টেকনাফে ব্যাংক, ক্লিনিক, ১২ টি দোকান লকডাউন : হাসপাতালে শুধু জরুরি সেবা

মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী ◑

রোববার ২৬ এপ্রিল করোনা সনাক্ত হওয়া টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মহিলা চিকিৎসক যেসব জায়গায় চলাচল করেছেন তার প্রায় সবই লকডাউন (Lockdown) করে দেওয়া হয়েছে।

রোববার ২৬ এপ্রিল সন্ধ্যায় টেকনাফ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবুল মনছুরের নেতৃত্বে পুলিশ সহ স্বাস্থ্য বিভাগের একটি টিম গিয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান লকডাউন করে সীলগালা করা, ব্যানার লাগানো ও লালপতাকা ঝুলিয়ে দেন।

লকডাউন করা প্রতিষ্ঠান গুলোর মধ্যে রয়েছে, সাউথ ইস্ট ব্যাংক লিমিটেড, টেকনাফ শাখা, টেকনাফ মেরিন সিটি প্রাইভেট হাসপাতাল ও হাসপাতাল গেইট এলাকার ১২টি দোকান।

টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. টিটু চন্দ্র শীল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

কক্সবাজারে এই প্রথম কোন বাণিজ্যিক ব্যাংকের শাখা এবং প্রাইভেট হাসপাতাল লকডাউন করা হলো। করোনা ভাইরাস সনাক্ত হওয়া উক্ত মহিলা চিকিৎসক রোববার সাউথ ইস্ট ব্যাংক লিমিটেড, টেকনাফ শাখায় টাকা উত্তোলন করতে গিয়েছিলেন এবং মেরিন সিটি প্রাইভেট হাসপাতালে রোগী দেখতে গিয়েছিলেন। তবে ৩ জন প্রসুতি মহিলা থাকায় শুধুমাত্র তাদের ৩টি কেবিন আগামী ২ দিনের জন্য মানবিক কারণে খোলা রেখে টেকনাফ মেরিন সিটি প্রাইভেট হাসপাতালটির অবশিষ্ট অংশ পুরো লকডাউন করে দেওয়া হয়েছে বলে ডা. টিটু চন্দ্র শীল জানান।

টেকনাফ উপজেলা করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সচিব ডা. টিটু চন্দ্র শীল আরো বলেন, রোববার ২৬ এপ্রিল করোনা সনাক্ত হওয়া টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মহিলা চিকিৎসকের সাথে এই হাসপাতালের প্রায় সকলে সংস্পর্শে গেছেন। তাই উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ করে অধিকতর নিরাপত্তার প্রয়োজনে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আউটডোর, ইনডোর সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

শুধুমাত্র হাসপাতালের জরুরি বিভাগ ও প্রসুতি বিভাগ সীমিত আকারে খোলা রাখা হয়েছে। এ দু’টি বিভাগের জন্য অতি প্রয়োজনীয় স্বল্প সংখ্যক চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য স্টাফ রেখে বাকীদের বাধ্যতামূলক হোম কোয়ারান্টাইনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন দায়িত্বশীল চিকিৎসক জানান, এ অবস্থায় টেকনাফে সার্বিক চিকিৎসা ব্যবস্থা চরম বিপর্যয়ের মধ্যে পড়বে।

গত ২৪ জানুয়ারি টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ৯ জন চিকিৎসক, ১৬ জন নার্স, ২৮ জন কর্মচারী সহ মোট ৫৩ জনের শরীরের স্যাম্পল সংগ্রহ করে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের ল্যাবে টেস্টের জন্য পাঠানো হয়। ৫৩ জনের মধ্যে ২৬ এপ্রিল মেডিকেল অফসার ডা. নাঈমা সিফাত এর টেস্ট রিপোর্ট ‘পজেটিভ’ পাওয়া যায়।

প্রসঙ্গত, এই প্রথম কক্সবাজার জেলায় একজন চিকিৎসক করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হলো। রোববার ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত কক্সবাজারে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা মোট ১৫ জন।

আরও খবর