এম.এ আজিজ রাসেল •
কক্সবাজারে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ১৭ লক্ষ ৭৫ হাজার ইয়াবা ও নগদ ১ কোটি ৭০ লাখ ৬৩ হাজার টাকাসহ ৫ জন মাদক পাচারকারীকে আটক করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৯ ফেব্রুয়ারি) কক্সবাজার জেলা পুলিশ দিনব্যাপী এই অভিযান চালায়।
পুলিশের তথ্যমতে, মঙ্গলবার দুপুরে কক্সবাজার সদরের চৌফলদন্ডী ব্রীজের কাছাকাছি একটি ফ্রিশিং ট্রলার থেকে সাত বস্তা ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। সেখানে ইয়াবার পরিমাণ ছিল ১৪ লক্ষ পিস। এসময় আটক করা হয় মাদক পাচারকারী চক্রের ৪ সদস্যকেও।
আটকরা হলেন, কক্সবাজার পৌরসভার উত্তর নুনিয়ার ছড়া মো. নজরুল ইসলামের পুত্র মো. জহিরুল ইসলাম ফারুক (৩৭), একই এলাকার মো. মোজ্জাফরের পুত্র মো. নুরুল ইসলাম বাবু (৫৫), ফারুকের শাশুড় আবুল হোসেনের পুত্র আবুল কালাম (৫৫) ও আবুল কালামের পুত্র শেখ আবদুল্লাহ (২০)।
অভিযানে নেতৃত্বদেন জেলা পুলিশ সুপার মোঃ হাসানুজ্জামান। এছাড়া আটককৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করে বিকেল ৫টায় ইয়াবা পাচারের মূলহোতা শহরের নুনিয়ারছড়ার ফারুকের বাড়ি থেকে দুই বস্তা নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়। সেখানে টাকার পরিমাণ ছিল ১ কোটি ৭০ লাখ ৬৩ হাজার টাকা। জেলা পুলিশের মতে, পুলিশের অভিযানে ইয়াবার বৃহৎ চালান আটকের ঘটনা এটি।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মোঃ হাসানুজ্জামান পিপিএম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে ডিবি পুলিশকে সাথে নিয়ে পৃথক কয়েকটি টিম করে এই অভিযান চালানো হয়। অভিযানে একটি ফিশিং ট্রলার থেকে ইয়াবা ভর্তি সাতটি বস্তা উদ্ধার করা হয়। প্রতিটি বস্তায় ২৫ থেকে ৩০ কাট ইয়াবা পাওয়া গেছে। যার পরিমাণ ১৪ লক্ষ পিস।
আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, আটককৃতরা মিয়ানমার থেকে বিশাল একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এই মরণ নেশা ইয়াবা এদেশে নিয়ে আসছিল। পরে তাদেরকে পুলিশি হেফাজতে রেখে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। একপর্যায়ে ইয়াবা পাচারের মূলহুতা ইয়াবা গডফাদার জহিরুল ইসলাম ফারুক তার বাসায় ইয়াবা বিক্রির বিশাল অংকের টাকা মজুদ রাখার তথ্য প্রকাশ করে। তার তথ্যের ভিত্তিত্বে পূণরায় অভিযান চালিয়ে নগদ ১ কোটি ৭০ লাখ ৬৩ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। পরে সন্ধ্যা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত আটক ফারুকের চাচা শ্বশড় ছৈয়দ আলমের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে আরো ৩ লক্ষ ৭৫ হাজার ইয়াবাসহ ছৈয়দ আলমের স্ত্রী ছমিরা আটক করে জেলা পুলিশ।
পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান জানান, এটি একটি মাদক পাচারের বিশাল সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেটটি দীর্ঘদিন ধরে মাদক পাচারের সাথে জড়িত থাকলেও আইনের আওতায় আসেনি।
সর্বশেষ মঙ্গলবার (৯ ফেব্রুয়ারি) দুই জনকে আটক করা হয়। পাশাপাশি তাদের সিন্ডিকেটে আর কারা আছে তা সনাক্তের কাজ চলছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হবে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোঃ রফিকুল ইসলাম জানান, সোমবার রাত থেকে গোপন সংবাদে খবর পেয়ে ইয়াবা পাচারকারী চক্রটিকে আটকের জন্য অভিযানে নামে পুলিশ। পুলিশের সুপারসহ সিনিয়র কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে কয়েক ভাগে বিভক্ত হয়ে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসময় সদর উপজেলার চৌফলদন্ডী নদীর তীর থেকে এসপির নেতৃত্বে থাকা টিমটি এই বিশাল ইয়াবার চালান আটক করতে সক্ষম হয়। পরে আটককৃত ফারুকের তথ্যমতে তার বাড়ি থেকে নগদ এক কোটি ৭০ লাখ ৬৩ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
তিনি আরো জানান, এই ইয়াবা সিন্ডিকেটে যারা জড়িত রয়েছে তাদের সকলের বিরুদ্ধে কঠোরভাবে ব্যবস্থা নেয়া হবে। পাশাপাশি অভিযান শেষে তাদের বিরুদ্ধে পৃথক মাদক আইনে মামলা রেকর্ড পূর্বক আদালতে পাঠানো হবে।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-