আওয়ামী লীগে উত্থান- আওয়ামী লীগেই খতম

তোফায়েল আহমেদের টাইমলাইন থেকে ◑
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন বিপিএম (বার) জানিয়েছেন, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে কক্সবাজার জেলাকে শতভাগ মাদকমুক্ত করতে কাজ চলছে ।

পুলিশ সুপার বলেন, হাত বদলকারীদের আটকের পর ইয়াবার প্রকৃত মালিককে ধরা হচ্ছে । এতে দেখা যাচ্ছে, ভালো মানুষের মুখোশ পড়ে অনেকে মিয়ানমার থেকে ইয়াবা এনে রাতারাতি কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন।

তিনি জানান, ১০২ জন আত্মসমর্পণকারী ইয়াবা কারবারির তথ্যে ৬৬৭ জনের নাম পাওয়া গেছে যাদের নাম কোন তালিকায় ছিলো না। ঐসব ইয়াবা কারবারিদের ব্যাপারে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। কোন প্রভাবশালী এখন আর প্রভাবশালী নেই। প্রভাবশালীদের সকল ডানা ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে। এখন পুলিশের কাজে কেউ আর বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারছে না।

এদিকে গত ২৩ জুন রাতে পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহতে হয়েছেন উখিয়ার কুতুপালং এর প্রভাবশালী ইউপি সদস্য বখতিয়ার আহমেদ প্রকাশ মৌলভী বখতিয়ার মেম্বার।

সংবাদ মাধ্যম বলছে, রোহিঙ্গা ভিত্তিক বিতর্কিত কর্মকাণ্ড নিয়ে এতদিন আলোচিত ছিলেন তিনি। তার হাতেই কুতুপালং এর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের একছত্র নিয়ন্ত্রণ ছিলো। একদম নিরবে ও বিচক্ষণতার সাথে গত কয়েক বছর ধরে তিনি রোহিঙ্গা ক্যাম্প ভিত্তিক ইয়াবা ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে আসছিলেন।

গত দুই বছর ধরে কুতুপালং ক্যাম্প কেন্দ্রিক একটি বড় ইয়াবা সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণ করে আসছেন বখতিয়ার মেম্বার-এ তথ্য পুলিশের।

টেকনাফের হ্নীলার ওয়াব্রাং এলাকার ইউনুস নামের এক ইয়াবা বকারবারিকে আটকের পরে বের হয়ে আসে বখতিয়ার মেম্বারের নাম। ইউনুসের দেয়া তথ্যে কুতুপালং থেকে বখতিয়ার মেম্বার ও কুতুপালং ক্যাম্পের রোহিঙ্গা মো. তাহেরকে ২০ হাজার ইয়াবাসহ আটক করা হয়।

উদ্ধার করা হয় বখতেয়ারের ইয়াবা ডিপোর নগদ ১০ লাখ টাকা। পরে তাদের দেয়া তথ্যে আরো ইয়াবা উদ্ধারে গেলে বন্দুকযুদ্ধে বখতিয়ার মেম্বার ও তাহের নিহত হন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশ কর্মকর্তা জানান- ইয়াবার চেয়েও ভয়ংকর ঘটনায়ও মৌলভী বখতেয়ার জড়িত হয়ে পড়েছিলেন। রোহিংগা ক্যাম্প ভিত্তিক এসব ঘটনা রাষ্ট্রের জন্যও ছিল হুমকির সন্মুখে। যা আইন শৃংখলা রক্ষাকারি সংস্হার সদস্যদের কাছে মৌলভী বখতেয়ার নিজেই স্বীকার করেছেন অকপটে। বলেছেন তিনি মাসে এক থেকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত টাকাও দিতেন কাকে এবং কোথায়।

তিনি একজন সংবাদকর্মী ও রাজনৈতিক কর্মীকে নিজের কারবারের কেরানী হিসাবে নিয়োগের কথাও স্বীকার করেন। বলেন, আমি কাউকে পরোয়া করিনা।টাকা দিলেই কাজ শেষ।

মৌলভী বখতেয়ার জামায়াতের পর বিএনপির সাথে ছিলেন। পরে আাসেন আওয়ামী লীগ স্হানীয় দলীয় এমপির সাথে। কাজে কারবারে আওয়ামী লীগ না হলেও ছিলেন বড় আওয়ামী লীগার।

এক রোহিঙ্গা নারী ধর্ষণের মামলায় মৌলভী বখতিয়ার দীর্ঘদিন কারাগারে ছিলেন। UNHCR সেই মামলাটি পরিচালনা করত রোহিঙ্গা নারীর পক্ষে। শেষ পর্যন্ত ধর্ষণের সেই মামলাটিও আওয়ামী লীগের পিঠে চড়িয়ে দিয়ে রাজনৈতিক মামলার কোটায় ফেলে তিনি বেরিয়ে পড়েছিলেন।

নিয়তির নিষ্ঠুর পরিণতি বলে যে কথাটি, তা হল যে আওয়ামী লীগের ছত্রছায়ায় মৌলভী বখতিয়ারের উত্থান সেই আওয়ামী লীগের কাছেই মৌলভী বখতিয়ার চিরকালের জন্য খতম। লোকে বলে, আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক স্বচ্ছতা এখানেই। অতএব – হাইব্রিডদের জন্যও দুঃসংবাদ।