অনলাইন ডেস্ক •
বাংলাদেশে এ বছর খুলছে না স্কুল, পরবর্তী ক্লাশে উত্তীর্ণ হবার জন্য অ্যাসাইনমেন্টভিত্তিক মূল্যায়ন হবে শিক্ষার্থীদের।
এজন্য এক মাসের জন্য একটি সংক্ষিপ্ত সিলেবাস প্রণয়ন করে তার ওপর হবে এই মূল্যায়ন।
শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি আজ (বুধবার) এক সংবাদ সম্মেলন করে একথা জানিয়েছন।।
তিনি বলেছেন, স্কুল কর্তৃপক্ষ অনলাইনে শিক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট পাঠিয়ে দেবেন, এবং এরপর অনলাইনে কিংবা সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে স্কুলে গিয়েও উত্তর জমা দেয়া যাবে।
শিক্ষামন্ত্রী এও বলছেন, বছর শেষে পরবর্তী ক্লাসে উত্তীর্ণ হওয়ার ক্ষেত্রে এই অ্যাসাইনমেন্টের উত্তরপত্রের মূল্যায়ন কোন প্রভাব ফেলবে না।
পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত মাধ্যমিক পর্যায়ে এভাবেই শিক্ষা কার্যক্রম চলবে বলে জানিয়েছেন দীপু মনি।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সরকার সবার আগে যে পদক্ষেপ নিয়েছিল সেটি হচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা।
এ কারণে গত ১৭ই মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে, এবং অক্টোবরের ৩১ তারিখ পর্যন্ত সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটি বাড়িয়েছে সরকার।
এর আগে করোনাভাইরাস মহামারির কারণে পঞ্চম শ্রেণির প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা পিইসি, অষ্টম শ্রেণির জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা এবং সর্বশেষ এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে।
ইতিমধ্যে প্রাক-প্রাথমিক থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত নিজ নিজ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের ভিত্তিতে পরবর্তী শ্রেণীতে প্রমোশন দিতে বলেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
সিলেবাসে কী থাকবে
শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, ৩০ কর্মদিবসে শেষ করা যায় এমন একটি সিলেবাস প্রণয়ন করা হয়েছে প্রতিটি শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জন্য।
এটি মূলত হবে প্রতিটি ক্লাসে পুরো বছরের জন্য যে সিলেবাস তৈরি করা হয়, তার একটি সংক্ষিপ্ত সংস্করণ।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে এই সিলেবাস দেয়া হবে। একই সঙ্গে সব স্কুল প্রধানদের কাছেও তা পৌঁছে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন দীপু মনি।
মূল্যায়ন কীভাবে হবে
ওই সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের ওপর ভিত্তি করে চার সপ্তাহে চারটি অ্যাসাইনমেন্ট প্রদান করা হবে, এবং তার উত্তর সংগ্রহ করা হবে।
এক্ষেত্রে অ্যাসাইনমেন্ট প্রদান করা হবে অনলাইনে, এবং উত্তর অনলাইনে জমা দেয়া যাবে।
একই সাথে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে স্কুলে গিয়েও অ্যাসাইনমেন্ট জমা দিতে পারবেন।
এবং একটি অ্যাসাইনমেন্ট জমা দেবার পর পরবর্তী অ্যাসাইনমেন্ট সংগ্রহ করা যাবে।
এই সময়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ অন্য কোন পরীক্ষা বা ক্লাসওয়ার্ক প্রদান বা জমা নিতে পারবে না।
এরপর চারটি অ্যাসাইনমেন্ট জমা দেয়ার পর একটি মূল্যায়ন করবে কর্তৃপক্ষ।
তবে এই মূল্যায়ন পরবর্তী ক্লাসে উত্তীর্ণ হওয়ার ক্ষেত্রে কোন প্রভাব ফেলবে না। মূল্যায়ন যেন ‘শিক্ষার্থীদের ওপর চাপ সৃষ্টি’ না করে সে বিষয়টি সম্পর্কে কর্তৃপক্ষ সচেতন থাকবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।
“এটি (মূল্যায়ন) কেবল আমাদের (কর্তৃপক্ষের) বোঝার জন্য যে শিক্ষার্থীর কোন বিষয়ে দুর্বলতা আছে, যাতে পরবর্তী বছরে সে বিষয়ে বাড়তি নজর দেয়া যায়, যত্ন নেয়া যায়, সেজন্য।”
পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এভাবেই মাধ্যমিকের পাঠ কার্যক্রম চলবে।
স্কুল খুলবে কবে ?
স্কুল কবে খুলবে সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোন ঘোষণা দেননি শিক্ষামন্ত্রী।
তবে মূল্যায়ন পদ্ধতির মাধ্যমে পরবর্তী শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হওয়ার ঘোষণা আসায় ধরে নেয়া হচ্ছে এ বছর স্কুল খুলছে না।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-