শীত শুরুর আগেই ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বয়স্করা

সাইফুল ইসলাম : শীত শুরু হওয়ার আগেই কক্সবাজারে সর্দি-কাশি ও জ্বরসহ ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বয়স্করা। বিশেষ করে শিশুদের নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কিউলাইটিছসহ শ^াসজনিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। এ পরিস্থিতিতে শিশুদের বাড়তি পরিচর্যার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এছাড়াও বয়স্করাও নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।

চিকিৎসকরা বলছেন, আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে ভাইরাসের সংক্রমণ দ্রুত বাড়ছে। তাপমাত্রার তারতম্যের কারণে সর্দি-কাশি, জ্বরসহ অন্যান্য রোগ হচ্ছে। তাছাড় শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা খুবই কম। বদলে যাওয়া আবহাওয়ায়, শিশুরা তাই খুব সহজেই বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়। অন্যদিকে এ সময়ে বাতাসে ধুলোবালির পরিমাণ বেড়ে যায়, এরই সাথে রোগজীবাণুর সংক্রমণও বাড়তে থাকে। এই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে শিশুরা নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কাইটিস, ডায়রিয়া, ঠান্ডা জ্বর, কাশি প্রভৃতিতে আক্রান্ত হচ্ছে।

সরেজমিন কক্সবাজার সদর হাসপাতাল, ফুয়াদ আল খতীব হাসপাতাল, ডিজিটাল ও জেনারেলসহ কয়েকটি প্রাইভেট হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়- জ্বর, সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া, ব্রংকাইটিস বা শ^াসকষ্ট, অ্যাজমা (হাঁপানি), সাইনোসাইটিস এবং টনসিলের সমস্যা নিয়ে শিশুরা ভর্তি হচ্ছে। এছাড়া হাসপাতালের বহি:র্বিভাগে টাইফয়েড, প্যারাটাইফয়েড, জন্ডিস, সাধারণ আমাশয়, রক্ত আমাশয় রোগীর সংখ্যাও আগের চেয়ে বাড়ছে।

ভারুয়াখালী থেকে ৪ বছরের শিশু মো সেলিমকে নিয়ে মা জরিনা সদর হাসপাতালে এসেছেন। বহিঃর্বিভাগে বাচ্চাকে কোলে নিয়ে বসেছিলেন তিনি। তিনি বলেন, দুই দিন আগে তার ঠান্ডা লেগেছিল। নাক দিয়ে পানি পড়ছিল। বুকে সাই সাই শব্দও হচ্ছে। সকালবেলা দু-তিনবার পাতলা পায়খানা হয়েছে। সঙ্গে বমিও করেছে। তারপর হাসপাতালে নিয়ে এসেছি।

চিকিৎসককে দেখানোর পরে বাড়ি ফিরে যাচ্ছিলেন সৌদি প্রবাসী কামাল। তিনি জানান, তার দেড় বছরের ছেলে মো. ইসলাম গত ৪ দিন ধরে জ্বরে ভুগছেন। মূলত ঠন্ডায় সর্দি, কাশি ও জ্বর হয়েছে। কখনো কখনো কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসে। পরে আমরা ওকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে আসি।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, হঠাৎ বৃষ্টির পর থেকে আবহাওয়া দ্রুত ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে। এতে হাসপাতালে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত শিশুরা চিকিৎসা নিতে আসছে। গতবছরের তুলনায় এবার রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। তবে এতে আতঙ্কিত হবার কিছুই নেই।

শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. এন আলম বলেন, মূলত ঋতু পরিবর্তনের কারণে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। দেখা যায় দিনে গরম, রাতে ঠান্ডা। ফলে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শূন্য থেকে ৩ বছর বয়সী শিশুরা। কারণ তাদের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক কম।

তিনি আরোও বলেন, এ জন্য বিশেষ করে মাকে সতর্ক থাকতে হবে। পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন থাকার পাশাপাশি শিশুর খাওয়ার স্যালাইন ও স্বাভাবিক খাওয়ার ঠিক রাখতে হবে।

আরও খবর