গলায় ফাঁস লাগিয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থীর আত্মহত্যা, শরীরে নেই কোন চিহ্ন!

মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামা (বান্দরবান)
লামায় এক এসএসসি পরীক্ষার্থী গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে দাবী করেছে নিহতের মা খালেদা বেগম। তবে নিহতের শরীরে ফাঁসের কোন চিহ্ন নেই বলে জানিয়েছেন, লামা সরকারি হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ শফিউর রহমান মজুমদার। তিনি আরো জানান, হাসপাতালে আনার ১৫ মিনিট পরে ওই স্কুল ছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুকালীন সময়ে নিহতের মুখ দিয়ে ফেনা বের হতে দেখা যায়। তার শরীরে কোন আঘাতে চিহ্ন ছিলনা।

নিহত রোজিনা আক্তার (১৬) লামা উপজেলার রুপসীপাড়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড পূর্ব শিলেরতুয়া এলাকার আহাম্মদ হোসেন প্রকাশ বদি আলম ও খালেদা বেগমের ৪র্থ মেয়ে। সে পার্শ্ববর্তী আলীকদম উপজেলার চৈক্ষ্যং উচ্চ বিদ্যালয়ের ২০২০ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী।

মৃত্যু সংবাদ পাওয়ামাত্র লামা থানার পুলিশের উপ-পরিদর্শক সালাউদ্দিন রাশেদ সঙ্গীয় পুলিশ সদস্যদের সাথে নিয়ে হাসপাতালে উপস্থিত হয়ে নিহতের প্রাথমিক সুরতহাল করে। স্কুল ছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনা শুনামাত্র লামা হাসপাতাল পরিদর্শন করেন, লামা সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার মো. রেজওয়ানুল ইসলাম ও লামা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ অপ্পেলা রাজু নাহা। পরে তারা রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

নিহতের মা খালেদা বেগম (৪৫) বলেন, বিকেলে বড় বোনের বাড়িতে বেড়াতে যেতে দেয়নি বলে রাগে তার মেয়ে রোজিনা আক্তার সন্ধ্যা ৫টা ৪৫ মিনিটের সময় ফাঁস খায়। তিনি আরো বলেন, প্রথমে তার ছোট মেয়ে খুকি আক্তার (১৪) তাকে ওড়না দিয়ে ফাঁসিতে ঝুলে থাকতে দেখে চিৎকার দেয়। চিৎকার শুনে আমার ছেলে ফেরদৌস মিয়ার বউ মুক্তা বেগম সহ তাকে ফাঁসি থেকে নামায়। তারপরে আমার ছেলে ও স্বামী সহ আমরা তাকে সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটে লামা হাসপাতালে নিয়ে আসি। হাসপাতালে আনার ১৫ মিনিট পরে তার মৃত্যু হয়। গলায় ফাঁসের কোন চিহ্ন নেই কেন এমন প্রশ্ন করলে তিনি এড়িয়ে যান।

এদিকে রোজিনা আক্তারের মৃত্যুর পর থেকে তার বাবা আহাম্মদ হোসেনকে আর হাসপাতাল দেখা যাচ্ছেনা বলে জানান, তার ছেলে ফেরদৌস মিয়া (২২)। পুলিশ আসার পর থেকে আহাম্মদ হোসেনকে আর দেখা যাচ্ছেনা। তিনি আরো বলেন, আমার বোনের সাথে পার্শ্ববর্তী আলীকদম উপজেলার চৈক্ষ্যং ইউনিয়নের আবাসিক এলাকার মো. ইসমাইল (২০) নামে এক ছেলে বিবাহের কথা বার্তা চলছে। ঐ ছেলের সাথে রোজিনা আক্তারের প্রায় ১ বছর যাবৎ প্রেম-ভালবাসা চলছিল। ছেলের মা ও বড় ভাই মাসখানেক আগে বিবাহের প্রস্তাব নিয়ে আসে। তবে মেয়ের প্রেম ও বিয়ের বিষয়টি গোপন করে তার মা খালেদা বেগম।

রোজিনার মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করে লামা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ অপ্পেলা রাজু নাহা বলেন, মৃত্যুর কারণ এখনো জানা যায়নি। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। লাশ আগামীকাল সকালে ময়নাতদন্তের জন্য বান্দরবান জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হবে।

আরও খবর