বিশেষ প্রতিবেদক •
বিশ্বনেত্রী, মানবতার মানস কন্যা জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদারতার সুযোগে, মানবিক কারণে আশ্রয় দিয়েছে মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের।
শুধু তাই নয় আশ্রিতাদের খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান থেকে শুরু করে সব ধরনের সহযোগীতা প্রদানের পাশাপাশি এসব রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব আদায় করে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর জন্য বেশ কয়েকবার কুটনীতিক তৎপরতা চালিয়েছে। যা এখনো অব্যাহত রয়েছে। অকৃতজ্ঞ আশ্রিত এসব রোহিঙ্গারা ক্যাম্পে খুন, গুম, অপরহণ, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, ডাকাতি, আধিপাত্য বিস্তার নিয়ে এখানে মারামারি ও ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধ কর্মকান্ডে জড়িত হয়ে একটি অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির পায়তারা করছে দাবী করে রোহিঙ্গা নেতারা বললেন, আরসা নামের একটি সন্ত্রাসী গ্রুপের রোষানলে পড়ে গত তিন বছরে সহস্রাধিক রোহিঙ্গা গুম হয়ে গেছে।
সূত্র মতে, উখিয়া ও টেকনাফের পাহাড়ি জমিতে ৩৪টি ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছে ১২ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা। এসব রোহিঙ্গারা আশ্রয় নেওয়ার কিছু দিন লোক দেখানো ভালভাবে চলাফেরা করলেও পরবতর্ী সময় ধরে তাদের আসল রূপ বেরিয়ে আসতে শুরু করে। যার ফলে ক্যাম্প গুলোতে অপরাধ প্রবণতা বাড়তে শুরু করে। মাদক ও ইয়াবা কারবারি এবং চোরাচালানিদের সঙ্গেও তাদের অবাধ যাতায়াত থেকে শুরু করে জুয়া, জাল টাকা তৈরি, অস্ত্র তৈরির কারখানা প্রভৃতি অসামাজিক ও রাষ্ট্রদ্রোহী তৎপরতা শুরু করে এসব রোহিঙ্গারা।
ক্যাম্পে দায়িত্বরত মুষ্টিমেয় পুলিশ বিশাল রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে মুখ বুঝে সহ্য করার মতো একাধিক প্রমাণ মিলেছে কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে। প্রত্যক্ষদশর্ীরা জানিয়েছেন, নতুন করে আসা রোহিঙ্গারা আসার সময় নিয়ে এসেছে ভুরিভুরি ইয়াবার চালান। আবার অনেকেই অবৈধ অস্ত্রও সাথে করে নিয়ে এসেছে। যেসব অস্ত্র ব্যবহার করে আরসা গ্রুপ নামধারী একটি সন্ত্রাসী জনগোষ্ঠী ক্যাম্পে নৈরাজ্যকর পরিবেশ সৃষ্টি করছে বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক রোহিঙ্গা নেতা জানিয়েছেন।
কুতুপালং রেজিষ্ট্রার্ড ক্যাম্পে চেয়ারম্যান হাফেজ মাওলানা জালাল আহমদ বলেন, ক্যাম্পে আরসা ও মুন্না দুটি গ্রুপের মধ্যে চলছে আধিপাত্য বিস্তার নিয়ে বন্দুক যুদ্ধ। তিনি বলেন, মুন্না একজন নেতা সে তার নেতৃত্ব জাহির করার জন্য আরসা গ্রুপ থেকে চলে এসে নিজস্ব একটি বাহিনী করেছে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আরসা গ্রুপের অস্ত্রধারী সদস্যরা মুন্না গ্রুপের উপর বার বার হামলা চালাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, বুধবার রাতে আরসা গ্রুপের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা মুন্নার বাড়িতে হামলা চালিয়ে স্বপরিবারে হত্যা করেছে। জ্বালিয়ে দিয়েছে ঘরবাড়ি। তবে মুন্না কোথায় আছে তা কেউ জানে না। গত তিন বছরে রোহিঙ্গাদের নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির শিকার হয়ে প্রায় সহস্রাধিক রোহিঙ্গার হদিস মিলছে না বলে দাবী করে ওই চেয়ারম্যান বলেন, রোহিঙ্গাদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড দমন করতে হলে সরকারকে আইনী পদক্ষেপ নিতে হবে।
পুলিশের তথ্যমতে, গত ২০১৭ সালে নানা অপরাধে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মামলার সংখ্যা ছিল ৭৬টি, আর আসামি হয় ১৫৯ জন। ২০১৮ সালে ২০৮ মামলায় আসামি হয়েছে ৪১৪ জন। ২০১৯ সালে মামলার সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২৬৩টি আর আসামি হয় ৬৪৯ জন। চলতি বছরের ২৫ আগস্ট পর্যন্ত রোহিঙ্গা অপরাধীদের বিরুদ্ধে হওয়া ১৮৪ মামলায় আসামি হয় ৪৪৯ জন।
উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ আহমেদ সঞ্জুর মোরশেদ জানান, তারা সবেমাত্র যোগদান করছেন, দাপ্তরিক কর্মকান্ড বন্টনসহ ঝুঁকিপূর্ণ ও জনগুরুত্বপূর্ণ এলাকা গুলোতে পুলিশের চৌকি স্থাপন করার কাজ চলছে। তবে সামাজিক বিরোধ, নারীর প্রতি সহিংসতা সহ যেকোন ধরনের অপরাধ প্রবণতা দমনে পুলিশ ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছে। রোহিঙ্গারা যাতে ক্যাম্প থেকে বের হয়ে সড়ক পথে অন্যান্য স্থানে যেতে না পারে সে ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-