সময়মতো স্কুলে যাননি প্রধান শিক্ষক, খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখল এলাকাবাসী

অনলাইন ডেস্ক •  সময়মতো স্কুলে না আসায় প্রধান শিক্ষককে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখার একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে এলাকাবাসীর বিরুদ্ধে।

ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিমবাংলার পুরুলিয়ার ঝালদার পুস্তি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিপ্লব গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে।
কলকাতার গণমাধ্যমের খবরে জানা যায়, পুঞ্চা থানার বদড়া গ্রামের বাসিন্দা ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে একাধিক অভিযোগ উঠেছে। সেই কারণে তিনবার শাস্তিস্বরূপ বদলিও হয়। কিন্তু তবুও তাঁর আচরণে কোনো পরিবর্তন ঘটেনি। অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক পুস্তি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদানের পর চলতি বছরের এপ্রিল মাস থেকেই তাঁর বিরুদ্ধে স্কুলে সময় মতো না আসা ও মিড-ডে মিলে সমস্যাসহ তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ উঠতে শুরু করেছিল। এবিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ জানানো হলেও প্রশাসনের তরফে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। শিক্ষা দিতে সেই সময় গ্রামবাসীরা ওই স্কুলের শিক্ষকদের তালাবন্দি করেছিলেন। পরে শিক্ষকদের উদ্ধার করা হলেও ওই স্কুল প্রায় সপ্তাহখানেক তালাবন্ধ ছিল। ফলে ক্লাস করা হত দুর্গামন্দিরে।

তারপরে ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উধ্বতন কর্তৃপক্ষ গেলে ওই প্রধান শিক্ষক মুচলেকা দেন। এরপরই গ্রামবাসীরা স্কুলের তালা খোলে।
কিন্তু এত কিছুর পরও সমস্যা মেটেনি। চলতি মাসে আগস্ট মাসে ফের অশান্তি বাঁধে। ওই প্রধান শিক্ষক মিড-ডে মিলে মুড়ি, চানাচুর দিলে স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। ফের বিভিন্ন স্তরে অভিযোগ জানানো হয়। এবারও ‌উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ গিয়ে সমস্যা মেটান। স্কুল সঠিকভাবে চালানোর জন্য স্থানীয় বাসিন্দা, শিক্ষা দপ্তরের প্রতিনিধিকে নিয়ে একটি কমিটি তৈরি করে দেন কর্তৃপক্ষ।

এরপর সোমবার সাড়ে এগারোটা নাগাদ প্রধান শিক্ষক বিপ্লব স্কুলে ঢোকেন। কিছু বুঝে ওঠার আগে তাঁকে বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে ফেলা হয়। বিষয়টি কর্তৃপক্ষের কানে আসতেই তিনি ওই কমিটির সদস্যদের নির্দেশ দেন প্রধান শিক্ষককে অবিলম্বে মুক্ত করার। না হলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান। তারপরই ওই শিক্ষককে মুক্ত করা হয়। এরপর প্রধান শিক্ষক ঝালদা থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। দুই অভিযুক্তকে সোমবার রাতেই গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ধৃতদের নাম পুস্তি গ্রামের চন্দ্র কুমার ও গুরুদাস প্রামাণিক। আদালতে তোলা হলে জেলা মুখ্য বিচারক রিম্পা রায় ধৃতদের ১৪ দিন জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে।

এদিকে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা দপ্তর এই ঘটনার প্রেক্ষিতে ওই এলাকার অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের কাছে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে। সেই রিপোর্টের পর ওই প্রধান শিক্ষককেও তলব করা হবে।

আরও খবর