সাইফুল ইসলাম,কক্সবাজার জার্নাল •

নানা অব্যবস্থাপনায় কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের ওয়ার্ডের ভিতরের মেঝেতেও জায়গা না পেয়ে অবশেষে রোগীর ঠাঁই মিললো বারান্দায়। এতে চলাচলে চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
বিশেষ করে হাসপাতালের ৪র্থ ও ৫ম তলায় রোগীর সংখ্যা বাড়তি। এ দু’তলার বেশির ভাগ রোগিই হচ্ছে সড়ক দূর্ঘটন ও মারামারি সংক্রান্ত আহত ব্যক্তি। অভিযোগ উঠেছে এখন হাসপাতালে আগে মতো তেমন নিয়মনীতির কোন তোয়াক্কা করছে নার্সরা। প্রতিনিয়তেই রোগি ও স্বজনেরা দূর্ব্যবহারের শিকার হচ্ছে। এছাড়াও হাসপাতালে সিটের চাইতে রোগির সংখ্যা ২/৩ গুন বেড়েছে। ফলে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে রোগীরা।
ধারণ ক্ষমতার চেয়ে ২/৩ রোগী ভর্তি রয়েছে হাসপাতালে। একদিকে যেমন রোগী বাড়ছে অন্যদিকে সেবার মান কমছে বলে অভিযোগ রোগীর স্বজনদের।
হাসপাতালের ওয়ার্ডের বাহিরে বারন্দায় ও সিটের নিচে অতিরিক্ত রোগী ভর্তি থাকায় রোগি দেখতে আসা স্বজনের চলাচল করতে কষ্টের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। মনে হচ্ছে ওয়ার্ডের বাহিরে আরেকটি হাসপাতালে রয়েছে। অথচ সরকার রোগীর সেবার জন্য কোটি কোটি টাকা খরচ করে সঠিক সেবা পাওয়ার কাজ করে যাচ্ছে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল তার বিপরীত। বরাদ্দের চাইতে দ্বিগুন রোগি সামাল দিতেও বেকাদায় রয়েছে হাসপাতাল কতর্ৃপক্ষ।
গতকাল শনিবার বেলা ১২ টার দিকে হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে, পুরো হাসপাতালজুড়ে রোগীদের ভীড় মোটামুটি থাকলে ৪র্থ ও ৫ম তলায় রোগির সংখ্যা দ্বিগুন। এমনকি ওয়ার্ডের বাহিরেও অনেক রোগী ফ্লোরে শুয়ে চিকিৎসা নিতে দেখা যায়। বিশেষ করে ৫ম ও ৪র্থ তলায় ওয়ার্ডের ভেতরে রোগী এত বেশি সেখানে জায়গার সংকুলন না হয়ে ওয়ার্ডের সামনে অনেক ফ্লোরে বেটসিট বিশিয়ে অনেক রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে।
হাসপাতালের দৈনিক প্রতিবেদনে দেখা যায়, প্রতিটি ওয়ার্ডে সিটের চাইতে রোগির সংখ্যা বাড়তি। কয়েকটি ওয়ার্ডে সিটিরে বাহিরে কিছু রোগি বাড়তি দেখা গেলেও ৪র্থ এবং ৫ম তলায় ভিতরে সংকুলন না হয়ে বাহিরে বারান্দায় শতাধিক রোগি ফ্লোরে বেটসিট বিসিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে।
সদরের ঝিলংজার বাসিন্দা রোগীর স্বজন আসমা খাতুন বলেন, আমার বাবাকে হাসপাতালে পুরুষ ওয়ার্ডে ভর্তি করানো হয়েছে। শুক্রবার ও শনিবার দুইদিন মোটেই চিকিৎসা পাচ্ছি না। এ দু’দিন নাকি সরকারী বন্ধ ছিলো। রবিবারে ডাক্তার রোগি দেখবে। বিশেষ করে ডাক্তার রোগী দেখতে কম আসে। নার্সদের দিয়ে চিকিৎসা সেবা চালিয়ে দিতে চাই তারা। মন চাইলে এখানে রোগীদের দেখতে ডাক্তার আসেন না হয় আসেনা। তারা দায়িত্ব পালনে চরম অবহেলা করে থাকে। একইভাবে কক্সবাজার সদর ঈদগাঁও থেকে আসা জরুরী বিভাগে চিকিৎসা নিতে গিয়ে চরমভাবে অবহেলার শিকার হতে হয়েছে। প্রতিদিন কয়েক শাতধিক রোগী এই হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। একই ভাবে বর্হি বিভাগে অতিরিক্ত রোগীর চাপ।
হাসপাতালের নার্সদের সাথে কথা বলে জানা যায়, কয়েক সপ্তাহ ধরে হাসপাতালে ৪র্থ ও ৫ম তলায় রোগির একটু চাপ বেশি। বেশির ভাগই দূঘটনা ও মারামারি সংক্রান্ত আহত রোগি। আমরা আমাদের সাধ্য মতো রোগিদের সেবা দিয়ে যাচ্ছি। রোগীর প্রতি কোন ধরণের অবহেলা করা হচ্ছে না।
সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আর.এম.ও) ডা. মো. শাহীন আবদুর রহমান চৌধুরী জানান, হাসপাতালে রোগির সংখ্যা একটু বাড়তি। তারপরেও রোগিদের সাধ্য মতো সেবা দিয়ে যাচ্ছি। সিটের চেয়ে যেহেতু রোগির সংখ্যা বেশি কিছু অনিয়ম থাকবে এটা স্বাভাবিক।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-