গিয়াস উদ্দিন ভূলু, কক্সবাজার জার্নাল ◑
বঙ্গোপসাগরে মিয়ানমার জলসীমা থেকে আটক হওয়া ১৭ বাংলাদেশী জেলেকে কোস্টগার্ডের কাছে হস্তান্তর করেছে মিয়ানমার নৌবাহিনী।
৬ ডিসেম্বর (শুক্রবার) সন্ধ্যা ৭ টায় সেন্টমার্টিন দ্বীপের অদূরে গভীর সাগরে কোস্টগার্ডের তাজ উদ্দিন নামক জাহাজে -এ তাদেরকে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করে মিয়ানমার নৌবাহিনী।
মিয়ানমার নৌবাহিনীর দাবি,গত ৫ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার বাংলাদেশী ১৭ জেলেকে নিজেদের জলসীমা থেকে উদ্ধার পূর্বক আটক করেছিল তারা।
এদিকে কোস্টগার্ড সূত্রে জানা যায়,বাংলাদেশি মাছ ধরার ট্রলার ‘এফবি গোলতাজ-৪’ গত তিনদিন আগে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থেকে সাগরে মাছ শিকারে যায়। দুই দিন পর ট্রলারটি ইঞ্জিন বিকল হয়ে সাগরে ভাসতে ভাসতে মিয়ানমার জলসীমায় এসে পৌঁছলে। ঐ সময় মিয়ানমার নৌবাহিনীর জাহাজ ‘ইন-লে’ ১৭ জন জেলেসহ বাংলাদেশী ট্রলারটি উদ্ধার করেন। পরে খবরটি জেনে মিয়ানমারে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস কোস্টগার্ডকে বিষয়টি অবহিত করে। এরপর আটক জেলেদের উদ্ধার করার জন্য কোস্টগার্ড উদ্যোগ নেয়। অবশেষে ১৭ জেলেকে উদ্ধার করার পর কোস্টগার্ড এক সংবাদ ব্রিফিংএর আয়োজন করে।
উক্ত ব্রিফিংএ কোস্টগার্ড তাজউদ্দীন জাহাজের কর্তব্যরত কমান্ডার এসএম মেজবাহ উদ্দিন জানান, সরকার ও সংশ্লিষ্ট বাহিনীর প্রচেষ্টায় মিয়ানমার নৌবাহিনীর সাথে আলোচনার মাধ্যমে ফিশিং ট্রলারসহ ১৭ বাংলাদেশি জেলেকে ফেরত আনতে সক্ষম হয়েছি আমরা।
তিনি আরো জানান, ইঞ্জিন বিকল হয়ে বাংলাদেশী ট্রলারটি মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের রাথিডং উপকূলের মাইও নদীর মোহনায় ঢুকে পড়েছিল এবং এই প্রথম গভীর সাগরের মাঝখানে দুই দেশের বাহিনী পর্যায়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে আটক বাংলাদেশি জেলেদের দ্রুত সময়ে ফেরত আনতে সক্ষম হয়েছে কোস্টগার্ড।
উদ্ধার হওয়া বাংলাদেশী জেলেরা হচ্ছে,ভোলা জেলার সদরের চুন্নাবাদ এলাকার মোঃ মিলনের ছেলে জাকির হোসাইন (৪৪), একই জেলার চরফ্যাশন উপজেলার নোরাবাদ এলাকার আব্দুল লতিফ ব্যাপারির ছেলে আবুল কালাম (৫৬), গোলদার হাট এলাকার মৃত খোরশেদ আলমের ছেলে কামাল সওদাগর (৪৯), উত্তর মাদ্রাজ এলাকার জয়নাল আবেদীনের ছেলে নুরুল ইসলাম (৫৯), নীলকমল এলাকার মৃত নজির আহমদের ছেলে মোতাহার (৫৫), একই এলাকার আব্দুল মালেকের ছেলে বেলাল হোছাইন (২৭), মৃত নজির আহমদের ছেলে মোঃ ফারুক (৪৩), আব্দুল বারেক চৌকিদারের ছেলে মোঃ ছলিম (৪০), চরফ্যাশন সদরের নুর মোহাম্মদ পাটোয়ারীর ছেলে মোঃ জসিম (৫১), চরফ্যাশন পৌর এলাকার আবি আব্দুল্লাহর ছেলে আবুল কালাম (৫৭), একই এলাকার মকবুল আহমদের ছেলে মোঃ নেছার (৪৬), দৌলতখান উপজেলার কলাখোপা এলাকার মোঃ আলমগীরের ছেলে মোঃ আলামীন (১৯), চরখলিফা এলাকার আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে মোঃ জহিরুল ইসলাম (২৯), চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার মৃত আব্দুল জলিলের ছেলে মোঃ শাহ আলম (৬১),একই উপজেলার শোভনদন্দী এলাকার মৃত সোলায়মানের ছেলে মোঃ জসিম (৩৩), মুন্সীগঞ্জের টঙ্গী বাড়ি উপজেলার জাহের আলীর ছেলে আবু সায়েদ (৩৬) ও ঝালকাঠি রাজাপুর উপজেলার আব্দুল কাদেরের ছেলে মোঃ নুরুজ্জামান (৪৬)।
ফেরত আসা জেলেরা জানান, তারা গত ২৯ নভেম্বর ভোলা থেকে মাছ ধরার কাজে সাগরে নামলে গভীর সাগরে এসে ইঞ্জিন বিকল হয়ে গেলে তারা বেকায়দায় পড়ে যায়। ফলে ভাসতে ভাসতে তারা মিয়ানমারের সমুদ্রসীমানায় ঢুকে পড়লে মিয়ানমার নৌ-বাহিনী তাদের স্পীডবোটসহ আটক করে।
এদিকে বাংলাদেশ সরকার ও কোষ্টগার্ডের সহায়তায় খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে ফিরতে পারায় কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন তারা।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-