মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :
৩ ফেব্রুয়ারী সোমবার টেকনাফে দ্বিতীয় দফায় আত্মসমর্পণ করছে ৩০ জন ইয়াবাকারবারী। টেকনাফ সরকারি ডিগ্রি কলেজ মাঠে বিকেলে ওই আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে।
পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক বিপিএম (বার) পিপিএম আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। বিষয়টি কক্সবাজার জেলা পুলিশের নির্ভরযোগ্য সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সুত্র মতে, দ্বিতীয় দফায় আত্মসমর্পণ করতে যাওয়া ইয়াবাকারবারীর সংখ্যা ৩০ জনের বেশি হবেনা। তবে আত্মসমর্পণকারীর সংখ্যা এখন সুনির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছেনা বলে সূত্রটি জানান।
আত্মসমর্পণকারীদের মধ্যে ১৮ জন ইয়াবাকারবারী গত ৯ মাসেরও বেশী সময় ধরে কক্সবাজার শহরের পুলিশ লাইনের আশেপাশের এলাকায় মধ্যস্থতাকারীদের হেফাজতে রয়েছে। ইয়াবা ব্যবসায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে তারা স্বাভাবিক জীবনে ফেরার আশায় আত্মসমর্পণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গেছে। আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠান দেখভাল করার জন্য আগামী সপ্তাহে পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি (অপারেশন এন্ড ক্রাইমস) মোঃ জাকির হোসেন খান পিপিএম কক্সবাজার আসবেন বলে সূত্রটি জানিয়েছে। এই আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠান আগে প্রাথমিকভাবে ২৯ জানুয়ারি হওয়ার কথা থাকলেও তা পরিবর্তন করে আগামী ৩ ফেব্রুয়ারী সোমবার বিকেলে নির্ধারণ করা হয়েছে।
এর আগে ২০১৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি টেকনাফের শীর্ষ ১০২ ইয়াবাকারবারী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের মহাপরিদর্শক ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বিপিএম (বার) এর কাছে আত্মসমর্পণ করেছিলো। তাদের মধ্যে কক্সবাজার-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদির চার ভাইও ছিল। এই ১০২ ইয়াবাকরবারীর মধ্যে একজন কারাগারে মারা যায়। বাকি ১০১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযুক্তপত্র (চার্জশীট) দাখিল করে টেকনাফ মডেল থানা পুলিশ।
এবার নতুন করে আরও ৩০ জনের মতো ইয়াবাকারবারি স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করতে যাচ্ছে বলে সিবিএন-কে নিশ্চিত করেছেন নির্ভরযোগ্য সুত্রটি। সরকারের শীর্ষ মহল থেকে গ্রীণ সিগন্যাল পাওয়ার পর স্বেচ্ছায় স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে ইচ্ছুক এসব ইয়াবাকারবারির তালিকা তৈরি করা হয়। ইতোমধ্যে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। সরকারি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পাশাপাশি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদেরও আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হবে জানিয়েছে সুত্রটি।
সুত্র মতে, ইয়াবাকারবারিদের আত্মসমর্পণের সুযোগ দেওয়া হলেও মাদক বিরোধী নিয়মিত অভিযানে কোনও শিথিলতা আসবে না। বরং আরো তীব্রতর করা হবে। আত্মসমর্পণের আওতায় না এসে ইয়াবাকারবারিরা কৌশলে সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করলে তাদের পরিণতি হবে আরো ভয়াবহ।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের মে থেকে ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিশেষ অভিযানে ইয়াবাকারবারি, ডাকাত ও সন্ত্রাসীদের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় ৫৬ জন রোহিঙ্গাসহ ২০৯ জন ইয়াবাকারবারি ও ডাকাত-সন্ত্রাসী নিহত হয় কক্সবাজার জেলায়। পাশাপাশি গত বছর ১ কোটি ৬৯ লাখ ২৬ হাজার ৫৭০ পিস ইয়াবাসহ ২ হাজার ৩৩৮ জনকে আটক এবং বিপুল পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধার করেছে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী। ফলে ২০১৯ সালের মতো ২০২০ সালেও জাতীয় পুলিশ সপ্তাহে কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এ.বি.এম মাসুদ হোসেন বিপিএম (বার) দ্বিতীয় বারের মতো বিপিএম (সেবা) পদক পেয়েছেন। সর্বোচ্চ অস্ত্র ও মাদক দ্রব্য উদ্ধারকারী জেলা হিসাবেও পেয়েছেন ২ টি আইজিপি পদক ও সম্মাননা।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-