শাহীন মাহমুদ রাসেল ◑
করোনাভাইরাসের দূর্যোগে কক্সবাজারের সদর ও রামু উপজেলাসহ সবখানে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার সব বয়সের মানুষের মাঝে মাথা ন্যাড়া করার হিড়িক পড়েছে। করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কের মধ্যে মাথা ন্যাড়া করার দৃশ্য মানুষের মধ্যে কৌতূহলের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, করোনা সংক্রমণ রোধে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। একই সঙ্গে অবস্থান করতে বলা হয় বাসা-বাড়িতে। এই সুযোগে অনেককেই মাথা ন্যাড়া করতে দেখা গেছে। মাথার চুল ফেলে কেউ নীরবে বাসায় অবস্থান করছেন আবার অনেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করছেন।
মাথার চুল ঘন হবে বলে কিছু দিন পরপরই অনেকেই চুল ফেলে দেন। এটা বেশ বড় বয়স পর্যন্ত চলে কারও কারও ক্ষেত্রে। যদিও বার বার ন্যাড়া করলেই যে মাথায় ভালো চুল গজাবে এ কথার কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। অনেকের মাঝে আবার প্রচলিত আছে, মাথা ন্যাড়া করলে মাথার চুল পড়া কমে যায়।
প্রতিদিন কেউ না কেউ মাথা ন্যাড়া করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবি আপলোড করছেন। তারা জানিয়েছেন, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে এখন সবাইকে বাসা-বাড়িতে থাকতে হচ্ছে। কতদিন পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে, তারা স্বাভাবিক কর্মজীবনে ফিরবেন, তার কোন নিশ্চয়তা নেই। এই সুযোগে মাথা ন্যাড়া করে নিচ্ছেন।
তা ছাড়া বাইরে বের না হওয়ায় সামনা-সামনি কোনো বিরূপ মন্তব্য শোনার বা কারও মাধ্যমে বিরক্ত হওয়ার আশঙ্কা নেই। সরকারি নির্দেশনায় এখন অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মতো সেলুনগুলোও বন্ধ রয়েছে। দীর্ঘদিন সেলুনে যেতে না পারায় মাথায় চুল বেড়ে যাচ্ছে। গরমের এই সময়ে চুল বেড়ে গিয়ে মাথা চুলকাচ্ছে। তাই বাড়িতে বসেই মাথা ন্যাড়া করে ফেলছেন।
গতকাল হারুন নামের একজন শিক্ষার্থী ন্যাড়া মাথার ছবি দিয়ে এক স্ট্যাটাসে লিখেন, জন্মের পর দ্বিতীয়বার টাক হলাম। তিনি জানান, হোম কোয়ারেন্টিনে আছি, কাজ নেই। ঘরে বসে থেকে এ সুযোগে টাক হওয়া। সঙ্গে আরেকটি কারণ যুক্ত করে বলেন, সেলুন বন্ধ তাই টাক হয়ে গেলাম।
কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোরশেদ হোসাইন তানিম ফেসবুকে ন্যাড়া মাথার ছবি পোস্ট করে বলেন, পোলাপান বড্ড পাজিল, একটা স্ট্যাটাস দিলাম আর কি তাই বলে এতো চাপাচাপি! মুরুব্বিদের টাক ওয়ালা দেখতে এতো শখ? কি অার করুম! পোলাপান গুলা আবদার করে আমার টাক মাথা দেইখবো। কি অার করা অবশেষে আমিও টাকদের দলে।কথা দিয়ে কথা রাখলাম। অহন তোমরা যারা অাছো গিয়া অহনো মাথাটা টাক করো নাই আমারটা দেইখা তারাতাড়ি কইরা নাও। লগ ডাউন সময় বাড়ছে হ মাথা ঠিক তো দুনিয়া ঠিক।
জেলা ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক, সাংবাদিক শাহ নিয়াজও মাথা ন্যাড়া করে ফেসবুকে ছবি আপলোড দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, “দীর্ঘ সিদ্ধান্তহীনতার পর অবশেষে”।
এ বিষয়ে শমীর, টাপু ও সজন শর্মা বলেন, সরকারি নির্দেশে বাজারের সেলুন ঘরটি এখন বন্ধ রাখা হয়েছে। তাই সংসার চালাতে খুব হিমসিম খেতে হচ্ছে। সরকারি সহায়তাও মিলছে না। বাড়ি গিয়ে মাথা ন্যাড়া করে দেওয়ার জন্য দু-একজন ফোন দিচ্ছেন। পরিচিত মানুষ হলে তাদের বাড়িতে গিয়ে মাথা ন্যাড়া করে দিয়ে আসছি।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-