নিজস্ব প্রতিবেদক •
উখিয়ার কুতুপালংয়ের পশ্চিম পাড়া ও লম্বাশিয়া গ্রামেই চলছে মরণনেশা ইয়াবার জমজমাট বাণিজ্য। ইয়াবার জমজমাট বাণিজ্য এ এলাকায় চললেও নেই কোন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারি।
গত কয়েক বছরের ব্যবধানে উক্ত গ্রামে গড়ে উঠেছে একের পর এক দালানকোঠা। প্রতিটি দালানেই রয়েছে রংবেরঙের আলোকসজ্জা। রাতের আলোতে প্রতিটি দালান হয়ে উঠে একেকটি রং-বেরংয়ের মহল। দিনের বেলায় নীরবতা। কিন্তু সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে সরগরম হয়ে উঠে কুতুপালং পশ্চিম পাড়া সড়ক। নামি দামি মোটরসাইকেলের বহর। বেশিরভাগ মোটরবাইক রং বেরংয়ের উক্ত মহলগুলো থেকেই বের হয়। সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত থাকে মোটর বাইকগুলোর ব্যাপক তৎপরতা। মোটর বাইকের শব্দে গ্রামবাসী অতিষ্ঠ হলেও প্রভাবশালী ইয়াবা কারবারিদের ভয়ে এলাকার কেউ মুখ খুলেনা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কুতুপালং গ্রামের বয়োবৃদ্ধ এক মুরুব্বী বলেন, উখিয়ার ব্যস্ততম গ্রাম হওয়ার সুবাদে গ্রাম দুটি প্রায় অপরাধমুক্ত ছিল, নিরাপদ ছিল গ্রামবাসী। কিন্তু গত দুয়েক বছরের ব্যবধানে রোহিঙ্গা আসার পর গ্রাম দুটিতে বেড়েছে অপরাধ, দুটি গ্রামের উঠতি বয়সী যুবকরা জড়িয়ে পড়েছে মরণনেশা ইয়াবা বানিজ্যে। প্রতিদিন রাতে মোটরসাইকেলের আওয়াজে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। এখানে প্রতিরাতে প্রায় অর্ধ শতাধিক মোটরসাইকেল ইয়াবা বহনে নিয়োজিত থাকে। কুতুপালং পশ্চিম পাড়া সড়কে দিয়ে লম্বাশিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে ইয়াবা এনে পাচারকারী সিন্ডিকেট উখিয়ার গ্রামীন সড়ক দিয়ে নিরাপদ ইয়াবা পাচার করে যাচ্ছে। ইদানিং উঠতি বয়সী বখাটে ইয়াবা সিন্ডিকেটের সাথে যুক্ত হয়েছে সদ্য জেল ফেরত আসা চিন্থিত ইয়াবা গডফাদাররা। ইয়াবা মামলায় দীর্ঘদিন তারা জেলে ছিল। জেল থেকে ফিরে ফের জড়িয়েছে ইয়াবা বানিজ্য। ফলে জমজমাট আকার ধারণ করেছে ঐ দুটি গ্রামের ইয়াবা কারবার। জেল ফেরত চিহ্নিত ওইসব ইয়াবা গডফাদারদের উখিয়া থানায় নতুন যোগদান করা পুলিশ সদস্যরা না চেনার সুযোগকে কাজে লাগচ্ছে তারা।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, দুই বছর পূর্বে উক্ত গ্রামের অনেকেরই “নুন আনতে পান্তা পুরাত”, কিন্তু ইয়াবার বদৌলতে তারা এখন এক্স নোহা ডাম্পার, সিএনজিসহ একাধিক গাড়ির মালিক,অল্প সময়ে তাদের হয়েছে দালানকোঠা।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা উখিয়া থানার ওসি আহাম্মদ সঞ্জুর মোর্শেদ বলেন,আমি যোগদান করার পর থেকে ইয়াবার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সচেতনতামুলক কার্যত্রুম চালিয়ে যাচ্ছি। এলাকার ওয়াজ মাহফিল সহ মসজিদ মাদ্রাসায় গিয়ে ইয়াবার বিরুদ্ধে জনগণকে সচেতন করার জন্য নিজেকে নিয়োজিত করেছি। জনবহুল স্টেশনগুলোতে সভা সেমিনার করে ইয়াবার বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখছে কারণ এলাকার জনগণ সচেতন না হলে ইয়াবা বন্ধ করা কঠিন। এলাকার প্রতিটি অভিভাবক কে কোথায় যায় এগুলো নজরদারি করতে হবে, তবে অপরাধ নিয়ন্ত্রণ সহজ হবে।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-