কক্সবাজারে সড়ক উপ-সড়কে গাড়ী ভাড়া নিয়ে নৈরাজ্য

সৈয়দুল কাদের :
কক্সবাজারে অভ্যন্তরীণ সড়কে গাড়ি ভাড়া নিয়ে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে সাধারণ মানুষ। স্বাস্থ্যবিধির দোহাই দিয়ে বাড়তি ভাড়া আদায় করা হলেও যাত্রি নেওয়া হচ্ছে আগের নিয়মেই। যার ফলে যাত্রীদের সাথে গাড়ি চালকদের ভাড়া নিয়ে নিয়মিত ঝগড়া হচ্ছে। মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। এরপরও আদায় করা হচ্ছে বাড়তি টাকা।

শাহপরীর দ্বীপ থেকে একজন লোককে কক্সবাজার পৌছতে খরচ হচ্ছে ৪৫০ টাকা, যা আগে ছিল ১৯০ টাকা। একজন অসহায় মহিলা জানিয়েছেন গাড়ি ভাড়া যোগাড় করতে না পেরে গত ৬ দিন তিনি কক্সবাজার আসতে পারেননি। পরে অনেক কষ্ট করে ভাড়া যোগাড় করে কক্সবাজার এসেছেন। অহেতুক বাড়তি ভাড়া নেওয়ায় অনেকেই সমস্যায় পড়েছেন।

চিরিঙ্গা থেকে বদরখালী পর্যন্ত সিএনজি টেক্সি ভাড়া জনপ্রতি ৪০ টাকা ছিল। যাত্রী উঠানো হতো ৫ জন। এখনো যাত্রী উঠানো হচ্ছে ৫ জন, কিন্তু ভাড়া আদায় করা হচ্ছে ৫০ টাকা। কোন প্রকার ঘোষণা ছাড়াই আদায় করা হচ্ছে ওই বাড়তি টাকা।

একই চিত্র মহেশখালী প্রধান সড়ক ও মাতারবাড়ি সড়কে। বদরখালীর মোঃ জসিম উদ্দিন জানিয়েছেন, বদরখালী থেকে কর্ণফুলী থানার মইজ্যার টেক পর্যন্ত জনপ্রতি সিএনজি ভাড়া ছিল ২০০ টাকা। এখন আগের  মত ৫ জন যাত্রী নিয়ে কোন ব্যাখ্যা ছাড়াই আদায় করা হচ্ছে জনপ্রতি ৩০০ টাকা করে। যা যাত্রীদের জন্য বোঝা হয়ে দাড়িয়েছে। ওই সড়ক দিয়ে যাওয়া একজন যাত্রী জানিয়েছেন, ৫ জন যাত্রী নিয়ে বাড়তি টাকা আদায় করে স্বাস্থ্যবিধি লংঘন করা ছাড়াও কোন যাত্রীই মাক্স ব্যবহার করে না। এ বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের নজরে এনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।

প্রাপ্ত তথ্যমতে কক্সবাজার শহরের অবস্থা আরো ভয়াবহ। কক্সবাজার থেকে রামু, উখিয়া সড়কেও আদায় করা হচ্ছে বাড়তি টাকা। জানা যায়, কক্সবাজার থেকে সিএনজি যোগে উখিয়ায় আগের গাড়ি ৮০ টাকা হলেও এখন আদায় করা হচ্ছে ১২০ থেকে ১৫০ টাকা। এভাবে মরিচ্যা পর্যন্ত আদায় করা হচ্ছে ৬০ টাকার পরিবর্তে ৮০ টাকা এবং কোটবাজারে ৭০ টাকার পরিবর্তে ১০০টাকা। ভাড়া বাড়ালেও আগের মত ৫ জন যাত্রী নিয়ে থাকে সিএনজিগুলো।  ভাড়া শহরে চলাচল করা টমটমেও ভাড়া বেশী আদায় করা হলেও অধিকাংশ টমটম গাড়ীতে লোক নেওয়া হচ্ছে ৬/৭ করে।

কক্সবাজার সদর উপজেলার ঈদগাঁওতে যাত্রীদের কাছ থেকে দ্বিগুন ভাড়া আদায়ের অভিযোগ রয়েছে। বিভিন্ন সড়ক উপসড়কে দিনে-রাতে যাত্রীদের জিম্মি করে ২ থেকে ৩ গুন পর্যন্ত বেশি ভাড়া আদায় করছে চালকরা। এতে পথে পথে বাকবিতন্ডা চলছে। ভাড়া নিয়ে অনেক সময় বড় ধরণের ঝগড়াও হচ্ছে।

ভুক্তভোগী যাত্রীরা জানান, দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করার কারণে দরিদ্র মানুষ পড়েছেন চরম বিপাকে। কিন্তু এ বিষয় নিয়ে কারো মাথা ব্যাথা নেই। ঈদগাঁও বাস ষ্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীরা জানান, ষ্টেশনে পুলিশ আছে কিন্তু অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়ে কেউ-ই কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেনা। পুলিশও তাদের কাছে জিম্মি। প্রতিদিন কয়েকটি গাড়ি প্রয়োজন পুলিশের।

জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন জানিয়েছেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনেই গাড়ি চালানোর নির্দেশনা রয়েছে। যারা মানবেনা তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া  হবে।

আরও খবর