মাদকে বিনিয়োগকারীদের ধরতে মাঠে নামছে প্রশাসন

ইয়াবা (ফাইল ছবি)

চট্টগ্রাম ◑ ইয়াবাসহ মাদকের পেছনে যুক্ত বিনিয়োগকারীদের আইনের আওতায় আনার কথা ভাবছে প্রশাসন।  সন্দেহজনক লেনদেন করা হিসাবধারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বাংলাদেশ ব্যাংক ও দেশের বাণিজ্যিক চেম্বারগুলোকে এ প্রক্রিয়ার সাথে যুক্ত করা হয়েছে। বুধবার (২৩ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম আঞ্চলিক টাস্কফোর্সের সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার এ বি এম আজাদের সভাপতিত্বে সভায় চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি আনোয়ার হোসেন, পুলিশ কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর, র‌্যাবের ডেপুটি সিইও, বিজিবির আঞ্চলিক কমান্ডারগণ, জেলা প্রশাসকগণ, পুলিশ সুপারগণসহ টাক্সফোর্সের অন্যান্য সদস্যগণ জুম এ্যাপসের মাধ্যমে সভায় অংশগ্রহণ করেন।

সভায় জানানো হয়, সম্প্রতি কোটি কোটি টাকার ইয়াবার চালান ধরা পড়ার ঘটনায় প্রমাণিত হয়, এতে বড় বড় রাঘব-বোয়ালরা জড়িত। তারা বিভিন্ন পথ ঘুরে ইয়াবার অর্থ মায়ানমারে পৌঁছায়। তাদের মূলোৎপাটনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারলেই ইয়াবা ব্যবসা বন্ধ হবে।

সভায় আগস্ট মাসের টাস্কফোর্সের বিষয়বস্তু নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। আলোচনায় সীমান্ত চোরাচালান বিশেষত ইয়াবা চোরাচালানের বিষয় ওঠে আসে। ইয়াবা চোরাচালান প্রতিরোধে আরও কী কী পদক্ষেপ নেওয়া যায় এ বিষয়ে চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম সভার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। মিয়ানমার সীমান্তে চোরাচালান প্রতিরোধে গৃহীত কৌশলে কোন ঘাটতি আছে কি না, অথবা কার্যকর প্রতিরোধে আর কোন ব্যবস্থা নেওয়া যায় কি না এ বিষয়ে তিনি আলোচনার অনুরোধ করেন।

র‌্যাবের ডেপুটি সিইও জানান, ইয়াবা চোরাচালান প্রতিরোধে বহনকারীর পাশাপাশি সন্দেহজনক লেনদেন ও লেনদেনের নতুন নতুন কৌশল উদঘাটনে র‌্যাব কাজ করছে। ইতোমধ্যে বেশ কিছু সন্দেহজনক লেনদেন শনাক্ত করা হয়েছে। র‌্যাব মনে করে ইয়াবায় বিনিয়োগকারীদের আইনের আওতায় আনতে পারলে চোরাচালান কমে আসবে।

সিএমপি কমিশনার সভায় বলেন, মাদক সমাজে সকল অপরাধের জনক। একে শক্তভাবে নির্মূল করে যুবসমাজ ও দেশের অর্থনীতিকে রক্ষা করতে হবে। এজন্য সিএমপির অধীন এলাকায় মাদকে বিনিয়োগকারীদের শনাক্তে বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

সভায় রেঞ্জ ডিআইজি জানান, ইতোমধ্যে কক্সবাজার জেলায় পুলিশ প্রশাসনে ব্যাপক রদবদল করা হয়েছে। যৌথ কর্মপন্থা ঠিক করতে বিজিবির সাথে মতবিনিময় করা হয়েছে এবং টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে।

বিজিবির চট্টগ্রাম অঞ্চলের ডেপুটি কমান্ডার সভায় জানান, বিজিবির প্রত্যেকটি ব্যাটেলিয়ন পূর্বের তুলনায় আরও সক্রিয়ভাবে কাজ করার ফলে সম্প্রতি ইয়াবার বেশ কিছু বড় বড় চালান আটক করা সম্ভব হয়েছে। নজরদারি জোরদার করা হয়েছে বলে তিনি সভাকে অবহিত করেন।

বিজিবির কক্সবাজার অঞ্চলের কমান্ডার সভায় জানান, ইয়াবা চোরাচালান আটক প্রতিমাসেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে অভ্যন্তরীণ বাজারের চাহিদা হ্রাস করতে না পারলে ইয়াবা চোরাচালান প্রতিরোধ কষ্টকর হয়ে পড়বে। তিনি সভাকে আরো অবহিত করেন, ইয়াবা ব্যবসার সাথে জড়িত স্থানীয়রা বিজিবির পেট্রোল টহলের গতিবিধি চোরাচালানীদের তাৎক্ষনিক জানিয়ে দেওয়ায় অনেক সময় নিশ্চিত চোরাচালানও আটক করা সম্ভব হচ্ছে না। এ কাজে তারা মায়ানমারের মোবাইল সিম ব্যবহার করে।

তিনি সভায় আরও জানান, সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ঘুনধুম-বাইশপাড়ি সীমান্তে ১০ কিলোমিটার কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে, টেকনাফ এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধ নির্মান শেষ হলে সেখানেও কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া হবে।

আরও খবর