সময় টিভি : ফুটবল ম্যাচ আয়োজনের নামে তিন বছর ধরে নামকরা খেলোয়াড় দিয়ে ঢাকায় ইয়াবা পাচার করছে টেকনাফের একটি সিন্ডিকেট। নামী খেলোয়াড়রা পুলিশের সন্দেহের বাইরে থাকায় সিন্ডিকেটটি এ কৌশল নিয়েছে। চট্টগ্রামের বাকলিয়ায় ইয়াবাসহ দেশি-বিদেশি তিন ফুটবলার গ্রেফতার হওয়ার পর ঘটনার অনুসন্ধান করতে গিয়ে চাঞ্চল্যকর এসব তথ্য পেয়েছে পুলিশ। তবে সিন্ডিকেটের সদস্য সৈয়দ, কালন এবং সোহেল নামে তিনজনকে শনাক্ত করলেও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়ায় তাদের গ্রেফতার করা যাচ্ছে না।
গত চারদিন ধরে বাকলিয়া থানায় রিমান্ড জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন জাতীয় অনূর্ধ্ব ১৯ ফুটবল দলের সাবেক খেলোয়াড় মাসুদ রানা। শেখ জামাল এবং ঢাকা মোহামেডানের হয়ে খেলেছেন তিনি। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের পাশাপাশি আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জানিয়েছে, খেলোয়াড়দের দিয়ে কীভাবে রাজধানী ঢাকায় ইয়াবা পাচার করছে টেকনাফের সিন্ডিকেটটি।
সিএমপি বাকলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন বলেন, কিছু ইয়াবা চক্র আছে তারা লোকালি ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজন করে। এবং সেখানে ঢাকা থেকে নামীদামি ক্লাবের খেলোয়াড়দের খেলার জন্য নিয়ে আসে। ঢাকায় আরেকটা চক্র আছে তাদের কাছে খেলোয়াড়দের দিয়ে পাঠিয়ে দেয়।
পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, গত তিন থেকে চার বছর ধরে মাসুদ রানাসহ ঢাকার অনেক নামীদামি ফুটবলারকে মাদক পাচারের কাজে ব্যবহারের জন্য এ চক্রটি টেকনাফ, উখিয়া এবং চকরিয়ার বিভিন্ন স্থানে টুর্নামেন্ট বা ম্যাচ খেলার নামে কক্সবাজার এনেছে। এ সময়ের মধ্যে তাদের মাধ্যমে কী পরিমাণ ইয়াবা পাচার হয়েছে পুলিশ সেটা অনুসন্ধান করছে।
সিএমপি অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার পংকজ বড়য়া বলেন, মাসুদ রানার আগেও আরো ৩-৪ বছর ধরে এভাবে মাদক পাচার চলছে। আমরা এর তদন্ত করছি।
এদিকে ব্যতিক্রমী কৌশলে মাদক পাচার চক্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত সৈয়দ, কালন এবং সোহেল নামে টেকনাফের ৩ জনকে শনাক্ত করেছে পুলিশ। তবে অভিযানের আগেই তারা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়ায় তাদের গ্রেফতার করা যায়নি।
সিএমপি বাকলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন বলেন, আমরা তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চালালে তারা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ঢুকে যাচ্ছে।
নৈতিকভাবে দুর্বল হওয়ায় মাদক পাচারকারীরা এসব খেলোয়াড়কে ব্যবহারের সুযোগ নিচ্ছে বলে মনে করেন এক সময়ের জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক আশীষ ভদ্র।
শনিবার ভোরে নগরীর শাহ আমানত সেতু এলাকা থেকে সাড়ে সাত হাজার পিস ইয়াবাসহ গ্রেফতার করা হয় ঘানার ফুটবলার ফ্রাঙ্ক এবং রিচার্ডকে। পরবর্তীতে তাদের মাধ্যমে ফাঁদ পেতে গ্রেফতার করা হয় মাসুদ রানাকে।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-