ৪১ লাখ ৮০ হাজার টাকা, মহেশখালীতে ১৩টি বাড়ির জন্য ২৪ লাখ ৭০ হাজার টাকা, রামুর ১০০ টি বাড়ির জন্য ১ কোটি ৯০লাখ টাকা, উখিয়ার ১৫টি বাড়ির জন্য ২৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও টেকনাফে ৩০টি বাড়ির জন্য ৫৭ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ি ২ শতাংশ পরিমান জমির মালিক, জমি পাওয়া সাপেক্ষে হিজড়া, বেদে, বাউল ,আদিবাসী, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠি, গৃহহীন অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা পরিবার, নদী ভাঙ্গন, প্রাকৃতিক দূর্যোগে গৃহহীন, বিধবা, তালাকপ্রাপ্ত , প্রতিবন্ধী এবং পরিবারে উপার্জনক্ষম লোক নেই এমন লোককে উক্ত বাড়ি দেওয়া হচ্ছে যা তালিকায় প্রতীয়মান রয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন সম্পন্ন হলে অনেক অসহায় পরিবার মাথাগোজার ঠাঁই পাবে।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-