শর্তসাপেক্ষে খুলে দেয়া হচ্ছে কক্সবাজার

কক্সবাজার জার্নাল রিপোর্ট ◑

উন্মুক্ত হচ্ছে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার। ঈদুল আজহার পর খুলছে কক্সবাজারের পর্যটন স্পট, হোটেল মোটেল, রেস্তোরা ও বার্মিজ দোকান। তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে আগত পর্যটকসহ পর্যটন ব্যবসায়ীদের মানতে হবে ৬৫ নির্দেশনা ও শর্তাবলী।

কক্সবাজারের পর্যটন শিল্প খুলে দেয়ার জন্য প্রথমপর্যায়ে এসব নির্দেশনা ও শর্তাবলী খসড়া চূড়ান্ত করেছে কমিটি। আগামী ৩ আগস্ট অনুষ্ঠিতব্য প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট পর্যায়ের এক সভায় এসব সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন ডিসি মো. কামাল হোসেন।

তিনি বলেন, ঈদুল আজহার পর স্বাস্থ্যবিধি মেনে হোটেল-মোটেল ও সমুদ্র সৈকতসহ কক্সবাজারের সব পর্যটনকেন্দ্র খুলে দেয়া হবে। এ ব্যাপারে প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট পর্যায়ে আলাপ-আলোচনা চলছে। এরমধ্যে জেলা প্রশাসনের পর্যটনের সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে কিছু সুপারিশমালা তৈরি করেছে। আগামী ৩ আগস্ট অনুষ্ঠিতব্য প্রশাসনের এক সভায় উত্থাপিত সুপারিশগুলো আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিয়ে হোটেল-মোটেল ও সমুদ্র সৈকতসহ কক্সবাজারের পর্যটন কেন্দ্রগুলো খুলে দেয়ার ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এদিকে, সম্প্রতি অনুষ্ঠিত জেলা প্রশাসনের পর্যটন সেলের দায়িত্বে থাকা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইমরান জাহিদ খান পর্যটন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে মতামতের ভিত্তিতে প্রাথমিকভাবে কিছু সংখ্যক নির্দেশনা ও শর্তাবলী প্রণয়ন করেছেন। মূলত: আগামী ৩ আগস্ট অনুষ্ঠিতব্য প্রশাসনের সভায় এসব নির্দেশনা ও শর্তাবলী চূড়ান্ত হবে। আর এসব মানার ও পালনের শর্ত সাপেক্ষে খুলে দেয়া হবে সমুদ্র সৈকতসহ কক্সবাজারের পর্যটন কেন্দ্রগুলো।

এ নিয়ে প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট পর্যায়ের প্রাথমিকভাবে তৈরি সেক্টর ভিত্তিক বিভাজিত ১১টি সেক্টরে ৬৫টি নির্দেশনা ও শর্তাবলী আরোপ করা হয়েছে।

এতে দেখা গেছে হোটেল-মোটেল, গেস্ট হাউজ-রেস্ট হাউজ, কটেজ ও রিসোর্টের জন্য ১৫টি, রেস্টুরেন্ট ও রেস্তোরার জন্য ৭টি, গণপরিবহনের জন্য ৮টি, বিচ মার্কেট ও সৈকতের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য ৪টি, বিচ-বাইক ও জেটস্কীর জন্য ৪টি, কিটকট ব্যবসায়ীদের জন্য ৬টি, প্যারাসেলিংয়ের জন্য ২টি, বিভিন্ন পর্যটন স্পটের (আদিনাথ মন্দির ও রেডিয়েন্ট ফিশ ওয়ার্ল্ড প্রভৃতি) ৪টি, ঘাট ও স্পিডবোটের জন্য ৪টি নির্দেশনা ও শর্তাবলী মেনে খুলে দেয়ার নীতিমালা তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া কক্সবাজারে বেড়াতে আসা পর্যটকদের জন্য তৈরি করা হয়েছে ১২টি বিশেষ শর্তাবলী।

এদের মধ্যে হোটেল-মোটেল, গেস্ট হাউজ-রেস্ট হাউজ, কটেজ ও রিসোর্টের জন্য তৈরি ১৫টি নির্দেশনা ও শর্তাবলী হলো:

১. প্রবেশ মুখে হ্যান্ডওয়াশ ও পানির সু-ব্যবস্থার জন্য বেসিন সিস্টেম থাকতে হবে। ২. প্রবেশমুখে ডিসইনফেকশন ট্রে এর ব্যবস্থা রাখতে হবে এবং সেই ট্রে জীবাণুনাশক হিসেবে যেন ব্লিচিং পাউডার-পানির মিশ্রণ নিয়মিতভাবে দেয়া হয় তা নিশ্চিতকরণের ব্যবস্থা করতে হবে। এ লক্ষ্যে হোটেলে পর্যাপ্ত ব্লিচিং পাউডারের মজুদ রাখতে হবে। ৩. প্রবেশমুখে প্রবেশকারীদের তাপমাত্রা পরিমাপের ব্যবস্থা রাখতে হবে। কোনো পর্যটকের শরীরে তাপমাত্রা বেশি হলে কিংবা করোনার অন্য যে কোনো উপসর্গ পরিলক্ষিত হলে তাকে হোটেলে উঠতে না দিয়ে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে। ৪. যেসব হোটেলে গাড়ি পার্কিং এর ব্যবস্থা আছে সেগুলোতে গাড়িকে ব্লিচিং বা অন্য কোনো জীবাণুনাশক দ্বারা পরিষ্কার করার ব্যবস্থা রাখতে হবে। ৫. হোটেলের প্রবেশমুখ, লবিসহ বিভিন্ন স্থানে এবং সব রুমে হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখতে হবে। ৬. হোটেলের বিভিন্ন কক্ষে বেড সংখ্যা যা-ই হোক না কেন, প্রতি কক্ষে সর্বোচ্চ একজন পর্যটক থাকতে পারবে। তবে স্বামী-স্ত্রী এর ক্ষেত্রে এবং নাবালক বাচ্চা থাকলে তাদের ক্ষেত্রে এই নিয়ম শিথিলযোগ্য। ৭. হোটেলে পর্যটক আসার পর তারা যেন গোসল করে সে পরামর্শ দিতে হবে এবং গোসল না করে হোটেল থেকে বের হয়ে হয়ে বিচে বা অন্য কোথাও ঘোরাঘুরি না করে তা নিশ্চিত করতে হবে। ৮. মাস্কবিহীন অবস্থায় কোনো পর্যটক যেন হোটেল অভ্যন্তরে ঘোরাঘুরি না করে কিংবা হোটেল থেকে বের না হয়; সেটা নিশ্চিত করতে হবে। কক্সবাজারে চলমান ‘নো মাস্ক, নো সার্ভিস’ সম্পর্কে পর্যটকদের অবহিত করতে হবে। এক্ষেত্রে হোটেলগুলো পর্যটকদের জন্য মাস্ক সরবরাহের ব্যবস্থা করতে হবে। ৯. কোনো পর্যটক কোনো রুম ত্যাগ করার পর, নূন্যতম একদিন পর তা অন্য পর্যটকদের ভাড়া দিতে হবে। এ সময়ে পূর্বের পর্যটকের ব্যবহৃত সব বেডশিট, বালিশের কভার প্রভৃতি ধৌত করার উদ্দেশ্যে পরিবর্তন করে দিতে হবে এবং রুমের ব্যবহার্য আসবাবপত্র, দরজা, জানালা, ফ্লোর ভালোভাবে জীবাণুনাশক দ্বারা পরিষ্কার করতে হবে। ১০. হোটেলের সব কর্মচারী অবশ্যই মাস্ক পরিহিত অবস্থায় থাকবে এবং তা অবশ্যই সঠিকভাবে পরতে হবে যেন নাক বা মুখ বের হয়ে না থাকে। ১১. স্বাস্থ্যবিধি বিষয়ে হোটেলের কী করণীয় এবং পর্যটকদের কী পালনীয় তা হোটেলের বিভিন্ন দৃশ্যমান স্থানে প্রদর্শনের ব্যবস্থা করতে হবে। ১২. করোনাকে পুঁজি করে কোনো হোটেল যেন রুম ভাড়ায় অনিয়ম করে দীর্ঘমেয়াদে পর্যটন ব্যবসায় কক্সবাজারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে না পারে, তাই রুমের ভাড়ার তালিকা দৃশ্যমান স্থানে প্রদর্শনের ব্যবস্থা করতে হবে। ১৩. স্বাস্থ্যবিধিসহ অন্যান্য ব্যাপারে হোটেলের কোনো কর্মচারী কোনো অবহেলা করছে কিনা তা জানানোর জন্য জন্য হোটেল কর্তৃপক্ষ তাদের কোনো কর্মকর্তার মোবাইল নম্বর অভিযোগের জন্য প্রদর্শনের ব্যবস্থা করবে এবং যেকোনো অভিযোগ সমাধানে সে তড়িৎ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। হোটেল কর্তৃপক্ষ যদি কোনো অভিযোগ আমলে না নেয় বা সমাধানে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করে তাকে হোটেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে পর্যটকদের কোনো অনিয়ম/অভিযোগ আছে কিনা তা জানানোর জন্য স্থানীয় প্রশাসনের হটলাইন নম্বরও প্রদর্শনের ব্যবস্থা করতে হবে। ১৪. প্রতি সপ্তাহ অন্তর হোটেলের কর্মচারীরা কেউ করোনা আক্রান্ত হয়েছে কিনা সেটার পরীক্ষা করার ব্যবস্থা করতে হবে এবং কেউ আক্রান্ত পাওয়া গেলে দ্রুত তাকে আলাদা করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। ১৫. জিমনেসিয়াম ও স্পা সুবিধা পর্যটকদের জন্য নিষিদ্ধ থাকবে।

রেস্টুরেন্ট ও রেস্তোরার জন্য ৭টি নির্দেশনা ও শর্তাবলী হলো: ১. প্রবেশমুখে সাবান ও পানির সুব্যবস্থার জন্য বেসিন সিস্টেম থাকতে হবে। ২. প্রবেশ মুখে ডিসইনফেকশন ট্রে এর ব্যবস্থা রাখতে হবে এবং সেই ট্রে জীবাণুনাশক হিসেবে যেন ব্লিচিং পাউডার-পানির মিশ্রণ নিয়মিতভাবে দেয়া হয় তা সুনিশ্চিতকরণের ব্যবস্থা করতে হবে। এ লক্ষ্যে হোটেলে পর্যাপ্ত ব্লিচিং পাউডার এর মজুদ রাখতে হবে। ৩. প্রবেশমুখে প্রবেশকারীদের তাপমাত্রা পরিমাপের ব্যবস্থা রাখতে হবে। ৪. যেসব রেস্টুরেন্টের গাড়ি পার্কিং এর ব্যবস্থা রয়েছে সেগুলোতে গাড়িকে ব্লিচিং বা অন্য কোনো জীবাণুনাশক দ্বারা পরিস্কার করার ব্যবস্থা রাখতে হবে। ৫. রেস্টুরেন্টের সব কর্মচারী অবশ্যই মাস্ক পরিহিত অবস্থায় থাকবে এবং তা অবশ্যই সঠিকভাবে পরতে হবে যেন নাক বা মুখ বের হয়ে না থাকে। ৬. রেস্টুরেন্টগুলো হোম ডেলিভারি সার্ভিস দিতে উৎসাহিত করবে। ৭. রেস্টুরেন্টে চেয়ার-টেবিলগুলো পর্যাপ্ত দূরত্বে থাকবে এবং একই টেবিলে একই গ্রুপে (একই পরিবার বা দল যারা একসঙ্গে বসবাস করে) সদস্যরা বসতে পারবে।

গণপরিবহণের ৮টি নির্দেশনা ও শর্তাবলী হলো: ১. কক্সবাজারগামী বাসে একই পরিবারের সদস্য নয় এমন ২ যাত্রীকে পাশাপাশি সিটে বসানো যাবে না। ২. বাসের দরজায় কক্সবাজারগামী যাত্রীদের তাপমাত্রা পরিমাপের ব্যবস্থা রাখতে হবে। কোনো যাত্রীর শরীরের তাপমাত্রা বেশি হলে কিংবা করোনার অন্য কোনো উপসর্গ পরিলক্ষিত হলে, তাকে বাসে উঠতে দেয়া যাবে না। ৩. স্থানীয় গণপরিবহনে (রিকশা, অটোরিকশা, সিএনজি প্রভৃতি) একই সঙ্গে লোকাল মানুষ এবং পর্যটক পরিবহন করা যাবে না। ৪. অটোরিকশা, সিএনজি এবং পর্যটন সংশ্লিষ্ট অন্যান্য যানবাহন কোনো অবস্থাতেই ড্রাইভারের পাশে কোনো যাত্রী পরিবহন করতে পারবে না। ৫. অটোরিকশার পেছনে সর্বোচ্চ ৩ জন এবং সিএনজির পেছনে সর্বোচ্চ ২ জন যাত্রী বসতে পারবে। একই গ্রুপের (একই পরিবার বা দল যারা একসঙ্গে বসবাস করে) সদস্যদের জন্য এ নিয়ম শিথিলযোগ্য। ৬. সব চালক এবং হেলপার অবশ্যই সঠিকভাবে মাস্ক পরিহিত অবস্থায় থাকবে  এবং তা অবশ্যই সঠিকভাবে পরতে হবে যেন নাক বা মুখ বের হয়ে না থাকে। ৭. মাস্কবিহীন কাউকে সার্ভিস দেয়া যাবে না। ৮. রেন্ট এ কার থেকে গাড়ি ভাড়া নিলে তা অপরিচিত কারো সঙ্গে শেয়ার করা যাবে না।

বিচ মার্কেট ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য ৪টি নির্দেশনা ও শর্তাবলী হল: ১. বিচের নিকটবর্তী পর্যটন সংশ্লিষ্ট কিছু কিছু মার্কেট দোকানগুলো এত সন্নিকটে যে সেখানে সব দোকান এক সঙ্গে খোলা থাকলে দূরত্ব বজায় রাখা দূরুহ হবে। সেক্ষেত্রে পাশাপাশি ২টি দোকান একই দিনে খোলা না রাখা যেতে পারে এবং ক্রমান্বয়ে একদিন একটি খোলা রাখলে পাশের অন্যটি রাখা যেতে পারে। পরেরদিন বন্ধ রাখা দোকানটি খোলা রাখা যেতে পারে। ২. মার্কেটের সব কর্মচারী অবশ্যই মাস্ক পরিহিত অবস্থায় থাকবে এবং তা অবশ্যই সঠিকভাবে পরতে হবে যেন নাক বা মুখ বের হয়ে না থাকে। ৩. বিক্রয়ের সময় পর্যটকদের বিভিন্ন পণ্য হাতে ধরে দেখাকে অনুৎসাহী করতে হবে এবং হাতে ধরে যদি দেখেই থাকে; তবে তা প্রয়োজনে স্যানিটাইজ করার ব্যবস্থা করবে। ৪. মাস্কবিহীন কাউকে সার্ভিস দেয়া যাবে না।

বিচ-বাইক ও জেটস্কীর জন্য ৪টি নির্দেশনা ও শর্তাবলী হল: ১. বিচ-বাইক চালককে অবশ্যই মাস্ক, পিপিই পরিহিত অবস্থায় যাত্রী বহন করতে হবে। ২. একইসঙ্গে একজনের বেশি যাত্রী উঠানো যাবে না। ৩. একজন যাত্রী চড়া শেষে বাইকে ব্লিচিং পানি বা অন্য কোনো জীবাণুনাশক দ্বারা পরিষ্কার করতে হবে। ৪. মাস্কবিহীন কোনো সার্ভিস দেয়া যাবে না।

কিটকটের ক্ষেত্রে ৬টি নির্দেশনা ও শর্তাবলী হল: ১. কিটকটগুলো একটি থেকে অপরটির নূন্যতম ৩ ফিট দূরত্বে থাকবে। ২. কোনো কিটকটে একের অধিক ব্যক্তি বসতে পারবে না। ৩. প্রতিবার কিটকট কেউ ব্যবহার শেষে তা ব্লিচিং পানি বা অন্য কোনো জীবাণুনাশক দ্বারা পরিষ্কার করতে হবে। ৪. কিটকটের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তি অবশ্যই মাস্ক পরিহিত অবস্থায় থাকবে এবং তা অবশ্যই সঠিকভাবে পরতে হবে যেন নাক বা মুখ বের হয়ে না থাকে। ৫. স্থানীয় ও পর্যটকদের জন্য পৃথক কিটকটের ব্যবস্থা রাখতে হবে। ৬. মাস্কবিহীন কাউকে সার্ভিস দেয়া যাবে না।

প্যারাসেইলিং এর জন্য ২টি নির্দেশনা ও শর্তাবলী হল: ১. সংশ্লিষ্ট সবাইকে অবশ্যই মাস্ক, পিপিই পরিহিত অবস্থায় থাকতে হবে এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। ২. মাস্কবিহীন কাউকে সার্ভিস দেয়া যাবে না।

বিভিন্ন পর্যটন স্পট (আদিনাথ মন্দির ও রেডিয়েন্ট ফিশ ওয়ার্ল্ড প্রভৃতি) এর ক্ষেত্রে ৪টি নির্দেশনা ও শর্তাবলী হলো: ১. সপ্তাহের কিছুদিন স্থানীয় লোকদের জন্য এবং কিছুদিন পর্যটকদের জন্য বরাদ্দ থাকবে। একই দিনে পর্যটক ও স্থানীয়রা পর্যটন স্পটগুলো ভ্রমণ করতে পারবে না। ২. এসব পর্যটন স্পটে কোনোভাবেই যেন মাত্রাতিরিক্ত ভিড় যেন না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। ৩. দায়িত্বে থাকা সব কর্মচারী অবশ্যই মাস্ক পরিহিত অবস্থায় থাকবে এবং তা অবশ্যই সঠিকভাবে পরতে হবে যেন নাক বা মুখ বের হয়ে না থাকে। ৪. মাস্কবিহীন কাউকে সার্ভিস দেয়া যাবে না।

ঘাট ও স্পিডবোটের জন্য ৪টি নির্দেশনা ও শর্তাবলী হল: ১. ঘাটের দায়িত্বে থাকা সব কর্মচারী এবং সব স্পিডবোট চালক অবশ্যই মাস্ক পরিহিত অবস্থায় থাকবে এবং তা অবশ্যই সঠিকভাবে পরতে হবে যেন নাক বা মুখ বের হয়ে না থাকে। ২. একই স্পিডবোটে একই সঙ্গে স্থানীয় লোক ও পর্যটক উঠানো যাবে না। ৩. একটি স্পিডবোটে সর্বোচ্চ ৪ জন যাত্রী উঠানো যাবে। ৪. মাস্কবিহীন কাউকে সার্ভিস দেয়া যাবে না।

এছাড়া কক্সবাজারে বেড়াতে আসা পর্যটকদের জন্য ১২টি নির্দেশনা ও শর্তাবলী হলো: ১. কক্সবাজারে আসার পথে সাধারণ স্বাস্থ্যবিধির যেন কোনো ব্যত্য়য় না হয়, সেদিকে সর্তক থাকতে হবে। অসুস্থ (জ্বর ও সর্দিসহ অন্য উপসর্গ প্রভৃতি) অবস্থায় কেউ কক্সবাজার ভ্রমণে আসতে পারবে না। ২. কক্সবাজার এসে হোটেল বা অন্য কোথাও উঠে প্রথমেই ভালোভাবে গোসল করে নিতে হবে; গোসল না করে এসেই ঘুরতে বের হওয়া যাবে না। ৩. কক্সবাজারে ‘নো মাস্ক, নো সার্ভিস’ অবস্থা চলমান। ফলে মাস্কবিহীন অবস্থায় ঘোরাঘুরি করা যাবে না। আর কেউ মাস্কবিহীন অবস্থায় ঘোরাঘুরি করলে সে কোনো পাবলিক সেবা পাবে না, উপরন্তু জরিমানা গুনতে হবে। ৪. পর্যটন সংশ্লিষ্ট সব ক্ষেত্রেই (হোটেল, রেস্টুরেন্ট, বিচ সংলগ্ন মার্কেট, বিচের বিভিন্ন সার্ভিস) স্বাস্থ্যবিধির কিছু নীতিমালা রয়েছে, সেগুলো সব ক্ষেত্রে মানতে হবে এবং অপরপক্ষকেও সেগুলো প্রতিপালনে সহায়তা করতে হবে। ৫. যথাসম্ভব রেস্টুরেন্ট/রেস্তোরায় বসে খাওয়া পরিহার করতে হবে, খাবার অর্ডার দিয়ে রুমে নিয়ে এসে খাওয়ার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। ৬. পর্যটকদের যাতায়াত হোটেল, বিচ এবং এসব এরিয়ার কাছাকাছি দোকানসমূহে সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। বাজার কিংবা কোলাহলপূর্ণ অন্যান্য স্থানে যাতায়াতকে কঠোরভাবে নিষেধ করা হচ্ছে।

৭. পর্যটকদের নামাজ/প্রার্থনা রুমে বসে সম্পাদন করতে অনুরোধ করা হচ্ছে। ৮. স্থানীয় অটোরিকশা, সিএনজি, রিকশা প্রভৃতি গণপরিবহনে এবং ঘাট থেকে স্পিডবোট চলাচলের ক্ষেত্রে অপরিচিত কারো সঙ্গে একই যানবাহনে ভ্রমণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ৯. বিচে চলাচলের ক্ষেত্রে অপরিচিত কোনো দলের কাছ থেকে ন্যূনতম ৩ ফিট দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। ১০. হোটেল-মোটেল জোন ও মেরিন ড্রাইভ এবং তৎসংলগ্ন বিচ এবং নিকটবর্তী পর্যটন স্পট ব্যতিরেকে অন্যান্য দূরবর্তী পর্যটন স্পটসমূহ ভ্রমণকে নিষিদ্ধ না করা হলেও নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। ১১. অনলাইন প্লাটফর্ম (যেমন ফেসবুক) এর মাধ্যমে অনেক সময় পরস্পর অপরিচিতরা দলবদ্ধ হয়ে বিভিন্ন ট্যুর আয়োজন করে, কক্সবাজারে এরূপ ভ্রমণ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। ১২. বিচ, হোটেল-মোটেল বা অন্য কোথাও জনসমাবেশ ঘটিয়ে কোনো সভা, সমাবেশ, কনসার্ট কিংবা জন্মদিন, বিবাহবার্ষিকী কিংবা অন্য যেকোনো অনুষ্ঠান আয়োজন করা সম্পূর্ণ নিষেধ।

আরও খবর