শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা শুরু শুক্রবার, বৌদ্ধ পল্লীতে উৎসবের আমেজ

নিজস্ব প্রতিবেদক


দুই দিনব্যাপী বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা শুরু হচ্ছে শুক্রবার। এ উপলক্ষ্যে বৌদ্ধ পল্লীর ঘরে ঘরে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। বিহারগুলো সেজেছে নব রূপে। বর্ণিল আলোকসজ্জায় আলোকিত করা হয়েছে সর্বত্র।

অনুষ্ঠানে নিজেকে রাঙিয়ে তুলতে চলছে কেনাকাটা। শনিবার পর্যন্ত বিহারগুলোতে ধর্মীয় প্রার্থনা, ফানুস ওড়ানো, হাজারো প্রদীপ প্রজ্জ্বলন, পিঠা উৎসব, অতিথি আপ্যায়নসহ বিভিন্ন আয়োজন থাকবে।

বিকাল থেকে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সকলেই নতুন পোশাক ও উন্নতমানের খাবার নিয়ে বিহারে গমন করবেন। সেখানে সুখ-শান্তি ও মহামারি করোনা ভাইরাস থেকে মুক্তি কামনায় প্রার্থনা করবেন সবাই।

বৃহস্পতিবার বিকালে শহরের পিটাকেট, মোহাজের পাড়া বৌদ্ধ বিহার, জাদিরাং বিহার ও কেন্দ্রীয় মাহাসাংদোগ্রী মন্দিরে গিয়ে দেখা যায়, রাখাইন সামাজিক ও ধর্মীয় সংগঠনগুলো নজরকাড়া প্রায় ৫০টি নান্দনিক প্যান্ডেল তৈরি করেছে। গত এক সপ্তাহ ধরে ওইসব প্যান্ডেল তৈরি করা হচ্ছে। বর্তমানে জমকালোভাবে সেজেছে প্রতিটি প্যান্ডেল।

তবে প্যান্ডেল তৈরিতে ব্যস্ত ছাত্র-যুবকরা হতাশার সাথে বলেন, একটি প্যান্ডেলে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা খরচ হয়। এসব খরচ নিজেদের থেকে বহন করতে হয়। জেলা প্রশাসন বা পৌরসভা থেকে কোন সহযোগিতা পাওয়া যায়নি। তারা শুধু বিহার গুলোকে অনুদান দিয়ে থাকে। কিন্তু মূলত প্রবারণা পূর্ণিমা উদযাপন করে থাকে ছাত্র-যুবকেরা। তারা এব্যাপারে জেলা প্রশাসক ও পৌর মেয়রের সুনজর কামনা করেছেন।

এবার মাহাসিংদোগ্রী মন্দিরে প্যান্ডেল সাজিয়েছে আরডিএফ, কক্সবাজার সিটি কলেজ বৌদ্ধ ছাত্র পরিষদ, সিটি বয়েজ, রাখাইন একতা সংঘ, বাংলাদেশ রাখাইন স্টুডেন্ট কাউন্সিল, ফ্রি স্টাইল রিলেশনশীপ, রাজধানী ফ্রেন্ডস সার্কেল, রাখাইন যুব ইউনিটি, হ্যাংগিং গার্ডেন, কে,আর ভিক্টোরিয়া, মাছবাজার রাখাইন যুব পরিষদ, রাখাইন তরুণ সংঘ ও বৌদ্ধ মৈত্রি পরিষদ। এছাড়া শহরের মোহাজের পাড়া, বাজার ঘাটা, বৈদ্যঘোনা ও জাদিরাম বৌদ্ধ বিহার, মহেশখালী, উখিয়া, চকরিয়া, রামু, পেকুয়া, টেকনাফ ও নাইক্ষ্যংছড়িতেও নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে এ উৎসব পালন করা হবে। আগামী ০১ নভেম্বর কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত ও রামু বাঁকখালী নদীতে জাহাজ ভাসার মধ্য দিয়ে এই উৎসবের সমাপনী হবে।

সিটি কলেজের অধ্যক্ষ ক্যথিং অং ও রামু কেন্দ্রীয় সীমা বিহারের উপাধ্যক্ষ প্রজ্ঞানন্দ ভিক্ষু জানান, সিদ্ধার্থ যখন বুদ্ধিসত্ত রূপে শ্রাবন্তী নগর থেকে গৃহত্যাগ করেন। তখন অনুমাদ্ধর্শী নদী তীরে অবস্থান কালে অধিষ্ঠান করে নিজ চুলকে কর্তন করে উপরে দিকে নিক্ষেপ করেন। সে চুল গুচ্ছ মহাতাবতিংস স¦র্গের প্যাগোডা হিসেবে স্থির আছে। তাই চুলামনি নামে প্যাগোডা উদ্দেশ্যেই পূঁজা এবং প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করতে ফানুস উড়ানো হয় বলে জানা গেছে। তথাগত ভগবান বুদ্ধের আড়াই হাজার বছর পূর্বে সময়ের তাবতিংসা স্বর্গের তিন মাস বর্ষাবাস করে কার্ত্তিকী পূর্ণিমাকে ঘিরে মানবকুলের মহাপৃথিবীতে অবতরণ করেন।

আরও খবর