পর্যটন নগরী কক্সবাজারের ইনানী বীচে আসা যাওয়ার অন্যতম মাধ্যম সৈকত সড়কটি খানা খন্দকে একাকার হয়ে পড়েছে। ফলে পর্যটক, এনজিওকর্মী, সাধারণ মানুষসহ অসংখ্য যাত্রী সাধারণকে প্রতিনিয়ত দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
সরেজমিনে কোটবাজার হয়ে ইনানী মেরিন ড্রাইভ পর্যন্ত ৭ কিলোমিটার সড়ক ঘুরে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও পরিবহন শ্রমিকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কটি সংস্কারের আওতায় উন্নয়ন কাজ চলছে বিধায় যাবতীয় পরিবহন বাইপাস সড়ক কোর্টবাজার-সোনারপাড়া হয়ে মেরিন ড্রাইভ সংযোগ সড়ক ব্যবহার করে কক্সবাজার সহ বিভিন্ন এলাকায় যাওয়া আসা করছে। তাছাড়া দেশি বিদেশী পর্যটক ও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কর্মরত এনজিওকর্মীরা এ সড়ক ব্যবহার করে ক্যাম্পে যাওয়া-আসা সহ প্রয়োজনীয় কাজে সীমান্ত শহর টেকনাফ পাড়ি জমাচ্ছে।
ভারী যানবাহন ও দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে বড় বড় খানা খন্দকে পরিণত হয়েছে সড়কটি। বর্ষার বৃষ্টিতে সড়কের বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতার কারণে সড়কে গর্তের অবস্থান বুঝা যাচ্ছেনা। যার ফলে প্রতিনিয়ত যাত্রীসহ গাড়ি উল্টে যাচ্ছে। এতে আহত হচ্ছেন অনেকেই।
এমতাবস্থায় সড়কটির বিভিন্ন স্থানে খানা খন্দকে একাকার হয়ে পড়ার কারণে যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে বলে দাবী করছেন সড়ক পরিবহন সংশ্লিস্ট বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও বৃহত্তর যাত্রী সাধারণ।
প্রশাসন বলছেন, যেহেতু এ সড়ক দিয়ে দেশী বিদেশী পর্যটক ইনানী বীচ ও তৎসংলগ্ন হোটেল মোটেল গেষ্ট হাউসে অবকাশ যাপনের জন্য আসা যাওয়া করছে। তাই এ সড়কটিকে অধিকতর গুরুত্ব দিয়ে দৃশ্যমান উন্নয়নের জন্য সড়ক ও জনপদ বিভাগ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।
কোর্টবাজার ট্রাক-মালিক শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি মোঃ শাহজাহান তার মতামত ব্যক্ত করতে গিয়ে সাংবাদিকদের জানান, বর্তমান সময়ের জন্য কোর্টবাজার সোনারপাড়া সৈকত সড়কটি অসম্ভব গুরুত্ব বহন করছে। যেহেতু এ সড়ক দিয়ে ইনানী সহ কক্সবাজার হয়ে বিভিন্ন এলাকায় প্রতিনিয়ত অসংখ্য যাত্রী সাধারণ আসা যাওয়া করছে।
ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে সড়কটি বিভিন্ন স্থানে খানা খন্দকের সৃষ্টি হয়েছে। এ সড়কটি অবিলম্বে সংস্কারের আওতায় আনা না হলে মনির মার্কেট এলাকায় রেজুখালের ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে যেতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে।
কোটবাজার দোকান মালিক সমবায় সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব আবু ছিদ্দিক সওদাগর বলেন, কোটবাজার সোনারপাড়া সড়কটি দীর্ঘদিন যাবত গাড়ী চলাচলের অযোগ্য হয়েছে অথচ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের এ নিয়ে কোন প্রকার মাথা ব্যথা নেই। এই সড়ক দিয়ে রোহিঙ্গাদের মানবিক সেবায় নিয়োজিত প্রায় তিন শতাধিক যানবাহন চলাচল করে। তাছাড়া এই সড়ক দিয়ে বিভিন্ন ভারী পণ্যবাহী গাড়ী যাতায়াত করে। ফলে ভাঙ্গা অংশটুকু ভেঙ্গে সড়কটিতে খানাখন্দ ও বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে এবং নালা দখল হয়ে যাওয়ায় বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার কারণে সড়কে চলাচল আরো অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সড়কটির বেহাল দশা যেন কাটছে না।
বিশেষ করে সড়কে গর্তের কারণে, সৈকত সড়কে অবস্থিত বৌদ্ধ মন্দির এলাকায় প্রতিনিয়ত যাত্রীবাহী সিএনজি, টমটম, মোটরসাইকেল দূর্ঘটনার শিকার হতে দেখা যায়। একই সমস্যা জালিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের সামনে থেকে সোনারপাড়া বাজারের প্রবেশ পথেও।
উখিয়া প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক কমরুদ্দিন মুকুল বলেন, মিয়ানমার সামরিক জান্তার অত্যাচার উৎপীড়ন নিপীড়নের শিকার হাজার হাজার রোহিঙ্গা এদেশে আশ্রয় নেওয়ার পর এদেরকে সেবা প্রদানের নামে এনজিওদের ব্যবহৃত হাজার হাজার গাড়ী এ সড়কটি ব্যবহার করে আসছে।
প্রথম দিকে সড়কটির বিভিন্ন স্থানে ভাঙ্গন দেখা দিলে স্থানীয়রা ভারী যানবাহন চলাচলে বাধাঁ প্রদান করেও কোন কাজ হয়নি। ফলে সড়কটি ভারসাম্যহীন হয়ে খানা খন্দ ও ছোটবড় অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। পর্যটন সড়ক হিসেবে এ সড়কটিকে যত দ্রুত সম্ভব সংস্কার ও সড়কের প্রশস্থতা বাড়ানো একান্ত প্রয়োজন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ নিকারুজ্জামান চৌধুরী জানান, এ সড়কটি দ্রুত মেরামতের জন্য সড়ক ও জনপদ বিভাগ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।
স্থানীয় চেয়ারম্যান নুরুল আমিন চৌধুরী জানান, সড়কটির বিভিন্ন স্থানে কার্পেটিং উঠে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হওয়ার কারণে যানবাহন চলাচল করছে ঝুঁকি নিয়ে। সড়কটি দ্রুত মেরামতের আওতায় আনার জন্য তিনি সড়ক ও জনপদ বিভাগের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-