চট্টগ্রাম ◑ “নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়া অসুস্থ বাবাকে নিয়ে ঘুরেছি চট্টগ্রামের আটটি হাসপাতালের দুয়ারে দুয়ারে । হাতে- পায়ে ধরেও মেলেনি ভর্তি। প্রচন্ড শ্বাসকষ্টে প্রয়োজন ছিল একটু অক্সিজেন। একটু বুক ভরে শ্বাস নেয়ার আকুতি। শেষে ভর্তি মিলল চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ২১ নম্বর বেডে।
সেখানে অক্সিজেন দেয়া হলেও সেটাতে চাপ (ফ্লো) কম থাকায় পযার্প্ত অক্সিজেন পাচ্ছিলেন না তিনি। তখন উপর হয়ে অক্সিজেন নেয়ার চেষ্টা করছিলেন অসুস্থ বাবা। বুক ফেটে কান্না আসছিল। ইচ্ছে করছিল, সব কিছু ভেঙে চুরমার করে ফেলি। কিন্তু তাতে বাবার কষ্ট বাড়বে। তাই বাবার পাশে দাঁড়িয়ে সাহস দিচ্ছিলাম। কিচ্ছু হবে না, শ্বাস নিতে চেষ্টা কর, শ্বাস নিতে পারলে তুমি ভালো হয়ে যাবে। তারপর নেমে পড়ি আইসিইউর জন্য।
দ্রুত খবর নিয়ে জানলাম, সন্দেহভাজন করোনা রোগীকে আইসিইউ দেয়ার নিয়ম নেই। তাই আইসিইউ দিতে রাজি হননি কোন হাসপাতাল। আইসিইউ পেতে হলে করোনা নেগেটিভ অথবা পজেটিভ হতে হবে। বুঝলাম চিকিৎসা পেতে হলে করোনা পরীক্ষা করতে হবে। ভর্তির পরদিন চমেকেই পরীক্ষা করালাম। রিপোর্ট আসার আগেই আজ(বৃহস্পতিবার)দুপুর ১২টায় চমেকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা গেলেন শ্বাস নিতে না পেরেই। আইসিইউ না পেলেও বন্ধুদের সহযোগিতায় ততক্ষণে অক্সিজেন সিলিন্ডার জোগাড়ও হয়েছিল। কিন্তু মরার আগে বুক ভরে একটু শ্বাস নিতে পারেননি বাবা। আহা..”
কান্না জড়িত কন্ঠে এসব কথা বলছিলেন চট্টগ্রাম আইন কলেজের ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আমিনুল নিজামি রিফাত। শ্বাসকষ্ট নিয়ে মারা যাওয়া তার বাবা মো. নেজাম উদ্দিন চৌধুরী (৬২) বাঁশখালীর সাবেক সাংসদ মরহুম এডভোকেট সুলতানুল কবিরের ছোট ভাই।এর আগে গত ৭ জুন মানবাধিকার কমিশনের করোনা রোগীর এম্বুলেন্সে করে নগরীর বিভিন্ন হাসপাতালে ঘুরে চমেকে ভর্তি হন নেজাম উদ্দিন।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-