ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে ৬ সিদ্ধান্ত

অনলাইন ডেস্ক •

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুর রূপরেখা তৈরির জন্য বাংলাদেশ-মিয়ানমার-চীন ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে ছয়টি সিদ্ধান্ত হয়েছে।

মঙ্গলবার বিকেলে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে সচিব পর্যায়ের এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে পরারাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি সতর্ক আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, এ বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হবে।

বৈঠকে নেওয়া ছয়টি সিদ্ধান্তের বিষয়ে তিনি জানান, ১. আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশ-মিয়ানমার-চীন ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ২. এরপরে এই তিন দেশের সচিব পর্যায়ের বৈঠক হবে। ৩. আর এ বছর মার্চ মাস নাগাদ হবে তিন দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক। ৪. এসব বৈঠকের পর আবারও মিয়ানমার প্রতিনিধিদল আসবে বাংলাদেশে, তাদের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হবে। ৫. এরপর বাংলাদেশের প্রস্তাব অনুযায়ী, গ্রাম বা অঞ্চলভিত্তিক ভাগ করে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুর কথা রয়েছে। তবে মিয়ানমার বলছে, যে ৪২ হাজার রোহিঙ্গা তারা চিহ্নিত করেছেন, তাদের দিয়ে প্রত্যাবসান কার্যক্রম শুরু করা হবে। আগামী বৈঠকগুলোতে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। ৬. আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে- বিশেষ করে প্রতিবেশী দেশগুলোকে প্রত্যাবাসন কার্যক্রমে জোরালোভাবে সম্পৃক্ত করা হবে।

এর আগে ২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি সর্বশেষ ত্রিপক্ষীয় বৈঠক হয়েছিল। সেই বৈঠকের পর রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে দৃশ্যত কোনো অর্জন হয়নি। বিশেষ করে করোনাভাইরাস মহামারির কারণে গত বছর রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন কূটনীতিতে প্রকৃতপক্ষে কোনো অগ্রগতিই হয়নি।

আগের ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া ও মিয়ানমারের রাখাইনে উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। সে সময় মিয়ানমার কথা দিয়েছিল, তারা দ্রুত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন উপযোগী পরিবেশ নিশ্চিত করবে। কিন্তু বাস্তবে সেই নিশ্চয়তার প্রতিফলন খুব কমই দেখা গেছে। এর আগে অন্যান্য পর্যায়ের আলোচনাতেও প্রত্যাবাসন বিষয়ে মিয়ানমার যত কথা দিয়েছে, তার প্রায় কোনোটিই পালন করেনি। তবে পরিস্থিতি এখন অনেকটা বদলেছে।

সূত্র জানায়, সাম্প্রতিক সময়ে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিয়ানমার সফরকালে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে বেইজিংয়ের মনোভাবের বড় পরিবর্তনের কথা জানিয়ে গেছেন। সফরের সময় মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানিয়েছে, তারা প্রত্যাবাসন দ্রুত শুরুতে আগ্রহী। ফলে মিয়ানমারের ওপর সাম্প্রতিক সময়ে শুধু আন্তর্জাতিক চাপ নয়, বিশেষভাবে চীনের চাপও বেড়েছে। চীনের চাপ বাড়ানোর আরও বড় কারণ হচ্ছে রোহিঙ্গা সংকট ইস্যু নিয়ে বেইজিংও আন্তর্জাতিক মহলে ‘ভাবমূর্তি’ সংকটে পড়েছে।

আরও খবর