বিশেষ প্রতিবেদক •
টেকনাফের দমদমিয়া বিজিবি’র চৌকিতে এক নারী এনজিও কর্মীকে তল্লাশীকে কেন্দ্র করে ধৃম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে। ইতিমধ্যে একটি গণমাধ্যমে ওই নারী এনজিও কর্মী ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে সংবাদ প্রচার হলেও চিকিৎসক, বিজিবি কর্মকর্তার সাথে আলাপ করে ভিন্ন তথ্য পাওয়া গেছে। ভিন্ন কথা বলেছেন, ওই নারীকে বহনকারি গাড়ির চালক ও ওই নারীর অবস্থান নেয়া ভাড়া বাসায় মালিকও। এব্যাপারে ওই সংস্থার কোন কর্মকর্তা কথা বলতে রাজী হননি। কথা বলা সম্ভব হয়নি ওই এনজিও কর্মীর সাথে।
একাধিক সূত্র পাওয়া তথ্য মতে, কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়কের টেকনাফ উপজেলার হ্নীলার দমদমিয়া বিজিবি তল্লাশী চৌকিতে গত বৃহস্পতিবার (৮অক্টোবর) সকালে আইন সহায়তা সংস্থা বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড এন্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) হ্নীলা শাখায় কর্মরত নারীকে তল্লাশী করেন। তিনি সিএনজি চালিত অটোরিক্সা নিয়ে টেকনাফের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন।
ওই গাড়িটির চালক আবদুল আমিন জানান, এনজিও কর্মীসহ পাঁচজনকে নিয়ে তিনি টেকনাফ যাওয়ার পথে দমদমিয়া চেকপোস্টে যথানিয়মে তাকে তল্লাশী করে বিজিবির নারী সদস্যরা। পাঁচজন যাত্রীর মধ্যে দুইজন ছিলেন নারী এবং তিনজন পুরুষ।
কিন্তু শুক্রবার সকালে ওই নারী কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন। শনিবার রাতে ওই নারী চিকিৎসা শেষে হাসপাতাল ছাড়েন। এর মধ্যে রোববার একটি গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে ওই নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। কিন্তু ওই নারী ফোন বন্ধ থাকায় কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। ব্লাস্টের কক্সবাজারের সমন্বয়কারী তুষার রায়ও এ বিষয়ে মিডিয়ার সাথে কোন কথা বলতে রাজী নন। অপর কর্মকর্তা মানিক বিশ্বাস ফোন রিসিভ করেননি।
কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডাঃ শাহীন আবদুর রহমান চৌধুরী বলেন, গত শুক্রবার সকালে ৩০ বছর বয়সী এক এনজিও কর্মী হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আসেন। তার সাথে কথা বলার পর তাকে হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি করা হয়। ওই নারী চিকিৎসকদের যে তথ্য দিয়েছেন তাতে মনে হচ্ছে তাকে শ্লীলতাহানি করা হয়েছে। তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। এরপর তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়। তার দেওয়া বক্তব্যগুলো নিয়মানুযায়ী লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। তার ডিএনএ সহ অন্যান্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। সেগুলো ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। পরীক্ষার রির্পোট পেলে বিস্তারিত বলা যাবে। রিপোর্ট পেতে সাধারণত ২ থেকে ৭ সপ্তাহ সময় লাগে। ভিকটিম মামলা করলে আদালতের চাহিদা মতো প্রাপ্ত রিপোর্টগুলো আদালতকে দেওয়া হবে। ভিকটিম শনিবার হাসপাতাল ছেড়ে যায়।
ঘটনার বিষয়ে টেকনাফস্থ বিজিবি ব্যাটালিয়ানের-২ এর অধিনায়ক লে: কর্ণেল মোহামমদ ফয়সল হাসান খান বলেন, ভিকটিম বিজিবির কাছে এখনও কোন অভিযোগ করেননি। তিনি ধর্ষণের যে দাবীটি করেছেন তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানেয়াট। তার দাবী যে সত্য নয় তার স্বপক্ষে যথেষ্ট তথ্য প্রমাণ বিজিবির কাছে রয়েছে। বিজিবি চেকপোষ্টে বিজিবি সদস্যদের তল্লাশীসহ দায়িত্ব পালনের ভিডিও ফুটেজ ধারণ করা হয়। অন্যান্য নারীদের যেভাবে তল্লাশী করা হয় ঠিক একইভাবে তাকে ও তল্লাশী করেন নারী বিজিবি সদস্যরা।
ব্লাস্টের এ কর্মী হ্নীলার সাবেক ইউ মেম্বার জাফর আলমের ভাড়া দেওয়া একটি কক্ষে একা থাকতেন বলে জানান জাফর আলম। তিনি বলেন, ফারজানা গত ২ অক্টোবর এ বাসায় ওঠেন। বাসাটি ছিল তার থাকার এবং অফিস। গত বৃহস্পতিবার রাতে ফারহানা তাকে ঘটনার বিষয়টি জানান। তবে ধর্ষণের কথা তাকে বলেনি।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-