ইমাম খাইর •
সরকারের রেললাইন প্রকল্পে অধিগ্রহণকৃত জায়গার ক্ষতিপূরণের টাকা না দিয়ে উল্টো রাতের অন্ধকারে স্কেভেটর দিয়ে গুড়িয়ে দেয়া হলো বসতবাড়ি। বাড়িতে থাকা লোকজন দ্রুত বের হয়ে যাওয়ায় প্রাণে রক্ষা পেয়েছে। তবে, ঘরের ভেতরে থাকা মূল্যবান সরঞ্জাম রক্ষা হয়নি। গৃহহীনরা বর্তমানে খোলা আকাশের নীচে বসবাস করছে।
শুক্রবার (৮ নভেম্বর) দিবাগত রাত প্রায় আড়াইটার দিকে সদরের ইসলামপুরের ৭ নং ওয়ার্ডের বামনকাটায় এই ঘটনাটি ঘটেছে। খবর পেয়ে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী এগিয়ে গেলে পালিয়ে যায় স্কেভেটর চালক ডালিম। ক্ষতিগ্রস্ত আবদুচ্ছবি ওই এলাকার মৃত আবদুল আজিজের ছেলে। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তসহ স্থানীয়দের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
ক্ষতিগ্রস্ত আবদুচ্ছবি অভিযোগ করে বলেন, গভীর রাতে ঘরের দেওয়ালে ধাক্কার আওয়াজে আমাদের ঘুম ভেঙ্গে যায়। বাইরে গিয়ে দেখি, স্কেভেটর লাগিয়ে ঘর গুড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় ফোরম্যান সরওয়ারসহ আরো কয়েকজন। তখন ঘরের ভেতরে থাকা আমার স্ত্রী, সন্তান ও দুই ভাতিজা নুরুল আমিন ও নুরুল ইসলামসহ সাবাই বেরিয়ে পড়ি। তাতে জানে বেঁচে যাই। রাতের অন্ধকারে ঘর ভাঙার কারণ চাইলে কোন সদুত্তর দেয়নি স্কেভেটর চালক ডালিম। সে দ্রুত পালিয়ে যায়।
স্থানীয় বাসিন্দা হেলাল উদ্দিন বলেন, ক্ষতিপূরণের টাকার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ধর্ণা দিতে দিতে দিন-মাস-বছর শেষ। টাকা তো দেয়নি, উল্টো ক্ষতিগ্রস্তদের সাথে এভাবে অমানবিক আচরণ মেনে নেয়া যায়না। যারা এমন অমানবিক আচরণ করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানাচ্ছি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ইদ্রিছ রানা বলেন, ক্ষতিপূরণের টাকা তো দেয়নি। সেখানে আবার রাতের অন্ধকারে ঘুমন্ত মানুষজন রেখে বসতবাড়ির উপর স্কেভেটর চালানো কেমন সাহস? ঘৃণিত এমন ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। এতে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূল শাস্তি ও দ্রুত সময়ের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্তদের ন্যায্য পাওনা পরিশোধের দাবী করছি।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ আশরাফুল আফসার বলেন, রেলের কাজ চলতে হবে, আবার জনগণকে ক্ষতিপূরণের টাকা পাইতে হবে। কিন্তু দিন থাকতে রাতের অন্ধকারে কেন ঘর ভাঙবে? তা খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করব। তিনি আরো বলেন, ক্ষতিগ্রস্তরা আমার সাথে যোগাযোগ করলে আমি প্রয়োজনীয় সমাধান দেয়ার চেষ্টা করব।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-