উখিয়ায় জাল নোট পাচারকারী চক্র ফের সক্রিয়

মোহাম্মদ ইব্রাহিম মোস্তফা, উখিয়া ◑

পবিত্র ঈদ-উল-আযহাকে সামনে রেখে মাঠে নেমেছে জাল নোট বাজারজাত চক্র। ৭/৮ জনের দলবদ্ধ এ চক্রটি প্রতি বছর ঈদ, কোরবানকে পুঁজি করে হাটে বাজারে অহরহ ঘুরে বেড়ালেও এদের মূল টার্গেট থাকে পশুর বাজারে। কারণ খুঁজতে গিয়ে দেখা যায়, পশুর বাজারে টাকার লেনদেন বেশি ও ক্রেতা বিক্রেতাদের ঝামেলার মধ্যে এ চক্রটি সুবিধামতো টাকা হাতিয়ে নিতে সক্ষম হয়।

টাকা আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা বলছে, মলম পার্টি ও জাল নোট চক্রের হাত থেকে ক্রেতা বিক্রেতাদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য পুলিশ বিশেষ বিশেষ মার্কেট ও হাটবাজার গুলোতে দায়িত্ব পালন করছে।

ব্যবসায়ীদের দাবী পশুর বাজারে যথাযথ নিরাপত্তা বিধান করলেও খুচরা হাটবাজারে পুলিশের কোন অস্থিত্ব খুঁজে না পাওয়ার কারণে ব্যবসায়ীদের আতংকে থাকতে হয়। ২০১২ সালে কুতুপালং রেজিষ্ট্রার্ড রোহিঙ্গা ক্যাম্পের তৎকালীন দায়িত্বপ্রাপ্ত ক্যাম্প ইনচার্জ ফজলে রাব্বী ক্যাম্প অভ্যান্তরে অভিযান চালিয়ে ৭ লক্ষ টাকা জাল নোট তৈরির কাগজ ও টাকা তৈরির সরঞ্জাম সহ একজন চট্টগ্রামের ও ২ জন রোহিঙ্গা নাগরিক সহ ৩ জনকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করার পর থেকে ক্যাম্প ভিত্তিক জাল নোট চক্রের কোন অস্থিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে হাটে বাজারে, মার্কেটে ও পশুর বাজারে ইদানিং টোকাই, পকেটমার ও জাল নোট চক্রের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে বলে প্রত্যক্ষদশর্ীরা জানিয়েছেন।

থাইংখালী হাকিমপাড়া ক্যাম্পের কাপড় ব্যবসায়ী নুর মোহাম্মদ জানায়, সে একটি লুঙ্গি বিক্রি করে ক্রেতার নিকট থেকে ২৫০ টাকা আদায় করে। পরে ওই টাকা নিয়ে সন্দেহ হলে আশেপাশের ব্যবসায়ীরা দু’টা একশত টাকার নোট জাল বলে সনাক্ত করে। তৎক্ষণে লুঙ্গি ক্রেতা চম্পট দিয়েছে। এভাবে বেশ কিছু জালনোট চক্র ক্যাম্পে ক্যাম্পে অবাধে বিচরণ করছে বলে রোহিঙ্গাদের নিকট থেকে অভিযোগ উঠেছে। তবে ক্যাম্প পুলিশ এব্যাপারে ইতিবাচক মন্তব্য করতে পারেননি। তারা বলছে, অভিযোগ পেলে খুঁজ নিয়ে দেখা যাবে। মরিচ্যা গরুর বাজার ঘুরে জানা যায়, কয়েকজন অচেনা লোক বাজারে সকাল থেকে ঘুরাফেরা করছিল। স্থানীয় গরু ব্যবসায়ী নুরুল ইসলাম এদেরকে সন্দেহ করে জিজ্ঞাসাবাদে এক পর্যায়ে তারা যে পকেটমার তা প্রমাণিত হয়।

রামু খরুলিয়া গ্রামের নুরুল ইসলাম একই গ্রামের মোহাম্মদ নবী ও সলিম উল্লাহ এ তিনজনকে জনতা গণধোলাই দিয়ে ছেড়ে দেয়। গরু ব্যবসায়ীরা জানান, ঈদ-উল-আযহার ক্রেতা বিক্রেতার উপস্থিতিকে পুঁজি করে কিছু অসাধু চক্র হাটবাজারে অবাধে বিচরণ করছে। এদেরকে সনাক্ত করে আইনের আওতায় নিয়ে যাওয়া না হলে বাজারে ক্রেতা বিক্রেতার টাকা খোয়া যেতে পারে।

উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মর্জিনা আকতার মরজু জানান, ঈদ-উল-আযহায় ক্রেতা বিক্রেতাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করণের লক্ষ্যে জন গুরুত্ব পূর্ণ মার্কেট ও পশুর হাটবাজার গুলোতে পুলিশের দায়িত্বপালন অত্যাবশ্যকীয় রাখা হয়েছে।

উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মোঃ নিকারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, চলমান করোনা ভাইরাস থেকে জনসাধারণকে রক্ষা করার জন্য হাটবাজারে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার বাধ্যবাধকতার পাশাপাশি নিরাপত্তা নিশ্চিত রাখার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

আরও খবর