নিজস্ব প্রতিবেদক : ২০১৯ সালের পহেলা জুলাই। কক্সবাজার পৌরসভার ২নং ওয়ার্ড মধ্যম নুনিয়াছড়াস্থ মোহাম্মদ রাসেল ও নারগিছ আকতার দম্পতির ঘর আলোকিত করে জন্ম নেয় ফুটফুটে এক কন্যা শিশু। তার নাম রাখা হয় ‘মুলতাযিম’। মুলতাযিম ওই দম্পতির তৃতীয় সন্তান।
কক্সবাজার সদর হাসপাতালে স্বাভাবিক ডেলিভারিতে জন্ম নেয় ‘মুলতাযিম’। জন্মের পর চেহারা দেখে স্বজনরা খুশিতে আত্মহারা হলেও মুহুর্তেই সবার চেহারা মলিন হয়ে যায়। দেখতে শতভাগ সুস্থ শিশুর পিঠে বিশাল ক্ষত। ক্ষতটি দেখতে লম্বা উঁচু আকারের টিউমারের মত। এই ক্ষত শিশুর পিঠের বড় একটা অংশ জুড়ে বিস্তৃত। তাৎক্ষণিকভাবে চিকিৎসকরা এটির কোন সুরাহা করতে পারেনি। এমনকি চিকিৎসরা বুঝতেও পারছিলনা ক্ষতটি কেন বা কিসের লক্ষণ।
শিশুর পিতা মোহাম্মদ রাসেল জানান, জন্মের পর থেকে তার অবস্থার পরিবর্তন হচ্ছে। ক্ষত অংশটি বড় হচ্ছে। মাথায় পানি জমে যাচ্ছে। দিন দিন মাথার আকারও বেশ বড় হচ্ছে।
মুলতাযিমের মা নারগিছ আক্তার বলেন, চিকিৎসরা বলেছেন আমার মেয়ের ক্ষত স্থানটি দেখতে টিউমারের মত দেখালেও এটি আসলে জমানো মাংস। অপারেশনের জন্য জন্মের পরপরই চিকিৎসকরা ঝুঁকি নেননি।
তিনি আরও বলেন, আমার সন্তানকে নিয়ে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে গিয়েছি। বহু বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিয়েছি। কেউ কোন সুরাহা করতে পারেনি। অবশেষে কয়েকমাস পূর্বে ঢাকার শের-ই বাংলা নগরস্থ ন্যাশনাল ইনষ্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতাল শিশুকে নিয়ে ভর্তি হই। দীর্ঘ একমাস বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের তত্ত্বাবধানে ছিলাম। চিকিৎসকরা বলেছেন শিশুর ওজন ১০ কেজি পূর্ণ হলে ক্ষত স্থানের ‘অপারেশন’ করা যাবে।
মুলতাযিমের বাবা-মা বলেন, এখন আমাদের কন্যার ওজন ১০ কেজি পূর্ণ হয়েছে। তার ক্ষত স্থানটি দিনদিন বড় হচ্ছে। মাথাও বড় হয়ে যাচ্ছে। পা দুটো অবশ। কোন নড়ানড়া করতে পারেনা। তাকে সারাদিন কুলে নিয়ে বসে থাকতে হয়। এই মুহুর্তে অপারেশন করা না হলে তার অবস্থার আরও অবনতি হতে পারে।
দম্পতি বলেন, ডাক্তার বলেছেন ‘মুলতাযিম’র অপারেশনের জন্য চার লক্ষ টাকার অধিক খরচ হবে। চিকিৎসার জন্য ঢাকায় হাসপাতালে তিনমাস থাকতে হবে। হাসপাতালে কেবিন ভাড়া, ঔষধ খরচ ও আনুসাঙ্গিক খরচের জন্য এসব টাকা প্রয়োজন।
শিশুর পিতা মোহাম্মদ রাসেল বলেন, কক্সবাজার ফিশারী ঘাটে অল্প বেতনের চাকরি করি। যেটা নিয়ে তিন সন্তানের সংসার চালানোও দায়। সেখানে আমরা কিভাবে আমার মেয়ের অপারেশন করাব? এত টাকা কোথায় পাব? ডাক্তারেরা আগামী ৮ জানুয়ারী হাসপাতাল ভর্তি হতে বলেছেন। অন্যথায় সিরিয়াল পেতে আরও তিন মাস অপেক্ষা করতে হবে।
রাসেল-নারগিছ দম্পতি জানান, সমাজের বিত্তবান মানুষ গুলো এগিয়ে আমার ফুটফুটে আদরের শিশুটিকে বাঁচানো সহজ হবে। অপারেশন করতে যত দেরি হবে বাচ্চার অবস্থা ততই নাজুক হবে। হৃদয়বানদের প্রতি আকুল আবেদন আপনারা আমাদের সন্তানকে বাঁচাতে এগিয়ে আসুন।
মুলতাযিমের জন্য সাহায্য পাঠাতে বিকাশ নম্বর: ০১৮৮৯-৮৪৫৫০১ (রোগীর নানা)
অথবা মুদারাবা সঞ্চয়ী হিসাব নম্বর ৬২০৯৩। ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড-কক্সবাজার শাখা। রাসেল-নারগিছ দম্পতি তাদের আদরের সন্তানকে সুস্থ দেখতে চান। মুলতাযিম বেঁচে থাকুক তাদের বুকের মাঝে। অপারেশন’র পর বেড়ে উঠুক সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ হিসেবে-এটাই হোক সকলের কাম্য।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-