বিশেষ প্রতিবেদক •
কক্সবাজারের শরণার্থী শিবির থেকে চতুর্থ ধাপে (প্রথম অংশ) ভাসানচরের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছে রোহিঙ্গাদের ২১টি বাস।
রোববার বেলা ১২টায় উখিয়া ডিগ্রি কলেজের মাঠ থেকে চট্টগ্রামের পথে তাদের নিয়ে ২১টি বাস রওনা দিয়েছে। তার মধ্যে প্রায় হাজার খানেক রোহিঙ্গা রয়েছেন বলে জানা গেছে। আজ আরেকটি দল যাওয়ার কথা রয়েছে।
এর আগে, শুক্রবার ও শনিবার সকালে এই রোহিঙ্গাদের কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরগুলো থেকে বাসে করে আনা হয়।
জানা গেছে, উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে ভাসানচরে যাওয়ার উদ্দেশে শনিবার রাত থেকেই রোহিঙ্গারা সপরিবারে উখিয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠে আসতে থাকেন। রোববার সকালের মধ্যে সেখানে হাজারখানেক রোহিঙ্গাকে দেখা গেছে। তারা সকালে বাসে করে ভাসানচরের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন।
জানা গেছে, তাদের নাম নিবন্ধন চলছে। যাদের নিবন্ধন সম্পন্ন হচ্ছে তাদের মালপত্র ট্রাকে তুলে পরিবারের সদস্যদের বাসে ওঠানো হচ্ছে। প্রথম ধাপে ২১টি বাসে তাদের ওঠানো হয়। বাসগুলো চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে, আজ সন্ধ্যা বা রাতের মধ্যে বাসে ওঠা নিবন্ধিত রোহিঙ্গারা চট্টগ্রামের বিএন শাহীন কলেজের ট্রানিজট ক্যাম্পে পৌঁছাবেন। সেখানে চূড়ান্ত প্রক্রিয়া শেষে নৌবাহিনীর ব্যবস্থাপনায় সোমবার তাদের জাহাজে তোলা হবে। ১৫ ফেব্রুয়ারি তারা ভাসানচরে পৌঁছাবেন।
এ বিষয়ে ভাসানচর প্রকল্পের (আশ্রয়ণ প্রকল্প-৩) উপ-প্রকল্পের পরিচালক কমান্ডার এম আনোয়ারুল কবির জানান, চতুর্থ ধাপে (প্রথম অংশ) হাজারখানেক রোহিঙ্গা ভাসানচরের উদ্দেশে উখিয়া থেকে চট্টগ্রামে রওনা দিয়েছেন। এবার ৩-৪ হাজার রোহিঙ্গা ভাসানচরে স্বেচ্ছায় আসতে রাজি হয়েছেন।
এর আগে, গত ৪ ডিসেম্বর প্রথম ধাপে ১ হাজার ৬৪২ জন রোহিঙ্গা ভাসানচরে পৌঁছান। সর্বশেষ গত ২৯ জানুয়ারি সকালে ১ হাজার ৭৭৮ রোহিঙ্গা নতুন করে ভাসানচরে পৌঁছান। এ ছাড়া অবৈধভাবে সাগরপথে মালয়েশিয়া যেতে ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসা ৩০৬ জন রোহিঙ্গাকে গত মে মাসে ভাসানচরে নিয়ে যায় সরকার, তারাও সেখানে রয়েছেন।
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হত্যা ও নির্যাতনের মুখে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন সাড়ে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা। আগে আশ্রয় নেওয়াসহ বর্তমানে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা কক্সবাজারের শিবিরগুলোতে বাস করছেন।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, রোহিঙ্গা স্থানান্তরের জন্য নিজস্ব তহবিল থেকে ৩ হাজার ৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে সরকার। সেখানে এক লাখ রোহিঙ্গা বসবাসের উপযোগী ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। ভাসানচরের পুরো আবাসন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-